হিজরতে মদিনায় অবস্থানকালে নবী মুহম্মদ একদিন স্বপ্ন দেখলেন-‘তিনি সাহাবীদের নিয়ে মক্কায় নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে প্রবেশ করেছেন এবং এহরামের কাজ সমাপ্ত করে কেউ কেউ নিয়মানুযায়ী মাথা মুন্ডন করছেন, কেউ কেউ চুল কাটাচ্ছেন এবং তিনি কা’বাগৃহে প্রবেশ করছেন।’
ওমরাহ পালনের জন্যে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা। |
দ্রুত প্রস্তুতি নেয়া হল। অতঃপর চৌদ্দ’শ মুসলমানসহ নবীজী ওমরাহ হজ্জ্ব পালনের জন্যে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।
এদিকে কুরাইশরা মুসলমানদের পথরোধ করার জন্যে মক্কায় প্রবেশের কয়েক মাইল দূরে এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর সমাবেশ করল। তারা মক্কায় প্রবেশের সকল পথ বন্ধ করল এবং কঠিনভাবে শপথ গ্রহণ করল যে তারা তাদেরকে কা’বা গৃহে প্রবেশ করতে দেবে না।
পৌত্তলিক কুরাইশদের এহেন কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হয- তারা মসজিদে-হারামে যেতে বাঁধা দান করে, অথচ তাদের সে অধিকার নেই। এতে প্রবেশের অধিকার তো তাদেরই রয়েছে যারা পরহেযগার। কিন্তু তাদের অধিকাংশই সে বিষয়ে অবহিত নয়।-(৮:৩৪)
হুদাইবিয়া (বর্তমান শমীসা)। |
মুসলমানরা মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া (বর্তমান শমীসা) নামক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করলেন। অতঃপর নবীজী কা’বাগৃহে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে দূত হিসেবে ওসমানকে মক্কায় পাঠালেন। কুরাইশরা তার সঙ্গে অসদ্ব্যবহার করল এবং তাকে ধরে আটক করে রাখল। ওসমানের ফিরতে বিলম্বের কারণে তিনি নিহত হয়েছেন, এই আশঙ্কা করে মুসলমানরা মুহম্মদের চারপাশে সমবেত হলেন এবং তার হত্যার প্রতিশোধ নিতে দৃঢ় অঙ্গীকার করলেন।
নবীজী একটি রিযওয়ান (বাবলা) বৃক্ষের নীচে উপস্থিত সাহাবীদের কাছ থেকে শপথ নিয়েছিলেন। ঐ বৃক্ষটি পরবর্তীতে খলিফা ওমরের নির্দেশে কেটে ফেলা হয়। কারণ, নবীজীর মৃত্যুর পর কিছু লোক অনুমানের উপর ভিত্তি করে বায়াত স্থানের একটি বৃক্ষকে নির্দিষ্ট করে নিয়েছিল এবং সেখানে তারা নামাজ আদায় করত। তৎকালিন খলিফা ওমর দেখলেন যে ভবিষ্যতে অজ্ঞ লোকেরা পূর্ববর্তী উম্মতের ন্যায় ঐ বৃক্ষের পূজা শুরু করে দিতে পারে- এই আশঙ্কায় তিনি গাছটি কেটে ফেলার আদেশ লেন।
বায়াতে রিযওয়ান সম্পর্কে এই আয়াতসমূহ নাযিল হয়েছিল-যারা তোমার কাছে আনুগত্যের শপথ করে, তারা তো আল্লাহর কাছে আনুগত্যের শপথ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে। অতএব যে শপথ ভঙ্গ করে অতি অবশ্যই সে তা নিজের ক্ষতির জন্যেই করে এবং যে আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে; আল্লাহ সত্ত্বরই তাকে মহা পুরস্কার দান করবেন।-(৪৮:১০)
হুদাইবিয়া। |
এ পর্যন্ত বর্ণিত তথ্য সম্পর্কে হাদিসে আরো বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে। যেমন- Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: Allah's Apostle set out at the time of Al-Hudaibiya (treaty), and when they proceeded for a distance, he said, "Khalid bin Al-Walid leading the cavalry of Quraish constituting the front of the army, is at a place called Al-Ghamim, so take the way on the right." By Allah, Khalid did not perceive the arrival of the Muslims till the dust arising from the march of the Muslim army reached him, and then he turned back hurriedly to inform Quraish.
The Prophet went on advancing till he reached the Thaniyya (i.e. a mountainous way) through which one would go to them (i.e. people of Quraish). The she-camel of the Prophet sat down. The people tried their best to cause the she-camel to get up but in vain, so they said, "Al-Qaswa' has become stubborn! Al-Qaswa' has become stubborn!"
The Prophet said, "Al-Qaswa' has not become stubborn, for stubbornness is not her habit, but she was stopped by Him Who stopped the elephant." Then he said, "By the Name of Him in Whose Hands my soul is, if they (Quraish infidels) ask me anything which will respect the ordinances of Allah, I will grant it to them."
The Prophet then rebuked the she-camel and she got up. The Prophet changed his way till he dismounted at the farthest end of Al-Hudaibiya at a pit (i.e. well) containing a little water which the people used in small amounts, and in a short while the people used up all its water and complained to Allah's Apostle; of thirst. The Prophet took an arrow out of his arrow-case and ordered them to put the arrow in that pit. By Allah, the water started and continued sprouting out till all the people quenched their thirst and returned with satisfaction.... -Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
যা হোক, হুদাইাবিয়ায় অবস্থানকালে মক্কার ৮০ জন পৌত্তলিক নবীজীকে অতর্কিত আক্রমনে হত্যা করার ইচ্ছে নিয়ে রাতের আাঁধারে মক্কার তায়নীম পাহাড় থেকে সতর্কতার সাথে নীচে অবতরণ করে। তারা মুসলমানদের ছাউনি ফেলা তাঁবুগুলোর চারপাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করতে থাকে এ উদ্দেশ্য যে, কোন মুসলমান অসতর্ক অবস্থায় বেরিয়ে এলে তাকে যেন সহজে হত্যা করতে পারে। কিন্তু তেমন কিছু না হওয়ায় তারা একসময় মুসলমানদেরকে আক্রমণ করে বসে। অতঃপর তারা সকলেই বন্দী হল মুসলমানদের হাতে। কিন্তু নবীজী তাদের সকলকেই মুক্তিপণ ব্যাতিরেকেই মুক্তি দিয়ে দিলেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হল-তিনি মক্কা শহরে তাদের হাত তোমাদের থেকে এবং তোমাদের হাত তাদের থেকে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।-(৪৮:২৪)
কিন্তু কুরাইশগণ মুসলমানদের নমনীয়তার পরও অনমনীয় ছিল। তখন তাদের ঐ অনমনীয় মনোভাব লক্ষ্য করে এবং রিরাজমান যুদ্ধাবস্থা বন্ধ করতে নবীজী সন্ধির প্রস্তাব দিলেন। বিষয়টি হাদিসে উঠে এসেছে আরো বিস্তৃত বর্ণনায়-
Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ....While they were still in that state, Budail bin Warqa-al-Khuza'i came with some persons from his tribe Khuza'a and they were the advisers of Allah's Apostle who would keep no secret from him and were from the people of Tihama. Budail said, "I left Kab bin Luai and 'Amir bin Luai residing at the profuse water of Al-Hudaibiya and they had milch camels (or their women and children) with them, and will wage war against you, and will prevent you from visiting the Kaba."
Allah's Apostle said, "We have not come to fight anyone, but to perform the 'Umra. No doubt, the war has weakened Quraish and they have suffered great losses, so if they wish, I will conclude a truce with them, during which they should refrain from interfering between me and the people ('Arab infidels other than Quraish), and if I have victory over those infidels, Quraish will have the option to embrace Islam as the other people do, if they wish; they will at least get strong enough to fight. But if they do not accept the truce, by Allah in Whose Hands my life is, I will fight with them defending my Cause till I get killed, but (I am sure) Allah will definitely make His Cause victorious."
Budail said, "I will inform them of what you have said." So, he set off till he reached Quraish and said, "We have come from that man (Muhammad) whom we heard saying something which we will disclose to you if you should like." Some of the fools among Quraish shouted that they were not in need of this information, but the wiser among them said, "Relate what you heard him saying."
Budail said, "I heard him saying so-and-so," relating what the Prophet had told him.
Urwa bin Mas'ud got up and said, "O people! Aren't you the sons? They said, "Yes." He added, "Am I not the father?" They said, "Yes." He said, "Do you mistrust me?" They said, "No." He said, "Don't you know that I invited the people of 'Ukaz for your help, and when they refused I brought my relatives and children and those who obeyed me (to help you)?" They said, "Yes." He said, "Well, this man (the Prophet) has offered you a reasonable proposal, you'd better accept it and allow me to meet him."
They said, "You may meet him." So, he went to the Prophet and started talking to him. The Prophet told him almost the same as he had told Budail.
Then Urwa said, "O Muhammad! Won't you feel any scruple in extirpating your relations? Have you ever heard of anyone amongst the Arabs extirpating his relatives before you? On the other hand, if the reverse should happen, (nobody will aid you, for) by Allah, I do not see (with you) dignified people, but people from various tribes who would run away leaving you alone."
Hearing that, Abu Bakr abused him and said, "Do you say we would run and leave the Prophet alone?"
Urwa said, "Who is that man?"
They said, "He is Abu Bakr."
Urwa said to Abu Bakr, "By Him in Whose Hands my life is, were it not for the favor which you did to me and which I did not compensate, I would retort on you."
Urwa kept on talking to the Prophet and seizing the Prophet's beard as he was talking while Al-Mughira bin Shu'ba was standing near the head of the Prophet, holding a sword and wearing a helmet. Whenever Urwa stretched his hand towards the beard of the Prophet, Al-Mughira would hit his hand with the handle of the sword and say (to Urwa), "Remove your hand from the beard of Allah's Apostle."
Urwa raised his head and asked, "Who is that?"
The people said, "He is Al-Mughira bin Shu'ba."
Urwa said, "O treacherous! Am I not doing my best to prevent evil consequences of your treachery?"[Before embracing Islam Al-Mughira was in the company of some people. He killed them and took their property and came (to Medina) to embrace Islam. The Prophet said (to him, "As regards your Islam, I accept it, but as for the property I do not take anything of it. (As it was taken through treason).]
Urwa then started looking at the Companions of the Prophet (কারণ, সে নবী মুহম্মদের প্রতি শিষ্যদের সুগভীর সম্মান ও ভালবাসা দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েছিল।) .....-Sahih al-Bukhari,Volume 3, Book 50, No. 891.
এদিকে ওমর পৌত্তলিক সাথে আপোষ-মিমাংসায় সম্মত ছিলেন না। ফলে তিনি নবীজীর কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। হাদিসে বিষয়টি এভাবে এসেছে-
Narrated by Abu Wa'il: Sahal b. Hunaif... said: We were with the Messenger of Allah on the Day of Hudaibiya. If we had thought it fit to fight, we could fight. This was in the truce between the Messenger of Allah and the polytheists. Umar b. Khattab came, approached the Messenger of Allah and said: Messenger of Allah, aren't we fighting for truth and they for falsehood?
He asked: Are not those killed from our side in Paradise and those killed. from their side in the Fire?
He said: Then why should we put a blot upon our religion and return, while Allah has not decided the issue between them and ourselves?
He said: Son of Khattab, I am the Messenger of Allah. Allah will never ruin me...- Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4405.
ওমর একই প্রশ্ন আবু বকরের কাছে উত্থাপন করলে তিনিও নবীজীর মতই উত্তর দেন। এতে উপরের হাদিস বর্ণনাকারী আরও বলেছিলেন- At this (a Sura of) the Qur'an (giving glad tidings of the victory) was revealed to the Messenger of Allah. He sent for Umar and made him read it. He asked: Is (this truce) a victory? He (the Messenger of Allah) replied: Yes. At this Umar was pleased, and returned.-Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4405.
আর ওমরের পুরো কাহিনীর বর্ণনা রয়েছে এই হাদিসে- Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ....Umar bin Al-Khattab said, "I went to the Prophet and said, 'Aren't you truly the Apostle of Allah?' The Prophet said, 'Yes, indeed.' I said, 'Isn't our Cause just and the cause of the enemy unjust?' He said, 'Yes.' I said, 'Then why should we be humble in our religion?' He said, 'I am Allah's Apostle and I do not disobey Him, and He will make me victorious.' I said, 'Didn't you tell us that we would go to the Ka'ba and perform Tawaf around it?' He said, 'Yes, but did I tell you that we would visit the Ka'ba this year?' I said, 'No.' He said, 'So you will visit it and perform Tawaf around it?' " Umar further said, "I went to Abu Bakr and said, 'O Abu Bakr! Isn't he truly Allah's Prophet?' He replied, 'Yes.' I said, 'Then why should we be humble in our religion?' He said, 'Indeed, he is Allah's Apostle and he does not disobey his Lord, and He will make him victorious. Adhere to him as, by Allah, he is on the right.' I said, 'Was he not telling us that we would go to the Kaba and perform Tawaf around it?' He said, 'Yes, but did he tell you that you would go to the Ka'ba this year?' I said, 'No.' He said, "You will go to Ka'ba and perform Tawaf around it." .....-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
অবশেষে সন্ধির লক্ষণ দেখা দেয়। কেননা ওয়ারওয়া তার লোকদের কাছে ফিরে গিয়ে বলেছিলেন-”আমি খসরু, কায়সার ও নাজ্জাসীর মত রাজকীয় জাঁকজমকপূর্ণ নৃপতি দেখেছি, কিন্তু মুহম্মদের মত কোন নৃপতি দেখিনি যিনি তার অধীনস্তদের কাছ থেকে এত অধিক সম্মান ও আনুগত্য পেয়ে থাকেন।” হাদিসে রয়েছে-
Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ..Urwa returned to his people and said, ”O people! By Allah, I have been to the kings and to Caesar, Khosrau and An-Najashi, yet I have never seen any of them respected by his courtiers as much as Muhammad is respected by his companions. By Allah, if he spat, the spittle would fall in the hand of one of them (the Prophet's companions) who would rub it on his face and skin; if he ordered them, they would carry out his order immediately; if he performed ablution, they would struggle to take the remaining water; and when they spoke, they would lower their voices and would not look at his face constantly out of respect." Urwa added, "No doubt, he has presented to you a good reasonable offer, so please accept it."
A man from the tribe of Bani Kinana said, "Allow me to go to him," and they allowed him, and when he approached the Prophet and his companions, Allah's Ap le I said, "He is so-and-so who belongs to the tribe that respects the Budn (i.e. camels of the sacrifice). So, bring the Budn in front of him."
So, the Budn were brought before him and the people received him while they were reciting Talbiya. When he saw that scene, he said, "Glorified be Allah! It is not fair to prevent these people from visiting the Ka'ba." When he returned to his people, he said, 'I saw the Budn garlanded (with colored knotted ropes) and marked (with stabs on their backs). I do not think it is advisable to prevent them from visiting the Ka'ba."
Another person called Mikraz bin Hafs got up and sought their permission to go to Muhammad, and they allowed him, too. When he approached the Muslims, the Prophet said, "Here is Mikraz and he is a vicious man." Mikraz started talking to the Prophet and as he was talking, Suhail bin Amr came.
When Suhail bin Amr came, the Prophet said, "Now the matter has become easy."
Suhail said to the Prophet "Please conclude a peace treaty with us."...--Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
অনেক অসুবিধার পর একটি সন্ধিচুক্তি সম্পন্নের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল। আর ঐ সন্ধিপত্র লেখার ভার আলীর উপর ন্যাস্ত হয়েছিল। উভয়পক্ষের স্বাক্ষরিত এই চুক্তি হুদাইবিয়ার সন্ধি (Treaty of Hudaybiyyah) নামে খ্যাত। এতে উভয়পক্ষ সম্মত হয় যে-
১)-এ বৎসর মুসলমানদেরকে হজ্জ্বব্রত পালন না করেই ফিরে যেতে হবে।
২)-তাদেরকে পরবর্তী বৎসর কা’বাগৃহ দর্শণের অনুমতি দেয়া হবে।
৩)-প্রয়োজনীয় অস্ত্র তীর্থযাত্রীরা সঙ্গে নিয়ে ‘কোশবদ্ধ অবস্থায়’ তিন দিনের জন্যে মক্কায় থাকতে পারবে।
৪)-দশ বৎসরের জন্যে শত্রুতা বন্ধ থাকবে এবং কেউ যুদ্ধকারীদের সাহায্য করবে না। যে গোত্র যার সাথে রয়েছে তার বেলায় এই নীতি প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ এদের কারও প্রতি আক্রমণ বা আক্রমণে সাহায্যদান হবে চুক্তিভঙ্গের নামান্তর।
৫)-যদি কুরাইশদের কোন ব্যক্তি অভিভাবক বা প্রধানদের সম্মতি ব্যতিরেকে মুহম্মদের দলভূক্ত হয়, তবে তাকে কুরাইশদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
৬)-মুসলমানদের মধ্যে থেকে যদি কেউ মক্কাবাসীদের কাছে ফিরে যায়, তবে তাকে ফেরৎ দেয়া হবে না।
৭)-কোন গোত্র যদি কুরাইশ কিংবা মুসলমানদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে চায় তবে বাঁধামুক্ত অবস্থায় স্বাধীনভাবে তা করতে পারবে।
আর এসব শর্তের কথা হাদিসে উঠে এসেছে এভাবে- Narrated Al-Bara bin 'Azib: ....This is what Muhammad bin 'Abdullah has agreed upon: No arms will be brought into Mecca except in their cases, and nobody from the people of Mecca will be allowed to go with him (i.e. the Prophet ) even if he wished to follow him and he (the Prophet ) will not prevent any of his companions from staying in Mecca if the latter wants to stay.'...-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 863.
Narrated by al-Bara' b. 'Azib: ..The narrator said that the conditions upon which the two sides had agreed included that the Muslims would enter Mecca (next year) and would stay there for three days, and that they would not enter bearing arms except in their sheaths or bolsters.-Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4401.
Narrated by Anas: They laid the condition on the Prophet that anyone who joined them from the Muslims, the Meccans would not return him, and anyone who joined you (the Muslims) from them, you would send him back to them. The Companions said: Messenger of Allah, should we write this? He said: Yes. One who goes away from us to join them-may Allah keep him away! and one who comes to join us from them (and is sent back) Allah will provide him relief and a way of escape.-Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4404.
এই সন্ধি স্থাপনে নবীজী যে সংযম ও উদারতা দেখিয়েছিলেন তা তার সর্বাধিক আবেগপ্রবণ শিষ্যদের মধ্যেও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল। সন্ধিপত্র লেখার ভার আলীর উপর ন্যাস্ত হয়েছিল। আলী লিখলেন, ‘পরম করুণাময় আল্লাহর নামে- কুরাইশ প্রতিনিধি ছোহেল বলল, ‘তোমাদের এই রহমানকে আমরা চিনিনে।’
তখন নবীজীর আদেশে তার কথানুসারে লেখা হল। তারপর লেখা হল-আল্লাহর রসূল মুহম্মদ কুরাইশ প্রতিনিধি ছোহেলের সাথে এই মর্মে সন্ধি করছেন যে,...’ এসময় ছোহেল আপত্তি করে বলল, ‘আমরা তাকে আল্লাহর রসূল বলে স্বীকার করে নিলে আর এত গন্ডগোল হবে কেন? মুহম্মদ রসূলুল্লাহ এর স্থলে মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ লিখতে হবে।’ এসময় মুসলমানদের মনস্তাপ ও উত্তেজনা ধৈর্য্যরে সীমা অতিক্রম করে গেল।
নবীজী আলীকে বললেন, ‘আমি আব্দুল্লাহর পুত্র এ তো মিথ্যে নয়। সুতরাং তার কথা অনুসারেই লেখ।’
আলী বললেন, ‘আমি এটা মুছে ফেলতে পারব না।’ তখন নবীজীর আদেশে আলী তা দেখিয়ে দিলে তিনি নিজেই তা কলম ধরে কেটে দিলেন। বেশকিছু হাদিসেও বিষয়টি উঠে এসেছে-
Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ....So, the Prophet called the clerk and said to him, "Write: By the Name of Allah, the most Beneficent, the most Merciful."
Suhail said, "As for 'Beneficent,' by Allah, I do not know what it means. So write: By Your Name O Allah, as you used to write previously."
The Muslims said, "By Allah, we will not write except: By the Name of Allah, the most Beneficent, the most Merciful."
The Prophet said, "Write: By Your Name O Allah." Then he dictated, "This is the peace treaty which Muhammad, Allah's Apostle has concluded."
Suhail said, "By Allah, if we knew that you are Allah's Apostle we would not prevent you from visiting the Kaba, and would not fight with you. So, write: "Muhammad bin Abdullah." The Prophet said, "By Allah! I am Apostle of Allah even if you people do not believe me. Write: Muhammad bin Abdullah." [Az-Zuhri said, "The Prophet accepted all those things, as he had already said that he would accept everything they would demand if it respects the ordinance of Allah, (i.e. by letting him and his companions perform 'Umra.)"] The Prophet said to Suhail, "On the condition that you allow us to visit the House (i.e. Ka'ba) so that we may perform Tawaf around it." Suhail said, "By Allah, we will not (allow you this year) so as not to give chance to the 'Arabs to say that we have yielded to you, but we will allow you next year." So, the Prophet got that written.
Then Suhail said, "We also stipulate that you should return to us whoever comes to you from us, even if he embraced your religion."
The Muslims said, "Glorified be Allah! How will such a person be returned to the pagans after he has become a Muslim?”...---Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
Narrated Al-Bara bin 'Azib: When Allah's Apostle concluded a peace treaty with the people of Hudaibiya, Ali bin Abu Talib wrote the document and he mentioned in it, "Muhammad, Allah's Apostle ."
The pagans said, "Don't write: 'Muhammad, Allah's Apostle', for if you were an apostle we would not fight with you."
Allah's Apostle asked Ali to rub it out, but Ali said, "I will not be the person to rub it out." Allah's Apostle rubbed it out and made peace with them on the condition that the Prophet and his companions would enter Mecca and stay there for three days, and that they would enter with their weapons in cases.-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 862.
Narrated Al-Bara bin 'Azib: When the Prophet intended to perform 'Umra in the month of Dhul-Qada, the people of Mecca did not let him enter Mecca till he settled the matter with them by promising to stay in it for three days only. When the document of treaty was written, the following was mentioned: 'These are the terms on which Muhammad, Allah's Apostle agreed (to make peace).' They said, "We will not agree to this, for if we believed that you are Allah's Apostle we would not prevent you, but you are Muhammad bin 'Abdullah."
The Prophet said, "I am Allah's Apostle and also Muhammad bin 'Abdullah."
Then he said to 'Ali, "Rub off (the words) 'Allah's Apostle' ", but 'Ali said, "No, by Allah, I will never rub off your name."
Then he said to 'Ali, "Rub off (the words) 'Allah's Apostle' ", but 'Ali said, "No, by Allah, I will never rub off your name."
So, Allah's Apostle took the document and wrote, 'This is what Muhammad bin 'Abdullah has agreed upon:...-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 863.
Narrated Ibn 'Umar: Allah's Apostle set out for the 'Umra but the pagans of Quraish prevented him from reaching the Ka'ba. So, he slaughtered his sacrifice and got his head shaved at Al-Hudaibiya, and agreed with them that he would perform 'Umra the following year and would not carry weapons except swords and would not stay in Mecca except for the period they al lowed....-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 864.
Narrated by al-Bara' b. 'Azib: 'Ali b. Abu Talib penned the treaty between the Holy Prophet (may peace be upon him) and the polytheists on the Day of Hudaibiya. He wrote: This is what Muhammad, the Messenger of Allah, has settled. They (the polytheists) said: Do not write words" the Messenger of Allah". If we knew that you were the Messenger of Allah, we would not fight against you.
The Prophet said to 'Ali: Strike out these words. He (Ali) said: I am not going to strike them out. So the Prophet struck them out with his own hand. -Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4401.
Narrated by al-Bara' b. 'Azib: When the Prophet was checked from going to the Ka'ba, the people of Mecca made peace with him'on the condition that he would (be allowed to) enter Mecca (next year) and stay there for three days, that he would not enter (the city) except with swords in their sheaths and arms encased in their covers, that he would not take eway with him anyone from its dwellers, nor would he prevent anyone from those with him to stay on in Mecca (if he so desired). He said to 'Ali: Write down the terms settled between us. (So 'Ali wrote): In the name of Allah, most Gracious and most Merciful. This is what Muhammad, the Messenger of Allah, has settled (with the Meccans),
The polytheists said to him: If we knew that thou art the Messenger of of Allah, we would follow you. But write: Muhammad b. 'Abdullah. So he told 'Ali to strike out these words.
'Ali said: No, by Allah, I will not strike them out.
The Messenger of Allah said: Show me their place (on the parchment). So he ('Ali) showed him their place and he (the Holy Prophet) struck them out; and 'Ali wrote: Ibn 'Abdullah. -Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4403.
সন্ধিচুক্তি চলাকালীন সময়ে একটি ঘটনা ঘটল। আবু জন্দল বিন ছোহেল পালিয়ে নবীজীর কাছে হুদাইবিয়াতে উপস্থিত হল। কুরাইশরা তাকে বন্দী করে রেখে তার উপর শারিরিক নির্য়াতন চালাচ্ছিল। কেননা, সে মুসলমান হয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে তার পিতা সন্ধিপত্রে এমন এক শর্ত যোগ করাতে সমর্থ হন, যাতে বলা হয়েছিল যে, ”যারা অভিভাবক বা প্রধানের বিনা অনুমতিতে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তারা পালিয়ে মুসলমানদের কাছে আশ্রয় নিলে, তারা তাদেরকে কুরাইশদের কাছে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে।” এই শর্তানুসারে ছোহেল জন্দলকে ফিরিয়ে দেবার দাবী করল। এতে সাহাবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। হাদিসে বিষয়টি এভাবে উঠে এসেছে-
Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ...While they were in this state Abu- Jandal bin Suhail bin 'Amr came from the valley of Mecca staggering with his fetters and fell down amongst the Muslims.
Suhail said, "O Muhammad! This is the very first term with which we make peace with you, i.e. you shall return Abu Jandal to me."
The Prophet said, "The peace treaty has not been written yet."
Suhail said, "I will never allow you to keep him."
The Prophet said, "Yes, do."
He said, "I won't do.:
Mikraz said, "We allow you (to keep him)."
Abu Jandal said, "O Muslims! Will I be returned to the pagans though I have come as a Muslim? Don't you see how much I have suffered?" Abu Jandal had been tortured severely for the Cause of Allah....---Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
যা হোক, অতঃপর সন্ধিপত্র লেখা হল এবং উভয়পক্ষের প্রধান প্রধান ব্যক্তিরা তাতে স্বাক্ষর করলেন। সন্ধির শর্তানুসারে এ বৎসর যেহেতু ওমরাহ পালন করা যাবে না, তাই সন্ধির পরপরই নবীজী ও সকল সাহাবী তাদের ওমরাহর এহরাম খুলে ফেললেন।
আবু জন্দলের (Abu Jandal) বিষয়টিরও নিষ্পত্তি হল, যদিও মুসলমানগণ তাকে ফেরৎ পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল-‘চুক্তির শর্তানুযায়ী তাকে ফেরৎ পাঠান উচিৎ। কিন্তু একজন নির্যাতিত ভাইকে পুনঃরায় জালেমদের হাতে তুলে দেব এটা কিরূপে সম্ভব?’
কিন্তু নবী মুহম্মদ এ চুক্তি মেনে নিয়েই সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি এখন শরীয়তের নীতিমালার হেফাযত ও তৎপ্রতি দৃঢ়তা একব্যক্তির কারণে বিসর্জন দিতে পারেন না। তাই মুসলমানদের আপত্তির মৃদুগুঞ্জন সত্ত্বেও তিনি তৎক্ষণাৎ কুরাইশদের দাবী অনুসারে জন্দলকে ফেরৎ পাঠালেন।
অত:পর নবীজী পশু কোরবানী করে মাথা মুন্ডন করেন। হাদিসে রয়েছে- Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ... Allah's Apostle said to his companions, "Get up and' slaughter your sacrifices and get your head shaved." By Allah none of them got up, and the Prophet repeated his order thrice. When none of them got up, he left them and went to Um Salama and told her of the people's attitudes towards him. Um Salama said, "O the Prophet of Allah! Do you want your order to be carried out? Go out and don't say a word to anybody till you have slaughtered your sacrifice and call your barber to shave your head."
So, the Prophet went out and did not talk to anyone of them till he did that, i.e. slaughtered the sacrifice and called his barber who shaved his head. Seeing that, the companions of the Prophet got up, slaughtered their sacrifices, and started shaving the heads of one another, and there was so much rush that there was a danger of killing each other. ....---Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891.
এসময় আরেকটি ঘটনা ঘটল। মুসলিম সাঈদা বিনতে হারেস তার স্বামীর কাছ থেকে পালিয়ে অতি কষ্টে হুদাইবিয়াতে নবীজীর কাছে উপস্থিত হল। সে পৌত্তলিক সাফওয়ান বিন উমাইয়ার পত্নী ছিল। অত:পর যখন সে ইসলাম গ্রহণ করে তখন তার স্বামী তা জানতে পেরে তার উপর প্রচন্ড শারিরিক নির্য়াতন চালাতে থাকে।
যা হোক, সাঈদা পালিয়ে নবীজীর কাছে উপস্থিত হবার পরপরই তার স্বামী সাফওয়ানও এসে হাযির হয়। আর সে নবীজীর কাছে দাবী জানায়, ‘আমার স্ত্রীকে আমার কাছে প্রত্যার্পণ করা হোক। কেননা এই শর্ত আপনি মেনে নিয়েছেন এবং সন্ধিপত্রের কালি এখনও শুকায়নি।’
কিন্তু সাফওয়ান তার সঙ্গে তার স্ত্রীকে ফেরৎ পাঠাতে মুসলিমদের মধ্যে অনীহা লক্ষ্য করে দাবী করে বসে যে, অন্যথায় তাকে তার দেয় মোহরানা ফেরৎ দিতে হবে। কিন্তু তার এ দাবী ছিল অযৌক্তিক। কেননা সে নিজেও তা পূরণ করেনি। [হাদিস (Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891) অনুসারে Umar divorced two wives of his who were infidels. Later on Muawiya bin Abu Sufyan married one of them, and Safwan bin Umaya married the other. অবশ্য এই হাদিসে এমনও রয়েছে- Narrated Az-Zuhri: Urwa said, "Aisha told me that ........ 'Umar divorced two of his wives, Qariba, the daughter of Abu Urhaiya and the daughter of Jarwal Al-Khuza'i. Later on Mu'awlya married Qariba and Abu Jahm married the other." কিন্ত তারা ওমরকে তার প্রদেয় মেহরাণার অর্থ ফেরৎ দিতে অস্বীকার করেছিল।]
এসময়ই এই আয়াত নাযিল হয়- মুমিনেরা, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিযরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে অবিশ্বাসীদের কাছে ফেরৎ পাঠিও না। এরা অবিশ্বাসীদের জন্যে হালাল নয় এবং অবিশ্বাসীরা এদের জন্যে হালাল নয়। অবিশ্বাসীরা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা এ নারীদের প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবে না। তোমরা অবিশ্বাসী নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখ না। তোমরা যা ব্যয় করেছ তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নেবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।-(৬০:১০)
সুতরাং নবীজী সাঈদার স্বামীর কাছে সন্ধিচুক্তির উল্লেখিত শর্তের সঠিক ব্যাখ্যা শেষে সাঈদাকে ফিরিয়ে দেবার দাবী প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এই শর্ত পুরুষদের জন্যে, নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।’
মুহম্মদ হুদাইবিয়া থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে ফিরে চললেন। সাহাবীদের অনেকে ওমরাহ পালন না করতে পেরে মনোক্ষুন্ন হয়েছিলেন। নবীজীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবার কোন সন তারিখ যদিও উল্লেখ ছিল না, তবুও এই সম্পর্কে কারও মনে যাতে খটকা না লাগে এজন্যে এই আয়াত নাযিল হল- আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ চাহেন তো তোমরা মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তক মুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমদেরকে একটি আসন্ন বিজয়।-(৪৮:২৭)
হুদাইবিয়া থেকে নবীজী সবেমাত্র মদিনায় উপনীত হয়েছেন, এসময় ওতবা নামক এক নও মুসলিম সুযোগমত কুরাইশদের বন্দীশালা থেকে পালিয়ে মদিনায় উপনীত হল। এদিকে তার মদিনা গমনের সংবাদ জানতে পেরে কুরাইশরা দু‘জন দূতকে সেখানে পাঠিয়ে দিল। তারা এসে নবীজীর কাছে সন্ধির শর্তানুসারে ওতবাকে তাদের হস্তে অর্পণের দাবী পেশ করল। এতে নবীজী ওতবাকে বললেন, ‘ইসলামে প্রতিজ্ঞাভঙ্গ ও বিশ্বাসঘাতকতার কোন স্থান নেই। সুতরাং তোমাকে মদিনায় ফেরৎ যেতে হবে।’
ওতবাকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দিয়ে দূতদের সাথে মক্কায় প্রেরণ করা হল। এ সময় ওতবা কৌশলে তাদের একজনের তরবারী হস্তগত করে তাকে হত্যা করে ফেলল। অন্য ব্যক্তি দৌঁড়ে পালিয়ে একসময় মদিনায় এসে হাজির হল। সকল ঘটনা শুনে নবীজী দুঃখ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন।
এদিকে হত্যাকান্ডের পর ওতবা ভাবল- মদিনায় ফিরে গেলে তাকে পুনঃরায় মক্কায় ফেরত পাঠান হবে। আর তার পরিনতি কি হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। সুতরাং সে সমুদ্র উপকূলে গমন করে সেখানকার এক সুরক্ষিত উপত্যাকা ঈসে আশ্রয় নিল।
ওতবার এই অবস্থানের সংবাদ মক্কায় জানাজানি হল। এতে অনেক নব্য মুসলমান পালিয়ে এসে তার সাথে মিলিত হতে লাগল। এভাবে এদল যখন ভারী হয়ে উঠল, তখন তারা কুরাইশদের বাণিজ্য পথে হানা দিতে শুরু করল। এই গুপ্ত আক্রমণের দরুণ কুরাইশদের ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গে উঠার উপক্রম হল।
কুরাইশদের জীবিকা অর্জণের একমাত্র মাধ্যম বাণিজ্য। সুতরাং তারা এই গুপ্ত আক্রমণ বন্ধের লক্ষ্যে বাধ্য হয়ে মদিনায় দূত পাঠিয়ে সন্ধির ৫ম শর্তটি প্রত্যাহার করে নিল। হাদিসে বিষয়টি উঠে এসেছে এভাবে-
Narrated by Al-Miswar bin Makhrama and Marwan: ... When the Prophet returned to Medina, Abu Basir, a new Muslim convert from Quraish came to him. The Infidels sent in his pursuit two men who said (to the Prophet ), "Abide by the promise you gave us." So, the Prophet handed him over to them. They took him out (of the City) till they reached Dhul-Hulaifa where they dismounted to eat some dates they had with them. Abu Basir said to one of them, "By Allah, O so-and-so, I see you have a fine sword." The other drew it out (of the scabbard) and said, "By Allah, it is very fine and I have tried it many times."
Abu Bair said, "Let me have a look at it." When the other gave it to him, he hit him with it till he died, and his companion ran away till he came to Medina and entered the Mosque running. When Allah's Apostle saw him he said, "This man appears to have been frightened." When he reached the Prophet he said, "My companion has been murdered and I would have been murdered too."
Abu Basir came and said, "O Allah's Apostle, by Allah, Allah has made you fulfill your obligations by your returning me to them (i.e. the Infidels), but Allah has saved me from them."
The Prophet said, "Woe to his mother! what excellent war kindler he would be, should he only have supporters."
When Abu Basir heard that he understood that the Prophet would return him to them again, so he set off till he reached the seashore. Abu Jandal bin Suhail got himself released from them (i.e. infidels) and joined Abu Basir. So, whenever a man from Quraish embraced Islam he would follow Abu Basir till they formed a strong group. By Allah, whenever they heard about a caravan of Quraish heading towards Sham, they stopped it and attacked and killed them (i.e. infidels) and took their properties. The people of Quraish sent a message to the Prophet requesting him for the Sake of Allah and Kith and kin to send for (i.e. Abu Basir and his companions) promising that whoever (amongst them) came to the Prophet would be secure. So the Prophet sent for them (i.e. Abu Basir's companions)....Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 50, No. 891
অবশেষে, এই শর্তটি প্রত্যাহারের সাথে সাথে মক্কার নির্যাতিত মুসলমানরা পালিয়ে মদিনায় হিযরত করতে লাগল। এসব হিযরতকারীদের মধ্যে আবু জন্দলও ছিল।
হিজরী সপ্তমবর্ষের শেষের দিকে মুহম্মদ ওমরা হজ্জ্ব পালনের জন্যে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। সাহাবীরা জানতেন যে অবিশ্বাসীদের কাছে চুক্তি ও সন্ধির কোনই মর্যাদা নেই। এমনও হতে পারে তারা সন্ধির প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হবে। ফলে তাদের আশঙ্কা হল, এমনকি হরম শরীফেও যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে যেতে পারে- যা নিষিদ্ধ। তাদের আরও সন্দেহ হল, এটা যিলকদ মাস, সম্মানিত মাসের একটি। এ মাসে কোথাও কারও সাথে যুদ্ধ করাও তো বৈধ নয়।
এ সময় এই আয়াতসমূহ নাযিল হল, যা দ্বারা সাহাবীদের দ্বিধা দূর করা হয়েছে-‘আর তাদের সাথে লড়াই কোরও না মসজিদুল হারামের কাছে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এ হল অবিশ্বাসীদের শাস্তি। আর যদি তারা বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ অত্যান্ত দয়ালু।’-(২ঃ১৯১-১৯২)
‘সম্মানিত মাসই (৪টি- যিলকদ, যিলহজ্ব, মুহরম, রজব) সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবরদস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি করেছে তারা তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।’-(২ঃ১৯৪)
প্রায় দুই হাজার শিষ্যবৃন্দ সঙ্গে নিয়ে মুহম্মদ মক্কায় উপস্থিত হলেন। এই তীর্থযাত্রীদেরকে কুরাইশদের কিছু বলার বা আলোচনা করার ছিল না। যে তিনদিন ধরে উৎসব চলেছিল তারা নগর খালি করে দিয়েছিল এবং প্রতিবেশীর অট্টালিকার ছাদ থেকে তারা ভীষণ কৌতুহল নিয়ে মুসলমানদের হজ্জ্ববিধি পালন দেখতে লাগল। সন্ধির শর্তাবলীর সঙ্গে পূর্ণ সামঞ্জস্য রেখে তিন দিন পরেই তীর্থযাত্রীরা মক্কা ত্যাগ করলেন। হাদিসে এ ঘটনা ও তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া এভাবে ব্যক্ত হয়েছে-
এ সময় এই আয়াতসমূহ নাযিল হল, যা দ্বারা সাহাবীদের দ্বিধা দূর করা হয়েছে-‘আর তাদের সাথে লড়াই কোরও না মসজিদুল হারামের কাছে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এ হল অবিশ্বাসীদের শাস্তি। আর যদি তারা বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ অত্যান্ত দয়ালু।’-(২ঃ১৯১-১৯২)
‘সম্মানিত মাসই (৪টি- যিলকদ, যিলহজ্ব, মুহরম, রজব) সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবরদস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি করেছে তারা তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।’-(২ঃ১৯৪)
প্রায় দুই হাজার শিষ্যবৃন্দ সঙ্গে নিয়ে মুহম্মদ মক্কায় উপস্থিত হলেন। এই তীর্থযাত্রীদেরকে কুরাইশদের কিছু বলার বা আলোচনা করার ছিল না। যে তিনদিন ধরে উৎসব চলেছিল তারা নগর খালি করে দিয়েছিল এবং প্রতিবেশীর অট্টালিকার ছাদ থেকে তারা ভীষণ কৌতুহল নিয়ে মুসলমানদের হজ্জ্ববিধি পালন দেখতে লাগল। সন্ধির শর্তাবলীর সঙ্গে পূর্ণ সামঞ্জস্য রেখে তিন দিন পরেই তীর্থযাত্রীরা মক্কা ত্যাগ করলেন। হাদিসে এ ঘটনা ও তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া এভাবে ব্যক্ত হয়েছে-
Narrated Ibn 'Umar: ..So, the Prophet performed the 'Umra in the following year and entered Mecca according to the treaty, and when he stayed for three days, the pagans ordered him to depart, and he departed.-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 864.
Narrated by al-Bara' b. 'Azib: ..According to the terms of the treaty, next year) the Holy Prophet stayed there for three days When it was the third day, they said to 'Ali: This is the last day according to the terms of your companion. So tell him to leave. 'Ali informed the Prophet accordingly. He said: Yes, and left (the city). -Sahih al-Muslim, Book 019, Number 4403.
Narrated Al-Bara: ...When the Prophet entered Mecca and the time limit passed, the Meccans went to 'Ali and said, "Tell your Friend (i.e. the Prophet) to go out, as the period (agreed to) has passed." So, the Prophet went out of Mecca.
The daughter of Hamza ran after them (i.e. the Prophet and his companions), calling, "O Uncle! O Uncle!" '
Ali received her and led her by the hand and said to Fatima, "Take your uncle's daughter."
Zaid (নবীজীর Ex পালিত পূত্র ও কোরাণিক আদেশের পর ধর্মীয় ভ্রাতা) and Ja'far quarreled about her. 'Ali said, "I have more right to her as she is my uncle's daughter."
Ja'far (আলীর জৈষ্ঠ্য ভ্রাতা) said, "She is my uncle's daughter, and her aunt is my wife."
Ali received her and led her by the hand and said to Fatima, "Take your uncle's daughter."
Zaid (নবীজীর Ex পালিত পূত্র ও কোরাণিক আদেশের পর ধর্মীয় ভ্রাতা) and Ja'far quarreled about her. 'Ali said, "I have more right to her as she is my uncle's daughter."
Ja'far (আলীর জৈষ্ঠ্য ভ্রাতা) said, "She is my uncle's daughter, and her aunt is my wife."
Zaid said, "She is my brother's daughter."
The Prophet judged that she should be given to her aunt, and said that the aunt was like the mother. He then said to 'All, "You are from me and I am from you", and said to Ja'far, "You resemble me both in character and appearance", and said to Zaid, "You are our brother (in faith) and our freed slave."-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 863.
যে তিন দিন মুহম্মদ মক্কায় ছিলেন ঐ সময়ে তার দূর স¤পর্কীয় আত্মীয় মায়মুনা তার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার বাসনা নিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। মুহম্মদ তার বাসনা পূর্ণ করেন। এই বিবাহের ফলে এবং যে আত্মসংযম ও অঙ্গীকৃত নীতির প্রতি বিবেকস¤পন্ন শ্রদ্ধাবোধ মুসলমানেরা দেখিয়েছিল তা ইসলামের শত্র“দের মধ্যে দৃশ্যতঃ বিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল, আর এই বিশ্বাস তাদেরকে অনেককে ইসলাম গ্রহণে উৎসাহিত করল।
এসময় ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা ছিলেন আমর ইবনে আ‘স (আম্রত), খালিদ বিন ওয়ালিদ (মায়মুনার ভগ্নির পুত্র) যিনি ওহোদ যুদ্ধে কুরাইশদের অশ্বারোহী সৈন্য পরিচালনা করেছিলেন এবং ওসমান বিন তালহা। এরা অপ্রত্যাশিতভাবে মদিনায় এসে ইসলাম গ্রহণ করেছিল।
The Prophet judged that she should be given to her aunt, and said that the aunt was like the mother. He then said to 'All, "You are from me and I am from you", and said to Ja'far, "You resemble me both in character and appearance", and said to Zaid, "You are our brother (in faith) and our freed slave."-Sahih al-Bukhari, Volume 3, Book 49, Number 863.
যে তিন দিন মুহম্মদ মক্কায় ছিলেন ঐ সময়ে তার দূর স¤পর্কীয় আত্মীয় মায়মুনা তার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার বাসনা নিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। মুহম্মদ তার বাসনা পূর্ণ করেন। এই বিবাহের ফলে এবং যে আত্মসংযম ও অঙ্গীকৃত নীতির প্রতি বিবেকস¤পন্ন শ্রদ্ধাবোধ মুসলমানেরা দেখিয়েছিল তা ইসলামের শত্র“দের মধ্যে দৃশ্যতঃ বিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল, আর এই বিশ্বাস তাদেরকে অনেককে ইসলাম গ্রহণে উৎসাহিত করল।
এসময় ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা ছিলেন আমর ইবনে আ‘স (আম্রত), খালিদ বিন ওয়ালিদ (মায়মুনার ভগ্নির পুত্র) যিনি ওহোদ যুদ্ধে কুরাইশদের অশ্বারোহী সৈন্য পরিচালনা করেছিলেন এবং ওসমান বিন তালহা। এরা অপ্রত্যাশিতভাবে মদিনায় এসে ইসলাম গ্রহণ করেছিল।
NB: This is all about the Treaty of Hudaybiyyah describes in TRUTH. Now we will go through the following two articles to understand how Satan and his Companions within the Jinns & Humans (those are infidel) concoct information intelligently to hide TRUTH to misguide people and also to understand why God needs to reveled Qur'an after Bible (ie.Torah & Injil).
Conquest of Mecca: পটভূমি, ঘটনাসমূহ ও পরিণতি।
সমাপ্ত।
ছবি: almiskeenah, tibb-e-nabwi, hayas-house.
ছবি: almiskeenah, tibb-e-nabwi, hayas-house.
উৎস:
Qur'an.
Syed Ameer Ali, The Spirit of Islam.
http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/bukhari/
http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/muslim/
Qur'an.
Syed Ameer Ali, The Spirit of Islam.
http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/bukhari/
http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/muslim/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন