মহাবিশ্বের (Universe) কোন এক গ্যালাক্সির কোন এক সৌরজগতের পৃথিবী নামক এক গ্রহে মনুষ্য জাতির বসবাস। পুরো মহাবিশ্ব কত বড় তা আমাদের কল্পনার অতীত। বর্তমানে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের ব্যাস প্রায় ২৮ বিলিয়ন পারসেক অর্থাৎ তা ৯১ বিলিয়ন আলোকবর্ষের সমপরিমান। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস বিশাল এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বৎসর পূর্বে সংঘটিত এক মহাবিফোরণের (Big Bang) ফলে। তারকা ও ছায়াপথগুলো আকার ধারণ করতে শুরু করে ৩০০ মিলিয়ন বৎসর পরে। সূর্য়্য জন্ম নেয় প্রায় ৫০০ বিলিয়ন বৎসর পূর্বে, অন্যদিকে পৃথিবীতে জীবনের আবির্ভাব প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বৎসর পূর্বে।
কিন্তু মহা বিস্ফোরণ ঘটল কিভাবে? সুচারূ নিয়ম-নীতির গন্ডিতে তা আবদ্ধ করল কে? বসবাস উপযোগী ধরণী ও সেখানে জীবনের সৃষ্টি সে তো অসম্ভাব্যতার সমুদ্রে সম্ভাবণার একটা কণা। তাহলে কে এতসব সূক্ষ্ম জটিল হিসেবের মধ্য থেকে এসব বের করে নিয়ে এসেছে? নাকি এমনি এমনি সব হয়েছে? কিন্তু, কারণ ছাড়া কি কার্য়্য হয়? যদি না হয়, তবে কেন এবং কিভাবে এটি সৃষ্টি হল, আর কে বা কারা্ এসব সৃষ্টি করল? এসব শুধু আমাদের নয়, আদিকাল থেকেই মানুষের জিজ্ঞাস্য। আর তা্ই সঙ্গত কারণেই এ আর্টিকেলে আমাদের আলোচ্য বিষয় মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে।
কিন্তু মহা বিস্ফোরণ ঘটল কিভাবে? সুচারূ নিয়ম-নীতির গন্ডিতে তা আবদ্ধ করল কে? বসবাস উপযোগী ধরণী ও সেখানে জীবনের সৃষ্টি সে তো অসম্ভাব্যতার সমুদ্রে সম্ভাবণার একটা কণা। তাহলে কে এতসব সূক্ষ্ম জটিল হিসেবের মধ্য থেকে এসব বের করে নিয়ে এসেছে? নাকি এমনি এমনি সব হয়েছে? কিন্তু, কারণ ছাড়া কি কার্য়্য হয়? যদি না হয়, তবে কেন এবং কিভাবে এটি সৃষ্টি হল, আর কে বা কারা্ এসব সৃষ্টি করল? এসব শুধু আমাদের নয়, আদিকাল থেকেই মানুষের জিজ্ঞাস্য। আর তা্ই সঙ্গত কারণেই এ আর্টিকেলে আমাদের আলোচ্য বিষয় মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে।
বর্তমানে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে আমরা মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে বলা যায় কিছুটা জানতে পেরেছি। কিন্তু সেই আদিম যুগে এ সম্পর্কে মানুষের কি ধারণা ছিল তা আমাদের জানা নেই। তবে সভ্যতার সূচনা লগ্নে তাদের ধারণা ও বিশ্বাস সম্পর্কে আমরা জেনেছি তাদের মাঝে প্রচলিত শ্রুতি থেকে। এ জানাটা প্রয়োজন এ কারণে যে, তারা প্রকৃত সত্য থেকে কতটা দূরে ছিল তা উপলব্ধির সাথে সাথে তাদের ধরায় আগমনের উদ্দেশ্য পূরণে তারা কতটা ব্যর্থ বা সফল হয়েছিল তা অনুভব করা।
মহাবিশ্বের সম্ভাব্য আকার |
whether the creation by the will and act of a transcendent being, by emanation from some ultimate source, or in any other way." Many cultures have stories describing the origin of the world and universe.
These creation myths narrates how the world began and how people first came to inhabit it. Cultures generally regard these stories as having some truth. There are however many differing beliefs in how these stories apply amongst those believing in a supernatural origin, ranging from a god directly creating the Universe as it is now to a god just setting the "wheels in motion" (for example via mechanisms such as the big bang and evolution).-Leeming, David A. -Creation Myths of the World. p. xvii.
Creation myths often share a number of features. They are all stories with a plot and characters who are either deities, human-like figures, or animals, who often speak and transform easily. Creation myths address questions deeply meaningful to the society that shares them, revealing their central worldview and the framework for the self-identity of the culture and individual in a universal context.
Creation myths explain in metaphorical terms our sense of who we are in the context of the world, and in so doing they reveal our real priorities, as well as our real prejudices. Our images of creation say a great deal about who we are.
সৃষ্টিতত্ত্বের শ্রেণী বিন্যাস:
প্রাচীন ধর্ম ও দর্শণ সৃষ্টিতত্ত্বগুলোর জন্ম দিয়েছে। অত:পর এর বিকাশ ঘটেছে শ্রুতিতে, মানুষের মুখে মুখে। তা্ই একই কাহিনীর অনেকগুলো ভার্সণ দেখতে পাওয়া যায় সমগ্র মনুষ্য কৃষ্টি-কালচারে। যেমন, সৃষ্টির "ডিম্ব থিওরী", মূল বক্তব্য একই হলেও চমকপ্রদ বিন্যাস রয়েছে প্রতিটি তত্বে।
ডিম্ব থিওরী মতে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছে একটা বিশ্বডিম্ব থেকে। আর ঐ বিশ্বডিম্ব পেড়েছিল একটা ঐশ্বরিক হাঁস বায়ূর দেবী ইলমাতার কোলে। আর তারপর ঐ-
বিশ্বডিম্ব |
And became the earth below,
And its upper half transmuted
And became the sky above;
From the yolk the sun was made,
Light of day to shine upon us;
From the white the moon was formed,
Light of night to gleam above us;
All the colored brighter bits
Rose to be the stars of heaven
And the darker crumbs changed into
Clouds and cloudlets in the sky.
যা হোক, মিথোলজিস্ট সারা বিশ্বে প্রাপ্ত সকল সৃষ্টিতত্ত্বের কাহিনীগুলোকে নিম্নরূপ শ্রেণীবদ্ধ করেছেন সাধারণ প্যাটার্ণের উপর ভিত্তি করে, যেমন-
Creation Ex nihilo:
Ex nihilo means "out of nothing". This type of creation found in stories from ancient Egypt, Rig Veda, Bible, Qur'an, and many animistic cultures in Africa, Asia, Oceania and North America. কোরআন ব্যাতিত অন্যান্য ex nihilo সৃষ্টিতত্ত্বে the potential and the substance of creation springs from within the creator. Such a creator may or may not be existing in physical surroundings such as darkness or water, but does not create the world from them, whereas in creation from chaos the substance used for creation is pre-existing within the unformed void.
Ex nihilo means "out of nothing". This type of creation found in stories from ancient Egypt, Rig Veda, Bible, Qur'an, and many animistic cultures in Africa, Asia, Oceania and North America. কোরআন ব্যাতিত অন্যান্য ex nihilo সৃষ্টিতত্ত্বে the potential and the substance of creation springs from within the creator. Such a creator may or may not be existing in physical surroundings such as darkness or water, but does not create the world from them, whereas in creation from chaos the substance used for creation is pre-existing within the unformed void.
Earth diver creation:
In these stories a supreme being usually sends an animal into the primal waters to find bits of sand or mud with which to build habitable land.These creation stories sometimes begin as beings and potential forms linger asleep or suspended in the primordial realm. The earth-diver is among the first of them to awaken and lay the necessary groundwork by building suitable lands where the coming creation will be able to live. In many cases, these stories will describe a series of failed attempts to make land before the solution is found.
In these stories a supreme being usually sends an animal into the primal waters to find bits of sand or mud with which to build habitable land.These creation stories sometimes begin as beings and potential forms linger asleep or suspended in the primordial realm. The earth-diver is among the first of them to awaken and lay the necessary groundwork by building suitable lands where the coming creation will be able to live. In many cases, these stories will describe a series of failed attempts to make land before the solution is found.
Emergence myths:
In emergence myths humanity emerges from another world into the one they currently inhabit. The previous world is often considered the womb of the earth mother, and the process of emergence is likened to the act of giving birth. It also describe the creation of people and/or supernatural beings as a staged ascent or metamorphosis from nascent forms through a series of subterranean worlds to arrive at their current place and form. Often the passage from one world or stage to the next is impelled by inner forces, a process of germination or gestation from earlier, embryonic forms. sometimes myths frequently link the final emergence of people from a hole opening to the underworld to stories about their subsequent migrations and eventual settlement in their current homelands.
In emergence myths humanity emerges from another world into the one they currently inhabit. The previous world is often considered the womb of the earth mother, and the process of emergence is likened to the act of giving birth. It also describe the creation of people and/or supernatural beings as a staged ascent or metamorphosis from nascent forms through a series of subterranean worlds to arrive at their current place and form. Often the passage from one world or stage to the next is impelled by inner forces, a process of germination or gestation from earlier, embryonic forms. sometimes myths frequently link the final emergence of people from a hole opening to the underworld to stories about their subsequent migrations and eventual settlement in their current homelands.
Creation from chaos:
In creation from chaos myth, initially there is nothing but a formless, shapeless expanse. In these stories the word "chaos" means "disorder", and this formless expanse, which is also sometimes called a void or an abyss, contains the material with which the created world will be made. Chaos may be described as having the consistency of vapor or water, dimensionless, and sometimes salty or muddy. These myths associate chaos with evil and oblivion, in contrast to "order" (cosmos) which is the good. The act of creation is the bringing of order from disorder, and in many of these cultures it is believed that at some point the forces preserving order and form will weaken and the world will once again be engulfed into the abyss.
In creation from chaos myth, initially there is nothing but a formless, shapeless expanse. In these stories the word "chaos" means "disorder", and this formless expanse, which is also sometimes called a void or an abyss, contains the material with which the created world will be made. Chaos may be described as having the consistency of vapor or water, dimensionless, and sometimes salty or muddy. These myths associate chaos with evil and oblivion, in contrast to "order" (cosmos) which is the good. The act of creation is the bringing of order from disorder, and in many of these cultures it is believed that at some point the forces preserving order and form will weaken and the world will once again be engulfed into the abyss.
World Parent:
There are two types of world parent myths, both describing a separation or splitting of a primeval entity, the world parent or parents. One form describes the primeval state as an eternal union of two parents, and the creation takes place when the two are pulled apart. The two parents are commonly identified as Sky (usually male) and Earth (usually female) who in the primeval state were so tightly bound to each other that no offspring could emerge. These myths often depict creation as the result of a sexual union, and serve as genealogical record of the deities born from it.
There are two types of world parent myths, both describing a separation or splitting of a primeval entity, the world parent or parents. One form describes the primeval state as an eternal union of two parents, and the creation takes place when the two are pulled apart. The two parents are commonly identified as Sky (usually male) and Earth (usually female) who in the primeval state were so tightly bound to each other that no offspring could emerge. These myths often depict creation as the result of a sexual union, and serve as genealogical record of the deities born from it.
In the second form of world parent myth, creation itself springs from dismembered parts of the body of the primeval being. Often in these stories the limbs, hair, blood, bones or organs of the primeval being are somehow severed or sacrificed to transform into sky, earth, animal or plant life, and other worldly features.These myths tend to emphasize creative forces as animistic in nature rather than sexual, and depict the sacred as the elemental and integral component of the natural world. এর উদাহরণ হচ্ছে সৃষ্টিতত্ত্বের মেসোপটেমিয় বা নোর্স (ভলুস্পাতে বর্ণিত) পৌরাণিক কাহিনী ।
মেসোপটেমিয় পৌরাণিক সৃষ্টিতত্ত্ব অনুসারে, পৃথিবীর সমস্ত ভূ-ভাগ তখন ডুবে ছিল সমুদ্রে। ভীম দর্শণ অসূর পানি থেকে মাটিকে বিচ্ছিন্ন করার কাজে দেবতাদের বাঁধা দিত। দেবতাদের যিনি প্রধান, তিনি অসূরের সাথে যুদ্ধ করে তাকে হত্যা করেন এবং তার দেহকে দু-খন্ড করে কেটে ফেলেন। আর তার দেহের উর্দ্ধাঙ্গ দিয়ে তিনি তৈরী করেন আকাশ, তারপর তা সাঁজান তারকামালা দিয়ে। আর দেহের নিম্নাঙ্গ দিয়ে তৈরী করেন পৃথিবীর ভূ-ভাগ, তার উপরে রোপন করেন বৃক্ষাদি এবং পশুদের নিয়ে আসা হল সেখানে বসবাসের জন্য। এঁটেল মাটি থেকে দেবতারা তৈরী করলেন প্রথম যুগের মানুষ এবং তারা ধরণ-ধারণ ও বুদ্ধি-আক্কেলের দিক থেকে এক এক দেবতার প্রতিরূপ হল।
ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্ব:
মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও বিবর্তনের বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব তত্ব রয়েছে। আর এসব তত্ব মূলত: অন্তর্ভূক্ত করেছে কোন সৃষ্টিকর্তা দেবতার বা আরো বড় কোন এক সর্বদেবতার দ্বারা সৃষ্টির একটা প্রক্রিয়া। তবে ইন্টারেস্টিং যাকিছু তা হল, সৃষ্টির এসব তত্বগুলোর প্রায় সবগুলোতেই কিছু না কিছু সত্যের আকর ছড়িয়ে রয়েছে। আর ঐ সত্যের আকরগুলো কিভাবে কাহিনীগুলোতে সংযুক্ত হয়েছে তা অনুধাবণ ও চিন্তাভাবনার জন্যে এখন আমরা ধর্মীয় সৃষ্টিতত্বগুলোর প্রতি নজর দেব।
মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও বিবর্তনের বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব তত্ব রয়েছে। আর এসব তত্ব মূলত: অন্তর্ভূক্ত করেছে কোন সৃষ্টিকর্তা দেবতার বা আরো বড় কোন এক সর্বদেবতার দ্বারা সৃষ্টির একটা প্রক্রিয়া। তবে ইন্টারেস্টিং যাকিছু তা হল, সৃষ্টির এসব তত্বগুলোর প্রায় সবগুলোতেই কিছু না কিছু সত্যের আকর ছড়িয়ে রয়েছে। আর ঐ সত্যের আকরগুলো কিভাবে কাহিনীগুলোতে সংযুক্ত হয়েছে তা অনুধাবণ ও চিন্তাভাবনার জন্যে এখন আমরা ধর্মীয় সৃষ্টিতত্বগুলোর প্রতি নজর দেব।
জরস্ট্রিয়ান সৃষ্টিতত্ত্ব: Ahura Mazda existed in light in goodness above, while Angra Mainyu existed in darkness and ignorance below. They have existed independently of each other for all time, and manifest contrary substances. Ahura Mazda first created seven abstract heavenly beings called Amesha Spentas, who support him and represent beneficent aspects, along with numerous yazads, lesser beings worthy of worship. He then created the universe itself in order to ensnare evil. Ahura Mazda created the floating, egg-shaped universe in two parts: first thespiritual (menog) and 3,000 years later, the physical (getig). Ahura Mazda then created Gayomard, the archetypical perfect man, and the first bull.
While Ahura Mazda created the universe and mankind, Angra Mainyu, whose instinct is to destroy, miscreated demons, evil yazads, and noxious creatures (khrafstar) such as snakes, ants, and flies. Angra Mainyu created an opposite, evil being for each good being, except for humans, which he found he could not match.
Angra Mainyu invaded the universe through the base of the sky, inflicting Gayomard and the bull with suffering and death. However, the evil forces were trapped in the universe and could not retreat. The dying primordial man and bull emitted seeds. From the bull's seed grew all beneficial plants and animals of the world, and from the man's seed grew a plant whose leaves became the first human couple. Man thus struggles in a two-fold universe trapped with evil. The evils of this physical world are not products of an inherent weakness, but are the fault of Angra Mainyu's assault on creation. This assault turned the perfectly flat, peaceful, and ever day-lit world into a mountainous, violent place that is half night.
বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্ব: বর্তমান বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্ব মতে মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করা হয়েছে flat disc-shaped earth floating on water, heaven above, underworld below. Humans inhabited earth during life and the underworld after death, and the underworld was morally neutral; only in Hellenistic times (after c.330 BC) did Jews begin to adopt the Greek idea that it would be a place of punishment for misdeeds, and that the righteous would enjoy an afterlife in heaven. In this periodtoo the older three-level cosmology was widely replaced by the Greek concept of a spherical earth suspended in space at the centre of a number of concentric heavens.
মূলত: বাইবেলে (পুরাতন নিয়ম) সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতা, করুণা ও মহত্ত্বের প্রকাশ ঘটেছে, যাতে মানুষ নিজের অস্তিত্ব, স্থায়িত্ব এবং পরিণতি সম্পর্কে, সৃষ্টিকর্তা ও তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে। যেমন, আইয়ূবের সহিফায় বলা হয়েছে- ‘কে সেই জ্ঞানহীন, যে আমার পরিকল্পণাকে সন্দেহ করে? আমি যখন পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করেছিলাম সেসময় তুমি কোথায় ছিলে? তুমি কি জান কে তার পরিমান নির্ধারণ করেছে? আর তার ভাঁজে ভাঁজে পাহাড়ই বা কে স্থাপন করেছে? তখন তো ভোরের তাঁরাগুলো এক সাথে গান গেয়েছিল, আর ফেরেস্তাগণ আনন্দে চেঁচিয়ে উঠেছিল।
যখন পৃথিবীর গর্ভ থেকে সমুদ্র বের হয়ে এসেছিল, তখন কে তাকে আবদ্ধ করেছিল? তখন আমি মেঘকে তার পোষাক করেছিলাম, আর তার সীমা ঠিক করেছিলাম, তার দ্বার ও আর্গল আমি স্থাপন করেছিলাম; আর আমি বলেছিলাম, এ পর্যন্ত, আর নয়, এখানেই তোমার গর্বিত ঢেউগুলোকে থামতে হবে।
দোযখ তোমাকে দেখান হয়েছে কি? জগৎটা কত বড় তা কি তুমি ধারণা করতে পার? যে স্থান থেকে আলো ছড়িয়ে যায়, কিংবা যে স্থান থেকে পৃথিবীতে পূবের বায়ূ ছড়িয়ে পড়ে তা কোথায়?
বজ্রপাত ও বৃষ্টির জন্যে কে পথ করেছে? যাতে জনশুণ্য স্থান বৃষ্টি পায়, মরুএলাকা তৃপ্ত হয়, আর সেখানে ঘাস, লতা-গুল্ম উদ্গত হতে পারে?
তুমি কি কৃত্তিকা নামের তাঁরাগুলোকে বাঁধতে পার? কালপুরুষ নামের তাঁরাগুলোর বাঁধন খুলে দিতে পার? তাঁরাপুঞ্জকে তাদের ঋতু অনুসারে বের করে আনতে পার? আকাশের আইন কানুন কি তুমি জান?
কে অন্তরকে জ্ঞান দিয়ে সাঁজিয়েছে? কিংবা মনকে বোঝার শক্তি দিয়েছে? দাঁড় কাকের বাচ্চারা যখন খোদার কাছে কাঁদে, আর খাবারের জন্যে ইতস্ততঃ ঘুরে বেড়ায়, তখন কে তাদের আহার জোগায়? পাহাড়ী ছাগ কখন বাচ্চা দেয় তা কি তুমি জান? তাদের বাচ্চা কত দিন গর্ভে থাকে তা কি গুনেছ?
তোমার আদেশে কি ঈগল আকাশে উড়ে? সে খাঁড়া পাহাড়ের উপর বাস করে, সেখান থেকে সে খাবারের অন্বেষণ করে, তার দৃষ্টি দূর থেকে তার শিকার খুঁজে নেয়। তাহলে আমার সম্মুখে কে দাঁড়াতে পারে? আমার বিরুদ্ধে এমন কার দাবী আছে যে, তার দাবী আমাকে মানতে হবে? উপরে আকাশ, নীচে জমিন এবং এ দু‘য়ের মাঝে যাকিছু আছে -সবই আমার সৃষ্টি, কোন কিছুই আমার অপরিজ্ঞাত নয়।’- সহিফা আইয়ূব।
যা হোক, বাইবেলের পুরাতন নিয়মে বিশ্বজগৎ সৃষ্টি সম্পর্কে বলা হয়েছে- “আদিতে খোদা আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করিলেন। পৃথিবী ঘোর ও শূন্য ছিল, এবং অন্ধকার জলধির উপরে ছিল, আর খোদার আত্মা জলের উপর অবস্থিতি করিতে ছিলেন। পরে খোদা কহিলেন, দীপ্তি হউক, তাহাতে দীপ্তি হইল। তখন ঈশ্বর দীপ্তি উত্তম দেখিলেন এবং খোদা অন্ধকার হইতে দীপ্তি পৃথক করিলেন। আর খোদা দীপ্তির নাম দিবস ও অন্ধকারের নাম রাত্রি রাখিলেন। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে প্রথম দিবস হইল।
পরে খোদা কহিলেন, জলের মধ্যে বিতান হউক, ও জলকে দুই ভাগে পৃথক করুক। খোদা এইরূপে বিতান করিয়া বিতানের উর্দ্ধস্থিত জল হইতে বিতানের অধঃস্থিত জল পৃথক করিলেন; তাহাতে সেইরূপ হইল। পরে খোদা বিতানের নাম আকাশমণ্ডল রাখিলেন। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে দ্বিতীয় দিবস হইল।
পরে খোদা কহিলেন, আকাশমণ্ডলের নীচস্থ সমস্ত জল এক স্থানে সংগৃহীত হউক ও স্থল সপ্রকাশ হউক, তাহাতে সেইরূপ হইল। তখন খোদা স্থলের নাম ভূমি, ও জলরাশির নাম সমুদ্র রাখিলেন; আর খোদা দেখিলেন যে, তাহা উত্তম। পরে খোদা কহিলেন, ভূমি তৃণ, বীজোৎপাদক ওষধি, ও সবীজ স্ব-স্ব জাতি অনুযায়ী ফলের উৎপাদক ফলবৃক্ষ, ভূমির উপরে উৎপন্ন করুক; তাহাতে সেইরূপ হইল। ফলতঃ ভূমি তৃণ, স্ব-স্ব জাতি অনুযায়ী বীজোৎপাদক ওষধি, ও স্ব-স্ব জাতি অনুযায়ী সবীজ ফলের উৎপাদক বৃক্ষ, উৎপন্ন করিল; আর খোদা দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে তৃতীয় দিবস হইল।
পরে খোদা কহিলেন, রাত্রি হইতে দিবসকে পৃথক করণার্থে আকাশমণ্ডলের বিতানে জ্যোতির্গণ হউক; সে সমস্ত চিহ্নের জন্য, ঋতুর জন্য এবং দিবসের ও বৎসরের জন্য হউক এবং পৃথিবীতে দীপ্তি দেবার জন্য দীপ বলিয়া আকাশ-মণ্ডলের বিতান থাকুক; তাহাতে সেইরূপ হইল। ফলতঃ খোদা দিনের উপর কর্ত্তৃত্ব করিতে এক মহাজ্যোতিঃ ও রাত্রির উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতে তদপেক্ষা এক জ্যোতিঃ এই দুই বৃহৎ জ্যোতিঃ এবং নক্ষত্রসমূহ নির্ম্মাণ করিলেন। আর পৃথিবীতে দীপ্তি দেবার জন্য এবং দিবস ও রাত্রির উপরে কর্ত্তৃত্ব করণার্থে এবং দীপ্তি হইতে অন্ধকার পৃথক করণার্থে খোদা ঐ জ্যোতিঃসমূহকে আকাশমণ্ডলের বিতানে স্থাপন করিলেন এবং খোদা দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে চতুর্থ দিবস হইল। -আদিপুস্তক, ১-১৯।
Then God said, “Let the waters teem with swarms of living creatures, and let birds fly above the earth in the open expanse of the heavens.” God created the great sea monsters and every living creature that moves, with which the waters swarmed after their kind, and every winged bird after its kind; and God saw that it was good. God blessed them, saying, “Be fruitful and multiply, and fill the waters in the seas, and let birds multiply on the earth.” There was evening and there was morning, a fifth day.
Then God said, “Let the earth bring forth living creatures after their kind: cattle and creeping things and beasts of the earth after their kind”; and it was so. God made the beasts of the earth after their kind, and the cattle after their kind, and everything that creeps on the ground after its kind; and God saw that it was good. Then God said, “Let Us make man in Our image, according to Our likeness; and let them crule over the fish of the sea and over the birds of the sky and over the cattle and over all the earth, and over every creeping thing that creeps on the earth.”
God created man in His own image, in the image of God He created him; male and female He created them. God blessed them; and God said to them, “Be fruitful and multiply, and fill the earth, and subdue it; and rule over the fish of the sea and over the birds of the sky and over every living thing that moves on the earth.”
Then God said, “Behold, I have given you every plant yielding seed that is on the surface of all the earth, and every tree which has fruit yielding seed; it shall be food for you; and to every beast of the earth and to every bird of the sky and to every thing that moves on the earth which has life, I have given every green plant for food”; and it was so. God saw all that He had made, and behold, it was very good. And there was evening and there was morning, the sixth day.--আদিপুস্তক, ২০-৩১।
মর্মনীয় সৃষ্টিতত্ত্ব: The Earth's creation, according to Mormon scripture, was not ex nihilo, but organized from existing matter. The faith teaches that this earth is just one of many inhabited worlds, and that there are many governing heavenly bodies, including a planet or star Kolob which is said to be nearest the throne of God.
Mormon cosmology presents a unique view of God and the universe, and places a high importance on human agency. In Mormonism, life on earth is just a short part of an eternal existence. Mormons believe that in the beginning all people existed as spirits or "intelligences," in the presence of God. In this state, God proposed a plan of salvation whereby they could progress and "have a privilege to advance like himself." The spirits were free to accept or reject this plan, and a "third" of them, led by Satan rejected it. The rest accepted the plan, coming to earth and receiving bodies with an understanding that they would experience sin and suffering.
In Mormonism, the central part of God's plan is the atonement of Jesus Christ. Mormons believe that one purpose of earthly life is to learn to choose good over evil. In this process, people inevitably make mistakes, becoming unworthy to return to the presence of God. Mormons believe that Jesus paid for the sins of the world, and that all people can be saved through his atonement.
Mormonism teaches that God the Father is the literal father of the spirits of all men and women, which existed prior to their mortal existence. They believe God the Father himself once passed through mortality like Jesus did, but how, when, or where that took place is unclear. It is believed that all humans as children of God can become exalted, inheriting all that God has, as joint-heirs with Christ, and becoming like him as a God.
বুদ্ধিষ্ট সৃষ্টিতত্ত্ব: In Buddhism, the universe comes into existence dependent upon the actions (karma) of its inhabitants. Buddhists posit neither an ultimate beginning nor final end to the universe, but see the universe as something in flux, passing in and out of existence, parallel to an infinite number of other universes doing the same thing.
The Buddhist universe consists of a large number of worlds which correspond to different mental states, including passive states of trance, passionless states of purity, and lower states of desire, anger, and fear. The beings in these worlds are all coming into existence or being born, and passing out of existence into other states, or dying. A world comes into existence when the first being in it is born, and ceases to exist, as such, when the last being in it dies. The universe of these worlds also is born and dies, with the death of the last being preceding a universal conflagration that destroys the physical structure of the worlds; then, after an interval, beings begin to be born again and the universe is once again built up. Other universes, however, also exist, and there are higher planes of existence which are never destroyed, though beings that live in them also come into and pass out of existence.
As well as a model of universal origins and destruction, Buddhist cosmology also functions as a model of the mind, with its thoughts coming into existence based on preceding thoughts, and being transformed into other thoughts and other states.<
বৈদিক সৃষ্টিতত্ত্ব: The Hindu cosmology, the Big Bang is not the beginning of everything but just the start of the present cycle preceded by an infinite number of universes and to be followed by another infinite number of universes. It also includes an infinite number of universes at one given time.
The Rig Veda questions the origin of the cosmos in: "Neither being (sat) nor non-being was as yet. What was concealed? And where? And in whose protection?…Who really knows? Who can declare it? Whence was it born, and whence came this creation? The devas (demigods) were born later than this world's creation, so who knows from where it came into existence? None can know from where creation has arisen, and whether he has or has not produced it. He who surveys it in the highest heavens, he alone knows-or perhaps does not know."
Rig Veda's view that cosmos also the self-projecting as the divine word, Vaak, 'birthing' the cosmos that we know, from the monistic Hiranyagarbha or Golden Womb.The Hiranyagarbha is alternatively viewed as Brahma, the creator who was in turn created by God, or as God (Brahman) himself. The creation begins anew after billions of years (Solar years) of non-existence.
বৈদিক ধর্মে ব্রহ্ম হল এক ও অদ্বিতীয় সত্তা। উপনিষদে ব্রহ্মার এমন পরিচয় দেয়া হয়েছে-
"ওঁ পূর্ণমদঃ পূর্ণমিদং পূর্ণাত্ পূর্ণমুদচ্যতে।
পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণমেবাবশিষ্যতে ।"--ঈশ উপনিষদ, শান্তিপাঠ।
অর্থ: উহা (পরব্রহ্ম) পূর্ণ, ইহা (নামরূপে স্থিত ব্রহ্ম) পূর্ণ; এই সকল সূক্ষ্ম ও স্থূল পদার্থ পরিপূর্ণ ব্রহ্ম হইতে উদগত বা অভিব্যক্ত হইয়াছে। আর সেই পূর্ণস্বভাব ব্রহ্ম হইতে পূর্ণত্ব গ্রহণ করিলেও পূর্ণই অর্থাৎ পরব্রহ্মই অবশিষ্ট থাকেন। ত্রিবিধ বিঘ্নের (আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক) শান্তি হোক।
The puranic view asserts that the universe is created, destroyed, and re-created in an eternally repetitive series of cycles. In Hindu cosmology, a universe endures for about 4,320,000,000 years (one day of Brahma, the creator or kalpa) and is then destroyed by fire or water elements. At this point, Brahma rests for one night, just as long as the day. This process, namedpralaya (Cataclysm), repeats for 100 Brahma years (311 Trillion, 40 Billion Human Years) that represents Brahma's lifespan. Similarly at a given time there are an infinite number of Brahma's performing the creation of each of these universes that are infinite in number. Brahma is the creator but not necessarily regarded as God in Hinduism. He is mostly regarded as a creation of God/ Brahman.
Brahma's day is divided in one thousand cycles. Maha Yuga, during which life, including the human race appears and then disappears, has 71 divisions, each made of 14 Manvantara (1000) years. Each Maha Yuga lasts for 4,320,000 years. Manvantara is Manu's cycle, the one who gives birth and governs the human race.
Each Maha Yuga consists of a series of four shorter yugas, or ages. The yugas get progressively worse from a moral point of view as one proceeds from one yuga to another. As a result, each yuga is of shorter duration than the age that preceded it. কলিযুগের শুরু at midnight 17/18 February in 3102 BC in the proleptic Julian calendar.
Space and time are considered to be maya (illusion). What looks like 100 years in the cosmos of Brahma could be thousands of years in other worlds, millions of years in some other worlds and 311 trillion and 40 billion years for our solar system and earth.
সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কে বেদ-বাক্যসমূহ বেশ ইন্টারেস্টিং। বিজ্ঞানের সাথে বিরোধ যথেষ্ট কম। যেমন- “অনাবৃতিঃ শব্দহম।”-বেদান্ত সূত্র-৪/২২; -অর্থাৎ শব্দের মাধ্যমেই সৃষ্টির শুরু। “নাসাদাসিস ন: সদাসিত্ তদানীম নাসিদ রজ ন: ব্যামাপ্রো যৎ…।” -ঋগবেদ ১০/১২৯/১; -অর্থাৎ শুরুতে কোন অস্তিত্ব (সৎ) বা অনস্তিত্ব (অসৎ) ছিল না। সেখানে ছিল না কোন বায়ুমন্ডল। “তম অসিৎ তমস…তপসস্তন্মহিনাজায়াতৈকম।” -ঋগবেদ ১০/১২৯/৩; -অর্থাৎ চারদিক ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। সমস্ত জিনিস একত্রে পুঞ্জীভুত ছিল। সেখান থেকে প্রচন্ড তাপের সৃষ্টি হল।
“হিরণ্যগর্ভ সামাভরতাগ্রে..।”-ঋগবেদ ১০/১২১/১ -অর্থাৎ প্রথমেই হিরণ্যগর্ভ সৃষ্টি হল। “আপহ য়দ বৃহাতিরি বিশ্বমায়ান গর্ভম…।” -ঋগবেদ ১০/১২১/৭; -অর্থাৎ সেই হিরণ্যগর্ভ ছিল উত্তপ্ত তরল যাতে ছিল সৃষ্টির সমস্ত বীজ। “হিরণ্যগর্ভানি অপঃ তে সলিলা…।” -শতপথ ব্রাক্ষণ ১১.১.৬.১; -অর্থাৎ প্রথমে হিরণ্যগর্ভ সৃষ্টি হল। সেখানে ছিল উত্তপ্ত গলিত তরল। এটি ছিল মহাশুণ্যে ভাসমান। বছরের পর বছর এই অবস্থায় অতিক্রান্ত হয়।
“তারপর যেখানে বিস্ফোরণ ঘটল গলিত পদার্থ থেকে, বিন্দু থেকে যেন সব প্রসারিত হতে শুরু হল” -ঋগবেদ ১০/৭২/২; “সেই বিস্ফোরিত অংশসমূহ থেকে বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র তৈরী হল।”-ঋগবেদ ১০/৭২/৩; “তার এক জীবনপ্রদ অংশ থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হল।” -ঋগবেদ ১০/৭২/৪; “তারপর সৃষ্ট ক্ষেত্রে সাতধাপে সংকোচন-প্রসারণ সম্পন্ন হল। তারপর সৃষ্টি হল ভারসাম্যের।” -ঋগবেদ ১০/৭২/৮-৯;
“হিরণ্যগর্ভ সামাভরতাগ্রে..।”-ঋগবেদ ১০/১২১/১ -অর্থাৎ প্রথমেই হিরণ্যগর্ভ সৃষ্টি হল। “আপহ য়দ বৃহাতিরি বিশ্বমায়ান গর্ভম…।” -ঋগবেদ ১০/১২১/৭; -অর্থাৎ সেই হিরণ্যগর্ভ ছিল উত্তপ্ত তরল যাতে ছিল সৃষ্টির সমস্ত বীজ। “হিরণ্যগর্ভানি অপঃ তে সলিলা…।” -শতপথ ব্রাক্ষণ ১১.১.৬.১; -অর্থাৎ প্রথমে হিরণ্যগর্ভ সৃষ্টি হল। সেখানে ছিল উত্তপ্ত গলিত তরল। এটি ছিল মহাশুণ্যে ভাসমান। বছরের পর বছর এই অবস্থায় অতিক্রান্ত হয়।
“তারপর যেখানে বিস্ফোরণ ঘটল গলিত পদার্থ থেকে, বিন্দু থেকে যেন সব প্রসারিত হতে শুরু হল” -ঋগবেদ ১০/৭২/২; “সেই বিস্ফোরিত অংশসমূহ থেকে বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র তৈরী হল।”-ঋগবেদ ১০/৭২/৩; “তার এক জীবনপ্রদ অংশ থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হল।” -ঋগবেদ ১০/৭২/৪; “তারপর সৃষ্ট ক্ষেত্রে সাতধাপে সংকোচন-প্রসারণ সম্পন্ন হল। তারপর সৃষ্টি হল ভারসাম্যের।” -ঋগবেদ ১০/৭২/৮-৯;
আর মানুষ সৃষ্টি? এ কাহিনী সম্ভবত: কিতাবের নয় বরং আর্যদের সৃষ্ট। আর্যগণ গুণ ও কর্মভেদে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিল মনুষ্যজাতিকে। এগুলি হল-
ক) ব্রাহ্মণ: পূজা-পার্বন, যাগ-যজ্ঞ, ধর্মশাস্ত্র পাঠ ও রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার যারা সংরক্ষিত করেছিল।
খ) ক্ষত্রিয়: অস্ত্র-শস্ত্রের ব্যাবহার, দেশরক্ষা ও দেশ শাসনে যারা নিয়োজিত হত।
গ) বৈশ্য: ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ ও পশুপালনের দ্বারা যারা জীবিকা নির্বাহ করত।
ঘ) শূদ্র: উপরোক্ত তিন শ্রেণীর সেবাকাজে যারা ব্যপ্ত হয়েছিল।
অত:পর ব্রাহ্মণরা এসব শ্রেণী বা বর্ণভূক্ত লোকজনের জন্যে নির্দিষ্ট ধরণের কাজ ও আচার ব্যবহারের কঠোর নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল। শূদ্রদের জীবন ছিল অতি কষ্টের, কিন্তু তার চেয়েও কষ্টের ও লাঞ্ছনার জীবন ছিল তাদের যারা ছিল অচ্ছুৎ। অচ্ছুৎ গণ্য করা হত তাদের যারা এই চতুর্বর্ণের কোনটার মধ্যেই পড়ে না। অচ্ছুৎরা সবচেয়ে নোংরা কাজ করতে বাধ্য থাকত। এরা হল মুচি, ম্যাথর বা ডোম, কাওরা বা শুকর পালক ইত্যাদি। মনে করা হত এদের গাত্র স্পর্শ করা মাত্রই কোন লোক অপবিত্র হয়ে যায়। ভূমিষ্ঠ হওয়ার মূহূর্ত থেকেই অচ্ছুতের সন্তানকে অশুচি ভাবত লোকে।
আর এই শ্রেণী বিভাগের ব্যাখ্যায় ব্রাহ্মণরা বলেছিল যে, পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তার শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। ব্রহ্মার মুখ থেকে সৃজিত হয়েছে ব্রাহ্মণ এবং এই কারণে তারা দেবতার পক্ষ থেকে কথা বলতে পারে; হাত থেকে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষত্রিয় অর্থাৎ যোদ্ধা শ্রেণী; উরু থেকে বৈশ্য অর্থাৎ বণিক শ্রেণী; আর পদযুগলের ময়লা থেকে শূদ্র অর্থাৎ ভৃত্য শ্রেণী।
জৈন সৃষ্টিতত্ত্ব: Jain cosmology considers the loka, or universe, as an uncreated entity, existing since infinity, having no beginning or an end. Jain texts describe the shape of the universe as similar to a man standing with legs apart and arm resting on his waist. This Universe, according to Jainism, is narrow at the top, broad at the middle and once again becomes broad at the bottom.
জৈনরা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে না। মহাপুরাণা আচার্য়্য জিনাসেনা তাই সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসীদেরকে কটাক্ষ করে বলেন: "কিছু নির্বোধ বলে থাকে এ বিশ্ব একজন সৃষ্টিকর্তা তৈরী করেছেন। এমন মতবাদ, যা বলে এ বিশ্ব সৃষ্টি করা হয়েছে, তা অবিবেচনাপ্রসূত, আর তা পরিত্যাগ করাই উচিৎ। আর যদি খোদা এ বিশ্ব সৃষ্টি করেই থাকেন, তাহলে সৃষ্টির পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? If you say he was transcendent then and needed no support, where is he now? How could God have made this world without any raw material? If you say that he made this first, and then the world, you are faced with an endless regression."
মহাবিশ্ব। |
কোরআনিক সৃষ্টিতত্বের আলোচনার পূর্বে আমরা বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্বের আলোচনা করে নেব। এটা এ কারণে যে, বিজ্ঞান সৃষ্টিতত্বের পুরোটা এখনও আমাদেরকে জানাতে পারেনি, জানাতে পারেনি এর ধ্বংসতত্বটাও। অন্যদিকে কোরআন উভয়তত্বই বহু পূর্বে দিয়ে রেখেছে।আর তার দাবী রয়েছে তার তথ্য সম্পূর্ণ নির্ভুল। আর একথা ঠিক যে ১৪০০ বৎসর ধরেও মানুষ তাতে অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পায়নি।
বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব: বিজ্ঞান সৃষ্টিতত্বের সূচনা আমাদেরকে জানাতে পেরেছে আংশিকভাবে। জানাতে পেরেছে তার সম্প্রসারণ এবং ঐ সম্প্রসারণের প্রকৃতি বা ধরণের কয়েকটি সম্ভাবণা, কিন্তু নিশ্চিত করতে পারেনি ঠিক কোনটি আমাদের মহাবিশ্বে ঘটেছে। ফলে মহাবিশ্বের শেষ পরিণতি কিভাবে হবে তা আমরা নিশ্চিত নই। বৈজ্ঞাণিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় সম্প্রসারণের একটি সম্ভাবণা “যার শুরু আছে তার শেষও আছে” এ প্রবাদের সাথে একমত অর্থাৎ মহাবিশ্ব বিগব্যাঙে শুরু বিগক্রাঞ্চে শেষ। কিন্তু অন্য দু’টি ঐ প্রবাদের সাথে একমত নয়। অর্থাৎ মহাবিশ্বের শেষ নেই? তবে সেক্ষেত্রে মহাবিশ্বের সমাপ্তি না থাকলেও আমাদের কিন্তু শেষরক্ষা নেই? কেননা সূর্য়্যের জ্বালানীর শেষ আছে, তাছাড়া আমাদের সৌরজগৎ কোন বৃহৎ ব্লাক হোলের পাশ দিয়ে যাবার সময় হঠাৎ তাতে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবণাও একদম উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
আবার কোয়ান্টাম ফিজিক্স অনুসারে মহাবিস্ফোরণে একাধিক মহাবিশ্ব (Multiverse) সৃষ্টির সম্ভাবণাও রয়েছে।[বিজ্ঞানীরা এ সম্ভাবণার নাম দিয়েছেন M-theory বা String theory, আর সম্প্রতিক গবেষণায় প্রাপ্ত ”কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন” এই মাল্টিভার্স থিয়োরী সাপোর্ট করে।] আমরা নিশ্চিত নই মহাবিশ্ব একটি না একাধিক। অার একাধিক হলে সেগুলোর প্রকৃতি বা ধরণ কি অর্থাৎ সেগুলোতে ডাইমেনশনালিটিজ, স্থান-কালের টপোলজি, পদার্থ ও শক্তির ধরণ বা physical laws ও physical constants, ইত্যাদি কি একই না ভিন্ন? এ প্রশ্ন রয়ে গেছে। যা হোক, আমরা এখন বিজ্ঞান ভিত্তিক সৃষ্টিতত্ত্ব তথা মহাবিস্ফোরণের দিকে নজর দেই-
মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্মের সূচণা ঘটেছিল খুবই সহজ-সরল পদ্ধতিতে এবং ক্রমশঃ তা জটিল থেকে জটিলতর পর্যায়ে পরিণতি লাভ করে। সৃষ্টির সেই সূচণালগ্নে ঘটে যাওয়া প্রচন্ড বিস্ফোরণের (Bigbang) ফলে তৈরী হয়েছিল হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের গ্যাসীয় পিন্ড। পিন্ডটি (নেবুলা বা নীহারিকা) ধীরে ধীরে আবর্তিত হল এবং এই আবর্তনের পরিণতিতে সেই সুবিশাল নীহারিকা বেশ কয়েকটি খন্ডে বিভক্ত হয়ে চতুর্দিকে বিরাট এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। এই টুকরোগুলি ছিল এক একটি কল্পনার চেয়ে সুবৃহৎ, সূর্যের তুলনায় শত শত কোটিগুণ বড়। টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া গ্যাসীয় পিন্ডগুলি আবারও টুকরো টুকরো হল এবং পূর্বের চেয়ে অনেক বেশী দ্রুত গতিতে আবর্তিত হতে লাগল।
এই ঘুর্ণিত ও আবর্তিত হওয়ার দরুনই তাতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দানা বাঁধতে লাগল। সাথে সাথে সক্রিয় হতে লাগল বিভিন্নমুখী চাপ। এই পর্যায়ে যেখানে যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সক্রিয় হচ্ছিল, সেখানে সেখানেই সেই আকর্ষণ শক্তির প্রভাবে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া গ্যাসীয় পিন্ডগুলিতে থিতান প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়ে গেল। একই সাথে চৌম্বক এলাকা ও বিকিরণের ক্রিয়া এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও থিতান প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করল।
মহাবিশ্বের টাইম লাইন। |
সুতরাং সৌর জগতের সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যায়, সংকোচন ও ঘণীভূত প্রক্রিয়ায় আবর্তিত গ্যাসীয় পিন্ড টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে এবং সূর্য্য, পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ ও উপগ্রহসমূহ নিজ নিজ অবস্থানে চলে আসে।সৃষ্ট বস্তুসমূহের অবস্থান, গতিপথ ও চলাচলের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানের এই প্রাকৃতিক ও সঙ্গতিপূর্ণ নিয়ম-রীতি ও পদ্ধতি ক্রিয়াশীল হয়ে রয়েছে সৃষ্ট বস্তুসমূহের উপর ক্রিয়াশীল পারস্পরিক আকর্ষণ বলের দ্বারা। গ্রহসমূহের নিজস্ব কোন আলো নেই। সূর্য্যকে কেন্দ্র করেই এসব গ্রহ আবর্তিত হয়ে থাকে; পৃথিবী এরকম একটি গ্রহ আর চাঁদ তার উপগ্রহ।
এখন পর্য়ন্ত বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব একটুকুই আমাদের জানাতে পেরেছে। তবে ইদানিং তত্ত্ব দিচ্ছে অনেকগুলো। তবে সৃষ্টিতত্বের বিষয়ে কোরাণিক তথ্যই বেশী এবং পূর্ণাঙ্গ, কেননা তা যেমন সৃষ্টির শুরুটা বর্ণনা করে তেমনি বর্ণনা করে তার শেষটাও।
কোরাণিক সৃষ্টিতত্ত্ব: The Qur'an is not a book of Science, even it does not teach science. It only shows the way to go to Heaven not the way the Heavens.
আর তাই এখানে সৃষ্টি সেভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে যেভাবে কেবল সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও ক্ষমতার বিষয়টি প্রকাশ পায় এবং মানুষ কোরআন ও তার বাণী সম্পর্কে সন্দিহান না হয়।আর কোরআনের বাণীর সত্যতা সম্পর্কে তৎকালীন মুসলিম যে কতটা সুনিশ্চিত ছিলেন তার প্রমান পাই আমরা ওমরের ঐ ঐতিহাসিক নির্দেশ থেকে, যে নির্দেশে তিনি ঐ সময়কার জ্ঞানের ভান্ডার ৫ লক্ষাধিক দূর্লভ পুস্তক সম্বলিত আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরীটি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেবার দু:সাহস দেখিয়ে ছিলেন-
আর তাই এখানে সৃষ্টি সেভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে যেভাবে কেবল সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও ক্ষমতার বিষয়টি প্রকাশ পায় এবং মানুষ কোরআন ও তার বাণী সম্পর্কে সন্দিহান না হয়।আর কোরআনের বাণীর সত্যতা সম্পর্কে তৎকালীন মুসলিম যে কতটা সুনিশ্চিত ছিলেন তার প্রমান পাই আমরা ওমরের ঐ ঐতিহাসিক নির্দেশ থেকে, যে নির্দেশে তিনি ঐ সময়কার জ্ঞানের ভান্ডার ৫ লক্ষাধিক দূর্লভ পুস্তক সম্বলিত আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরীটি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেবার দু:সাহস দেখিয়ে ছিলেন-
"If these books agreed in all points with the Book of God (al-Qur’an), the latter would still be perfect without them, and they would therefore be superfluous; but that if they contained anything repugnant to the doctrine of that book, they ought to be condemned as pernicious, and destroyed."
ওমরের মত জ্ঞানী লোকের এই নির্দেশের কারণে যারা তাকে পাগল ভাবে, তারা কেবল বোকার স্বর্গেই বাস করে। নিশ্চয় ওমর জানতেন কেবল জ্ঞানই সত্য এবং দুনিয়ার যাবতীয় জ্ঞানের সমষ্টি কখনও কোরআনের সত্যতার উপরে নয়। আর তাই খলিফার ঐ নির্দেশ ছিল কেবলমাত্র জগৎবাসীর কাছে তার তরফ থেকে কোরআনের সত্যতার ঐ সু-কঠিন সাক্ষ্য তুলে ধরা, কিতাব ধ্বংস করা নয়।
যাহোক, এবার আসি মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে। তবে এ সৃষ্টির সম্যক উপলব্ধিতে ভুমিকা হিসেবে আমরা প্রথমে স্রষ্টা ও তার সৃষ্টি সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করব।
মূলত:স্রষ্টা খোদা সর্বপ্রথম বিশেষ কিছু ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন যারা অতি পুত পবিত্র, অতি মহৎ। তাদের একদল খোদার নির্দেশে এক কিতাব লিপিবদ্ধ শুরু করে এবং অপরদল তার রক্ষণাবেক্ষণে নিয়েজিত হয়। আর লিখিত ঐ কিতাব অনুসারে ঐ কিতাব লিপিকার ফেরেস্তাগণ অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আসে মহাবিশ্বের- সৃষ্টি হয় দৃশ্যলোক। এসময় খোদা সৃষ্টি করেন অপরাপর ফেরেস্তাকূল। আর ঐসব ফেরেস্তাদের কিছু দৃশ্যলোকে ও কিছু অদৃশ্যলোকে খোদার নির্দেশ [যা কেবল ফেরেস্তাগণ বিজ্ঞানময় কিতাবে লিপিবদ্ধ করেছে] বাস্তবায়নে নানান কাজে নিয়োজিত হয়।
শূন্য থেকে সবকিছুর সৃষ্টি অর্থাৎ হঠাৎ বিস্ফোরণে সৃষ্টি হয় সবকিছু। আর সেই মহাবিস্ফোরণে একাধিক মহাবিশ্বের (বর্ণনা অনুসারে মনে হয় সংখ্যায় তা ৭টি) সৃষ্টি হয় একটার উপর আরেকটি (এতে অনুমিত হয় সেগুলো ফ্লাট তথা সমতল অথবা এককেন্দ্রিক বৃত্তাকার) এবং তার প্রতিটিতে স্রষ্টার নির্দেশ কার্য়্যকরী (এতে ধারণা করা যায় ডাইমেনশনালিটিজ, স্থান-কালের টপোলজি, পদার্থ ও শক্তির ধরণ বা physical laws ও physical constants, ইত্যাদি প্রতিটিতে ভিন্ন, নতুবা একই নির্দেশে সবগুলি নিয়মিত হত) হওয়ায় সেগুলো নিয়মিত হয়। অত:পর যখন আমাদের মহাবিশ্বের সৌরজগৎগুলোর কোন কোন গ্রহে জীবনের অস্তিত্বলাভের উপযোগী হল, তখন সবচেয়ে উপযুক্ত একটি গ্রহকে বেঁছে নিয়ে ফেরেস্তাগণ সেখানে লিখিত সেই কিতাব অনুসারে বিবর্তণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের সৃষ্টি করেন। অত:পর খোদা জ্বিণজাতিকে সৃষ্টি করে সেখানে বসবাস করতে দেন। সবশেষে খোদা মানব সৃষ্টি করেন সৃষ্ট সেই গ্রহের কাদামাটি দিয়ে।
খোদার যাবতীয় সৃষ্টির মধ্যে ফেরেস্তা, জ্বিণ ও মানব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কিতাব অনুসারে অনুমিত হয় এ তিনটি জাতিকেই কেবল তিনি নিজে সৃষ্টি করেছেন, বাকী সবকিছু হয়েছে বা হচ্ছে লিখিত কিতাবে দেয়া আদেশ অনুসারে। জ্বিণ ও ইনসানকে স্বাধীন করে সৃষ্টি করা হয়েছে অর্থাৎ তারা খোদার আদেশ নিষেধের বিপরীতে কাজ করতে পারে এবং এই কারণে তারা বিচারের অধীন বলা হয়েছে। অন্যদিকে ফেরেস্তাগণ খোদার আদেশ নিষেধের বাইরে কাজ করতে পারে না, ফলে তারা বিচারের অধীনও নয়। তাছাড়া ফেরেস্তাগণ যেমন লিঙ্গভিত্তিক নয়, তেমনি নয় জন্ম-মৃত্যুর অধীন- যেমনটা জ্বিণ ও মনুষ্যজাতি। ফেরেস্তাগণের যারা দৃশ্যলোকে কাজ করে তাদের অদৃশ্যলোকে যাবার ক্ষমতা নেই। তাদের যাতায়াতের শেষ সীমানা হল ৪র্থ আসমান বা ৪র্থ মহাবিশ্বের প্রান্তে অবস্থিত সিদরাতুল মুনতাহা। আর পৃথিবীতে খোদার বিভিন্ন নির্দেশ বাস্তবায়নে লক্ষ কোটি ফেরেস্তা নিয়োজিত বটে তবে প্রধান ফেরেস্তা মাত্র চারজন-
জিব্রাইল: বার্তা বাহকের কাজে নিয়োজিত।
মিকাইল: মেঘ, বৃষ্টি, চন্দ্র, সূর্য্য তথা মহাবিশ্ব পরিচালনার কাজে নিয়োজিত।
আজ্রাইল: প্রাণ সংহরণের কাজ নিয়োজিত, এবং
ইস্রাফিল: শিঙ্গা মুখে সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংসের জন্য খোদার আদেশের অপেক্ষায় রত।
মিকাইল: মেঘ, বৃষ্টি, চন্দ্র, সূর্য্য তথা মহাবিশ্ব পরিচালনার কাজে নিয়োজিত।
আজ্রাইল: প্রাণ সংহরণের কাজ নিয়োজিত, এবং
ইস্রাফিল: শিঙ্গা মুখে সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংসের জন্য খোদার আদেশের অপেক্ষায় রত।
দৃশ্যমান জগতে সকল পদার্থের ক্ষুদ্রকণা হল পরমাণু। একটা নির্দিষ্ট ফিকোয়েন্সিতে এসকল পরমাণু একত্রিত হয়ে বস্তুর অস্তিত্ব প্রকাশ করেছে। আর দৃশ্যমান জগতের সকল বস্তু বা প্রাণীর দৃশ্যমান উপস্থিতি কেবলমাত্র ৩৯০-৭০০nm ফ্রিকোয়েন্সি সীমায় অবস্থিত। মাটির তৈরী মানুষও এর বাইরে নয়। অন্যদিকে আগুণে সৃষ্ট জ্বিণজাতি [ ‘এবং জ্বিণকে ’লু এর আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছি।-১৫:২৭] ও নূরের সৃষ্ট ফেরেস্তাগণ এই ফিকোয়েন্সি সীমার বাইরের কোন নির্দিষ্ট ফিকোয়েন্সি দিয়ে সৃষ্ট, ফলে তারা দৃশ্যমান নয়। তবে তারা উভয় ফিকোয়েন্সি সীমায় যাতায়াত করতে পারে।
গঠনগত দিক ছাড়াও জ্বিণ ও ফেরেস্তার মধ্যে কিছু বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। জ্বিণ একজোড়া ডানা বা পাখাবিশিষ্ট কিন্তু ফেরেস্তাদের পাখার সংখ্যা সুনির্দিষ্ট নয় [(ফেরেস্তা) ‘দুই, তিন কিংবা চার জোড়া পক্ষ বিশিষ্ট।’-৩৫:১,]। তাছাড়া ফেরেস্তাগণ দৃশ্যমান জগতের যে কোন বস্তু বা প্রাণীর রূপধারণ বা নিজেকে তাতে রূপান্তরিত করতে পারে। অন্যদিকে জ্বিণ রূপ ধারণ করতে পারলেও কোন প্রানী বা বস্তুতে নিজেকে রূপান্তরিত করতে পারে না। এ কারণে তারা প্রয়োজনে অন্যের শরীরে ভর করে। তবে যেহেতু জ্বিণজাতি দৃশ্যমান জগতের সকল বস্তুর ফিকোয়েন্সি জানে, তাই তারা বস্তু বা প্রাণীর ফিকোয়েন্সিতে অতি নগণ্য পরিমাণে পরিবর্তণ এনে তাকে সাময়িক পরিবর্তিত রূপদান বা তাকে অদৃশ্যমান করতে পারে। নবী শলোমনের উপদেষ্টা জ্বিণ এভাবেই রানী বিলকিসের সিংহাসন তার সম্মুখে হাজির করেছিল এবং তাতে সামান্য পরিবর্তণও এনেছিল। যেমন-
শলোমন আরও বলল, ‘হে আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার কাছে আত্মসমর্পন করতে আমার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমাকে এনে দেবে?’
এক শক্তিশালী জ্বীন বলল, ‘আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেব। এ ব্যাপারে আমি এমনই শক্তি রাখি। আর আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।’
কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বলল, ‘আপনি চোখের পলক ফেলার আগেই আমি তা এনে দেব।’
যখন তা সামনে রাখা দেখল তখন (শলোমন) বলল, ........‘তার সিংহাসনের আকৃতিতে সামান্য পরিবর্তণ আনো; দেখি সে চিনতে পারে- নাকি ভুল করে।’ -(২৭:৩৮-৪১)
আর এ সামান্য পরিবর্তনের কারনে বুদ্ধিমতী বিলকিস দাবী করেননি ঐটি তার সিংহাসন, কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সেটি তারই। আর তাই শলোমনের প্রশ্নের প্রদত্ত উত্তরে তার ঐ মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছিল। যেমন- (বিলকিস) যখন পৌঁছিল তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, ‘তোমার সিংহাসন কি এ রকম?’
সে বলল, ‘এ তো এ রকমই। ...।’-(২৭: ৪২)
তাছাড়া শলোমন সাময়িকভাবে সিংহাসনচ্যূত হন জ্বিণ চখরের কারসাঁজিতে। সে তার শরীরকে বেষ্টন করে এক ফিকোয়েন্সি জাল সৃষ্টি করেছিল, ফলে এমনকি তার স্ত্রী আমিনাও তাকে চিনতে না পেরে অস্খীকার করেছিল।
এ পর্যন্ত যা আলোচনা করলাম তার সার সংক্ষেপ হল- ফেরেস্তাগণ, জ্বিণ ও মানব জাতির সৃষ্টিতে খোদা স্বয়ং কাজ করলেও অন্যান্য সৃষ্টিতে তিনি নিজে অংশগ্রহণ করেননি, বরং তার নির্দেশে লিখিত কিতাব অনুসারে নির্দিষ্ট ফেরেস্তারা সেসব সৃষ্টি করেছে এবং করে যাচ্ছে। অন্যকথায় সবকিছুই হচ্ছে খোদার আদেশ মত যা লিখিত আছে কিতাবে। এ কারণে কোরআনে বলা হয়েছে- খোদা আসমান ও জমিনের স্রষ্টা। আর যখন তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করতে চান, তখন শুধু বলেন “হও” আর তা হয়ে যায়। -(২:১১৭)
কি আছে লওহে মাহফুজের কিতাবে? কোরআনে বলা হয়েছে- নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, যা আছে এক গোপন কিতাবে।-(৫৬:৭৭-৭৮) এটা লিখিত আছে সম্মানিত, উচ্চ পবিত্র পত্রসমূহে, লিপিকারের হস্তে, যারা মহৎ পূত চরিত্র।-(৮০:১৩-১৬) নিশ্চয় এ কোরআন আমার কাছে সমুন্নত অটল রয়েছে লওহে মাহফুজে।-(৪৩:৪) আকাশ ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন ভেদ নেই যা না আছে ঐ কিতাবে।-(২৭:৭৫)
কিতাবে সবকিছুই লিপিবদ্ধ রয়েছে, রয়েছে প্রতিটি মানব ও জ্বিণের আয়ূস্কাল অর্থাৎ জন্ম ও মৃত্যুর ক্ষণ। তবে নবী ও রসূল ছাড়া অন্যকোন মানব বা জ্বিণের জীবনকালের যাবতীয় খুঁটিনাটি তাতে লিপিবদ্ধ নেই। আর যেহেতেু নবী-রসূলদের জীবনপথের যাবতীয় কিছু অর্থাৎ তাদের সকল কথা ও কর্ম লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। তাই ইবলিস যখন বলেছিল- ‘তুমি একে কি দেখেছ যে আমার উপরে তুমি মর্যাদা দিলে? কেয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দাও, তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরদের সমূলে বিনষ্ট করে ফেলব।’ -(১৭:৬২) তখন উত্তরে খোদা তাকে জানিয়েছিলেন- ‘আমার দাসদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা থাকবে না। কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।’-(১৭:৬২-৬৫) আর তাই ইবলিস তার প্রতিজ্ঞাকে সীমায়িত করতে বাধ্য হয়েছিল- ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার যে সর্বনাশ করলে তার দোহাই! আমি পৃথিবীতে মানুষের কাছে পাপকে আকর্ষণীয় করব, আর আমি সকলের সর্বনাশ করব; তোমার নির্বাচিত দাস ছাড়া।’-(১৫:৩৯-৪০)
কিতাবে আর যা নেই তা হল কেয়ামত সংঘটনের সময়কাল। এটি একমাত্র আল্লাহই জানেন [যেমন-"Verily the knowledge of the Hour is with Allah (alone)-(৩১:৩৪) বা, To your Lord is its finality.-(৭৯:৪৪) [ঈসা বলেছেন-”প্রকৃতপক্ষে সেইদিন সেই সময়ের কথা কেউ জানে না, স্বর্গের ফেরেস্তারাও না, আমিও না, কেবল খোদা জানেন।”- বাইবেল।] আর এ থেকে বোঝা যায়, কাগজে কলমে সূর্য়্যের জ্বালানী কখন শেষ হবে তা আমরা অঙ্ক কষে বের করতে পারলেও কেয়ামতের সময়কাল কখনই মানুষ বিজ্ঞানের সাহায্যে জানতে পারবে না, পরিণতি আসবে হঠাৎ করেই, হয়ত: আচম্কা কোন ব্লাক হোলে পতিত হবে আমাদের সৌরজগৎ। কেননা বলা হয়েছে হঠাৎ করে শুরু হওয়া নিম্নগ্রামের শব্দ ও কম্পন্ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। অত:পর সবকিছু টুকরো টুকরো হয়ে পরিণত হবে ধূণিত রঙ্গিন পশমের মত। আর এসব ঘটবে সৃষ্টিকর্তার সরাসরি নির্দেশে।
আর যেদিন ইস্রাফিল খোদার নির্দেশ পেয়ে শিঙ্গাতে ফুঁক দেবে, সেদিন আসমান জমিন এবং তার মধ্যেকার সবকিছু এমন কি ফেরেস্তাগণও ধ্বংস হয়ে যাবে, কেবল মহান আল্লাহ ছাড়া কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
শিঙায় দেয়া সেই ফুঁক, তরঙ্গের আকারে মিহীন সূর হয়ে ভেসে আসতে থাকবে। নিম্নগ্রামে এ সূর শুরু হলেও আস্তে আস্তে তা উচ্চগ্রামের দিকে ধাবিত হবে। একসময় তা আরও পরিবর্তিত হবে। অবশ্য পরিবর্তনটা হবে খুবই ধীরে। তারপর যখন আওয়াজের কাঠিণ্যতা মূহুর্তের পর মূহুর্তে বদলাতে থাকবে এবং তা বিভৎসতর হতে থাকবে। ঐ সময় দৃশ্যমান জগতের বস্তুসমূহের গাঠণিক ফিকোয়েন্সির বন্ধন ছিন্ন হতে শুরু করবে। ফলে পাহাড় পর্বত চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ধূলোর ন্যায় উড়তে থাকবে। আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যেতে থাকবে। কোরআনে রয়েছে-
আমি পৃথিবীস্থ সবকিছুকে পৃথিবীর জন্যে শোভা করেছি এবং তার উপর যা কিছু রয়েছে, অবশ্যই তা আমি উদ্ভিদ শূন্য মাটিতে পরিণত করে দেব।-(১৮:৭-৮) সেদিন সূর্য্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে।–(৭৫:৯) পাহাড় সমূহকে সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দেয়া হবে। পৃথিবীকে করা হবে মসৃণ সমতল ভূমি।-(২০:১০৫-১০৬)
নিশ্চয় কেয়ামতের প্রকম্পন হবে একটি ভয়ঙ্কর ব্যাপার।....সেদিন প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত ঘটাবে এবং মানুষকে দেখাবে মাতালের মত; অথচ তারা মাতাল নয়।-(২২:১-২) সেদিন সূর্য্য আলোহীন হয়ে যাবে, নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে, পর্বতমালা অপসারিত হবে; ....সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে।-(৮১:১-৬) আকাশ হবে গলিত তামার মত এবং পর্বত সমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত।-(৭০:৮) আকাশ ধূঁয়ায় ছেয়ে যাবে -(৪৪:১০) অগ্নি স্ফূলিঙ্গ ও ধুম্রকুঞ্জ মানুষকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে....।-(৫৫:৩৫)
কেয়ামত আসবে অতর্কিত ভাবে, অতঃপর মানুষকে তা হতবুদ্ধি করে দেবে, ...।-(২১:৪০) সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত।-(১০১:৩-৪) সেদিন আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছে করবেন, তারা ব্যতিত নভঃমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যারা আছে, তারা সবাই ভীত-বিহব্বল হয়ে পড়বে।-(২৭:৮৭) আকাশ বিদীর্ণ হবে, আর তা রক্তবর্ণে রঞ্জিত চামড়ার মত হয়ে যাবে।-(৫৫:৩৭) প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। তারপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।-(৫৬:৪-৬)
শিঙ্গায় দেয়া ফুঁক তো হবে কেবল এক মহানাদ।-(৩৭:১৯) তা হবে কর্ণবিদারী, ফলে আসমান ও জমীনে যারা আছে, সবাই বেঁহুস হয়ে যাবে।-(৩৯:৬৮) আল্লাহর সত্ত্বা ব্যতিত সবকিছুই ধ্বংস হবে।-(২৮:৮৮) কারো কি জানা আছে শিঙ্গার এ আওয়াজ কতক্ষণ স্থায়ী হবে? এ আওয়াজ প্রথম যেদিন প্রাত:কালে আরম্ভ হবে, সেদিন থেকে সবকিছু একে একে ধ্বংস হবার পর পূর্ণ ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
অতঃপর মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম ইস্রফিলকে সৃষ্টি করবেন। তারপর তিনি তাকে ২য়বার শিঙ্গায় ফুঁক দেবার জন্যে আদেশ করবেন। তাতে সকল মখলুকাতই পুনরুত্থিত হবে। বলা হয়েছে, সেই উত্থান হবে তেমনি যেভাবে শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে বৃষ্টির পানি পেয়ে উদ্ভিদের উৎগমন হয়। মানুষ ভূমি থেকে মাথার মাটি ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে দাঁড়াবে। কোরআন জানিয়েছে-
সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটান হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত।-(২১:১০৪)
এখন আমরা দেখি কিভাবে কোরআনে খোদা তার সৃষ্টি কৌশল বা বিজ্ঞান ভিত্তিক আয়াতগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। বলে রাখা ভাল, কোরআনে বর্ণিত সৃষ্টি কৌশল বা অন্য কোন বিজ্ঞান বিষয়ক বর্ণনা শতভাগ সঠিক হলেও আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে তুলনায় আপাত: দৃষ্টিতে সাধারণের নিকট বিজ্ঞান সম্মত নয় প্রতীয়মান হতে পারে এবং প্রশ্ন জাগতে পারে মহাজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তার বাণীর বর্ণনা এমনটা হল কেন? এর কারণটি একটি উপমা দিয়ে ব্যাখ্যা করি-
ধরি, শহরের এক স্কূল ছাত্র যে কখনও ঘূঘূ পাখি দেখেনি সে তার শিক্ষকের কাছে জানতে চাইল, “ঘূঘূ পাখি দেখতে কেমন?” এতে শিক্ষকের উত্তর কি হবে বলে আপনি মনে করেন?
নিশ্চয়ই এ্ই প্রশ্নের উত্তর দিতে শিক্ষক প্রথমে ভেবে দেখবেন শহরে ঘুঘু সদৃশ কোন পাখি আছে এবং সেটি ঐ ছাত্র দেখেছে কিনা। তারপর যখন তিনি দেখলেন শহরে ঘুঘু সদৃশ কবুতর আছে এবং জানলেন ঐ ছাত্র সেটি দেখেছে, তখন তার উত্তর হবে, “ঘুঘু পাখি দেখতে কবুতরের মতন।” -এই নয় কি?
শলোমন আরও বলল, ‘হে আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার কাছে আত্মসমর্পন করতে আমার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমাকে এনে দেবে?’
এক শক্তিশালী জ্বীন বলল, ‘আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেব। এ ব্যাপারে আমি এমনই শক্তি রাখি। আর আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।’
কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বলল, ‘আপনি চোখের পলক ফেলার আগেই আমি তা এনে দেব।’
যখন তা সামনে রাখা দেখল তখন (শলোমন) বলল, ........‘তার সিংহাসনের আকৃতিতে সামান্য পরিবর্তণ আনো; দেখি সে চিনতে পারে- নাকি ভুল করে।’ -(২৭:৩৮-৪১)
আর এ সামান্য পরিবর্তনের কারনে বুদ্ধিমতী বিলকিস দাবী করেননি ঐটি তার সিংহাসন, কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সেটি তারই। আর তাই শলোমনের প্রশ্নের প্রদত্ত উত্তরে তার ঐ মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছিল। যেমন- (বিলকিস) যখন পৌঁছিল তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, ‘তোমার সিংহাসন কি এ রকম?’
সে বলল, ‘এ তো এ রকমই। ...।’-(২৭: ৪২)
তাছাড়া শলোমন সাময়িকভাবে সিংহাসনচ্যূত হন জ্বিণ চখরের কারসাঁজিতে। সে তার শরীরকে বেষ্টন করে এক ফিকোয়েন্সি জাল সৃষ্টি করেছিল, ফলে এমনকি তার স্ত্রী আমিনাও তাকে চিনতে না পেরে অস্খীকার করেছিল।
এ পর্যন্ত যা আলোচনা করলাম তার সার সংক্ষেপ হল- ফেরেস্তাগণ, জ্বিণ ও মানব জাতির সৃষ্টিতে খোদা স্বয়ং কাজ করলেও অন্যান্য সৃষ্টিতে তিনি নিজে অংশগ্রহণ করেননি, বরং তার নির্দেশে লিখিত কিতাব অনুসারে নির্দিষ্ট ফেরেস্তারা সেসব সৃষ্টি করেছে এবং করে যাচ্ছে। অন্যকথায় সবকিছুই হচ্ছে খোদার আদেশ মত যা লিখিত আছে কিতাবে। এ কারণে কোরআনে বলা হয়েছে- খোদা আসমান ও জমিনের স্রষ্টা। আর যখন তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করতে চান, তখন শুধু বলেন “হও” আর তা হয়ে যায়। -(২:১১৭)
কি আছে লওহে মাহফুজের কিতাবে? কোরআনে বলা হয়েছে- নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, যা আছে এক গোপন কিতাবে।-(৫৬:৭৭-৭৮) এটা লিখিত আছে সম্মানিত, উচ্চ পবিত্র পত্রসমূহে, লিপিকারের হস্তে, যারা মহৎ পূত চরিত্র।-(৮০:১৩-১৬) নিশ্চয় এ কোরআন আমার কাছে সমুন্নত অটল রয়েছে লওহে মাহফুজে।-(৪৩:৪) আকাশ ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন ভেদ নেই যা না আছে ঐ কিতাবে।-(২৭:৭৫)
কিতাবে সবকিছুই লিপিবদ্ধ রয়েছে, রয়েছে প্রতিটি মানব ও জ্বিণের আয়ূস্কাল অর্থাৎ জন্ম ও মৃত্যুর ক্ষণ। তবে নবী ও রসূল ছাড়া অন্যকোন মানব বা জ্বিণের জীবনকালের যাবতীয় খুঁটিনাটি তাতে লিপিবদ্ধ নেই। আর যেহেতেু নবী-রসূলদের জীবনপথের যাবতীয় কিছু অর্থাৎ তাদের সকল কথা ও কর্ম লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। তাই ইবলিস যখন বলেছিল- ‘তুমি একে কি দেখেছ যে আমার উপরে তুমি মর্যাদা দিলে? কেয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দাও, তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরদের সমূলে বিনষ্ট করে ফেলব।’ -(১৭:৬২) তখন উত্তরে খোদা তাকে জানিয়েছিলেন- ‘আমার দাসদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা থাকবে না। কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।’-(১৭:৬২-৬৫) আর তাই ইবলিস তার প্রতিজ্ঞাকে সীমায়িত করতে বাধ্য হয়েছিল- ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার যে সর্বনাশ করলে তার দোহাই! আমি পৃথিবীতে মানুষের কাছে পাপকে আকর্ষণীয় করব, আর আমি সকলের সর্বনাশ করব; তোমার নির্বাচিত দাস ছাড়া।’-(১৫:৩৯-৪০)
কিতাবে আর যা নেই তা হল কেয়ামত সংঘটনের সময়কাল। এটি একমাত্র আল্লাহই জানেন [যেমন-"Verily the knowledge of the Hour is with Allah (alone)-(৩১:৩৪) বা, To your Lord is its finality.-(৭৯:৪৪) [ঈসা বলেছেন-”প্রকৃতপক্ষে সেইদিন সেই সময়ের কথা কেউ জানে না, স্বর্গের ফেরেস্তারাও না, আমিও না, কেবল খোদা জানেন।”- বাইবেল।] আর এ থেকে বোঝা যায়, কাগজে কলমে সূর্য়্যের জ্বালানী কখন শেষ হবে তা আমরা অঙ্ক কষে বের করতে পারলেও কেয়ামতের সময়কাল কখনই মানুষ বিজ্ঞানের সাহায্যে জানতে পারবে না, পরিণতি আসবে হঠাৎ করেই, হয়ত: আচম্কা কোন ব্লাক হোলে পতিত হবে আমাদের সৌরজগৎ। কেননা বলা হয়েছে হঠাৎ করে শুরু হওয়া নিম্নগ্রামের শব্দ ও কম্পন্ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। অত:পর সবকিছু টুকরো টুকরো হয়ে পরিণত হবে ধূণিত রঙ্গিন পশমের মত। আর এসব ঘটবে সৃষ্টিকর্তার সরাসরি নির্দেশে।
আর যেদিন ইস্রাফিল খোদার নির্দেশ পেয়ে শিঙ্গাতে ফুঁক দেবে, সেদিন আসমান জমিন এবং তার মধ্যেকার সবকিছু এমন কি ফেরেস্তাগণও ধ্বংস হয়ে যাবে, কেবল মহান আল্লাহ ছাড়া কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
শিঙায় দেয়া সেই ফুঁক, তরঙ্গের আকারে মিহীন সূর হয়ে ভেসে আসতে থাকবে। নিম্নগ্রামে এ সূর শুরু হলেও আস্তে আস্তে তা উচ্চগ্রামের দিকে ধাবিত হবে। একসময় তা আরও পরিবর্তিত হবে। অবশ্য পরিবর্তনটা হবে খুবই ধীরে। তারপর যখন আওয়াজের কাঠিণ্যতা মূহুর্তের পর মূহুর্তে বদলাতে থাকবে এবং তা বিভৎসতর হতে থাকবে। ঐ সময় দৃশ্যমান জগতের বস্তুসমূহের গাঠণিক ফিকোয়েন্সির বন্ধন ছিন্ন হতে শুরু করবে। ফলে পাহাড় পর্বত চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ধূলোর ন্যায় উড়তে থাকবে। আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যেতে থাকবে। কোরআনে রয়েছে-
আমি পৃথিবীস্থ সবকিছুকে পৃথিবীর জন্যে শোভা করেছি এবং তার উপর যা কিছু রয়েছে, অবশ্যই তা আমি উদ্ভিদ শূন্য মাটিতে পরিণত করে দেব।-(১৮:৭-৮) সেদিন সূর্য্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে।–(৭৫:৯) পাহাড় সমূহকে সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দেয়া হবে। পৃথিবীকে করা হবে মসৃণ সমতল ভূমি।-(২০:১০৫-১০৬)
নিশ্চয় কেয়ামতের প্রকম্পন হবে একটি ভয়ঙ্কর ব্যাপার।....সেদিন প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত ঘটাবে এবং মানুষকে দেখাবে মাতালের মত; অথচ তারা মাতাল নয়।-(২২:১-২) সেদিন সূর্য্য আলোহীন হয়ে যাবে, নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে, পর্বতমালা অপসারিত হবে; ....সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে।-(৮১:১-৬) আকাশ হবে গলিত তামার মত এবং পর্বত সমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত।-(৭০:৮) আকাশ ধূঁয়ায় ছেয়ে যাবে -(৪৪:১০) অগ্নি স্ফূলিঙ্গ ও ধুম্রকুঞ্জ মানুষকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে....।-(৫৫:৩৫)
কেয়ামত আসবে অতর্কিত ভাবে, অতঃপর মানুষকে তা হতবুদ্ধি করে দেবে, ...।-(২১:৪০) সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত।-(১০১:৩-৪) সেদিন আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছে করবেন, তারা ব্যতিত নভঃমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যারা আছে, তারা সবাই ভীত-বিহব্বল হয়ে পড়বে।-(২৭:৮৭) আকাশ বিদীর্ণ হবে, আর তা রক্তবর্ণে রঞ্জিত চামড়ার মত হয়ে যাবে।-(৫৫:৩৭) প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। তারপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।-(৫৬:৪-৬)
শিঙ্গায় দেয়া ফুঁক তো হবে কেবল এক মহানাদ।-(৩৭:১৯) তা হবে কর্ণবিদারী, ফলে আসমান ও জমীনে যারা আছে, সবাই বেঁহুস হয়ে যাবে।-(৩৯:৬৮) আল্লাহর সত্ত্বা ব্যতিত সবকিছুই ধ্বংস হবে।-(২৮:৮৮) কারো কি জানা আছে শিঙ্গার এ আওয়াজ কতক্ষণ স্থায়ী হবে? এ আওয়াজ প্রথম যেদিন প্রাত:কালে আরম্ভ হবে, সেদিন থেকে সবকিছু একে একে ধ্বংস হবার পর পূর্ণ ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
অতঃপর মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম ইস্রফিলকে সৃষ্টি করবেন। তারপর তিনি তাকে ২য়বার শিঙ্গায় ফুঁক দেবার জন্যে আদেশ করবেন। তাতে সকল মখলুকাতই পুনরুত্থিত হবে। বলা হয়েছে, সেই উত্থান হবে তেমনি যেভাবে শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে বৃষ্টির পানি পেয়ে উদ্ভিদের উৎগমন হয়। মানুষ ভূমি থেকে মাথার মাটি ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে দাঁড়াবে। কোরআন জানিয়েছে-
সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটান হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত।-(২১:১০৪)
এখন আমরা দেখি কিভাবে কোরআনে খোদা তার সৃষ্টি কৌশল বা বিজ্ঞান ভিত্তিক আয়াতগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। বলে রাখা ভাল, কোরআনে বর্ণিত সৃষ্টি কৌশল বা অন্য কোন বিজ্ঞান বিষয়ক বর্ণনা শতভাগ সঠিক হলেও আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে তুলনায় আপাত: দৃষ্টিতে সাধারণের নিকট বিজ্ঞান সম্মত নয় প্রতীয়মান হতে পারে এবং প্রশ্ন জাগতে পারে মহাজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তার বাণীর বর্ণনা এমনটা হল কেন? এর কারণটি একটি উপমা দিয়ে ব্যাখ্যা করি-
ধরি, শহরের এক স্কূল ছাত্র যে কখনও ঘূঘূ পাখি দেখেনি সে তার শিক্ষকের কাছে জানতে চাইল, “ঘূঘূ পাখি দেখতে কেমন?” এতে শিক্ষকের উত্তর কি হবে বলে আপনি মনে করেন?
নিশ্চয়ই এ্ই প্রশ্নের উত্তর দিতে শিক্ষক প্রথমে ভেবে দেখবেন শহরে ঘুঘু সদৃশ কোন পাখি আছে এবং সেটি ঐ ছাত্র দেখেছে কিনা। তারপর যখন তিনি দেখলেন শহরে ঘুঘু সদৃশ কবুতর আছে এবং জানলেন ঐ ছাত্র সেটি দেখেছে, তখন তার উত্তর হবে, “ঘুঘু পাখি দেখতে কবুতরের মতন।” -এই নয় কি?
মহাবিশ্ব। |
কোরআনে বিজ্ঞানের সাথে আপাত: দৃষ্টিতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বর্ণনার একটি উদাহরণ, সূর্য্য ওঠা ও ডুবে যাবার বিষয়টি। কোরআনের এক আয়াতে এমন বর্ণনা রয়েছে-“চলতে চলতে সে যখন সূর্য্যের অস্তাচলে পৌঁছিল তখন সে সূর্য্যকে এক পঙ্কিল পানিতে অস্ত যেতে দেখল।”-(১৮:৮৬) এ বর্ণনা থেকে মনে হচ্ছে যেন সূর্য্য পানিতে অস্ত যায়। কিন্তু আদোতে সূর্য্য ওঠেও না ডুবেও না। কিন্তু এ বর্ণনার কারণ এই যে, ঐ সময়ের মানুষ এমনই বলত যেমন আমরা আজ অবধি তা বলছি, যদিও তা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে হাস্যকর বটে। আর আরবরা যে আদোতে সূর্য্য ওঠেও না ডুবেও না তা জানত তার প্রমান ইসলামপূর্ব কালের কবি আল-আশা ও হাসান ইবনে সাবেতের কম্পোজিত জুলকারনাইনকে নিয়ে এই কবিতাতেই পাওয়া যায়-
”Ours the realm of Dhu 'l-Qarnayn the glorious
Realm like his was never won by mortal king.
Followed he the Sun to view its setting
...............”
যাহোক, প্রসঙ্গে ফিরি, মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে- কোন সৃষ্টির কাজে আল্লাহ শুধু বলেন, ”হও”, আর তা সৃষ্টি হয় অর্থাৎ অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বলাভ করে। এমনিভাবে খোদার আদেশের পর মহাবিশ্বের সৃষ্টি শুরু হল। শুরুতে ছিল সবকিছু ধোঁয়ার মত। পরে তিনি আসমানসমূহকে নিয়মিত করলেন। একটার উপর একটা আসমানের সৃষ্টি হল। কিন্তু দৃশ্যমান কোন খুঁটি নেই। আর একটা থেকে অপরটি পৃথক রয়েছে কেবলমাত্র শক্তির দ্বারা।
”Ours the realm of Dhu 'l-Qarnayn the glorious
Realm like his was never won by mortal king.
Followed he the Sun to view its setting
...............”
যাহোক, প্রসঙ্গে ফিরি, মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে- কোন সৃষ্টির কাজে আল্লাহ শুধু বলেন, ”হও”, আর তা সৃষ্টি হয় অর্থাৎ অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বলাভ করে। এমনিভাবে খোদার আদেশের পর মহাবিশ্বের সৃষ্টি শুরু হল। শুরুতে ছিল সবকিছু ধোঁয়ার মত। পরে তিনি আসমানসমূহকে নিয়মিত করলেন। একটার উপর একটা আসমানের সৃষ্টি হল। কিন্তু দৃশ্যমান কোন খুঁটি নেই। আর একটা থেকে অপরটি পৃথক রয়েছে কেবলমাত্র শক্তির দ্বারা।
মহাবিশ্ব। |
রাতে পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উর্দ্ধাকাশে তাকালে নক্ষত্রগুলো দৃশ্যমান হয় তারকা সদৃশ, মনে হয় যেন পৃথিবীকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত করেছে তাকে বেষ্টন করে থাকা ঐ আকাশ, যা অলঙ্কৃত ঐ উজ্জ্বল তারকাগুলি দ্বারা। আর এভাবেই সেগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে। নিম্নতম আকাশে আমাদের সৌরজগতে সূর্য্য একটি গ্রহ, যা জলন্ত প্রদীপ সদৃশ করে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সূর্য্যই এই সৌরজগতের পাহারাদার বা রক্ষক। প্রতিটি জীবনের সৃষ্টি, পুষ্টি, বৃদ্ধি ও ক্ষয় সূর্য্যের দ্বারাই সাধিত হয়। পৃথিবী নামক গ্রহটির উপগ্রহ চাঁদ। এই চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। এটি আলোকময় অর্থাৎ সূর্য্যের আলোতে এটি আলোকিত হয় এবং রাতে পৃথিবী পৃষ্ঠে আলো প্রদান করে। তিনি গ্রহ ও উপগ্রহগুলিকে ঘূর্ণায়মান করে গতিশীল করেছেন, ফলে দিন, রাত্রি, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্য্যগ্রহণ হয়। চাঁদ, সূর্য্য যেমন হিসেবের অধীন তেমনি হিসেবের অধীন নক্ষত্ররাজীও।
এ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতসমূহ- ‘এতদভিন্ন তিনি (আল্লাহ) আসমানের প্রতি মনোযোগ দিলেন, তখন তা ছিল শুধু ধোঁয়া।’ -(৪১:১১) ‘পরে তিনি সাত আসমানকে নিয়মিত করলেন এবং প্রতি আসমানকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন’ (আল্লাহ বলেন) এবং আমি নিম্ন আকাশকে তাঁরকারাজী দ্বারা সজ্জ্বিত করলাম এবং তাকে দিলাম এক পাহারাদার।’-(৪১:১২) ‘আকাশমন্ডল ও পৃথিবী পরস্পর সংযুক্ত ছিল; পরে আমি ওদের পৃথক করে দিয়েছি এবং’-(২১:৩০) ‘নিশ্চয়ই আমি নিম্নতম আসমানকে গ্রহাদির অলঙ্কারে সজ্জ্বিত করেছি।’-(৩৭:৬) কল্যাণময় সেই তিনিই আসমানে স্থাপন করেছেন তারকাপুঞ্জ এবং স্থাপন করেছেন একটি প্রদীপ্ত সূর্য্য এবং একটি আলো প্রদানকারী চন্দ্র।’ -(২৫:৬১)
সাত আসমান। |
সৃষ্টির সময়কাল: কি সৃষ্টি করা অধিক কঠিন-মানুষ না আকাশ যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন? নীলাকাশের চাঁদোয়া তিনি উচ্চে তুলেছেন এবং তাকে সামঞ্জস্য করে সাঁজিয়েছেন। রাত্রিকে অন্ধকার করা হয়েছে; তারপর এই অন্ধকার রাতের পর ধীরে ধীরে প্রভাতের আলো ফোটে অর্থাৎ প্রকাশ করা হয় দিবস।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষের বসবাস উপযোগী করে তোলার পূর্বপর্যন্ত নানা বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেছে এবং সময় পেরিয়েছে লক্ষ কোটি বৎসর। পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি হয়েছে বাতাস, পানি, উদ্ভিদ, পশু-পাখি ইত্যাদি। (মানুষ ও জ্বিন ব্যতিত) জীবন্ত সমস্ত কিছু সৃষ্টি হয়েছে পানি থেকে, বিবর্তণের মধ্য দিয়ে। কোরআন জানায়,- প্রতিটি জীবন্ত কিছুকে আমি উঠিয়েছি পানি থেকে।-(২১:৩০; ২৪:৪৫)
মহাবিশ্ব হচ্ছে স্থান, কাল ও তার অভ্যন্তরস্থ সবকিছু। অবস্থানের দিক থেকে মহাবিশ্বের মধ্যস্থিত সকল বস্তুকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
ক).‘আসমানসমূহ এবং সেখানে অবস্থিত সবকিছু
খ). পৃথিবী এবং তার উপরে, মধ্যে অবস্থিত যাবতীয় কিছু এবং
গ). আকাশ ও পৃথিবী-এ দু’য়ের মধ্যে অবস্থিত সমস্ত কিছু।
আর আল্লাহ তাঁর এই সমস্ত সৃষ্টি ছয়টি দিনে সম্পন্ন করেছেন। এখানে এই দিন দুনিয়ার (রিয়েল টাইম) সাপেক্ষে নয় বরং বলা যায় অনাদিকাল সাপেক্ষে। সমগ্র সময়কালকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
ক). অনাদিকাল তথা মহাবিশ্বের সৃষ্টিপূর্ব কাল,
খ). রিয়েল টাইম অর্থাৎ মহাবিশ্ব সৃষ্টি ও তার ধ্বংসের মধ্যবর্তী কাল এবং
গ). অনন্তকাল অর্থাৎ মহাবিশ্ব ধ্বংসের পরবর্তীকাল।
আর এখানে সৃষ্টির ঐ ৬ দিন হচ্ছে অনাদি বা অনন্তকাল সাপেক্ষে, যার একেকটি আমাদের গণনায় অর্থাৎ রিয়েল টাইমের হিসেবে দশ হাজার বৎসর, আবার হতে পারে পঞ্চাশ হাজার বৎসর বা তারও বেশী [উদাহরণ স্বরূপ- পৃথিবীতে মানুষের জীবনকাল ১০০০ বৎসরের (নূহ ৯৫০ বৎসর) মধ্যে সীমাবদ্ধ। আর বিচার দিবসে পুনরুত্থিত মানুষের কাছে তাদের ঐ পার্থিব জীবনকাল মনে হবে একদিন বা দিনের কিছুসময়। যেমন- “তাদের মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।-(৭৯:৪৬) প্রথমে তারা চুপিসারে একে অন্যের সাথে বলাবলি করবে, ‘তোমরা মাত্র দশদিন অবস্থান করেছিলে।’-(২০:১০৩)তাদের মধ্যে যে অপেক্ষাকৃত উত্তম পথের অনুসারী, সে বলবে, ‘তোমরা মাত্র একদিন অবস্থান করেছিলে।’-(২০:১০৪) আর সেদিন অনেকে কসম খেয়ে বলবে, ‘আমরা এক মুহুর্তেরও বেশী অবস্থান করিনি।’-(৩০:৫৫) আর তাই খোদা যখন বলবেন- বল, পৃথিবীতে তোমরা কতদিন অবস্থান করলে বৎসরের গণনায়?’ তারা বলবে, ‘আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদের জিজ্ঞেস করুন।’-(২৩:১১২-১১৪) এসব আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় অনন্তকালের একদিন দুনিয়ার গণনায় কয়েক লক্ষ বৎসরও হতে পারে।] কোরআনে বলা হয়েছে- ‘...সময়কালের মধ্যে-যার হিসেব তোমাদের গণনায় সহস্র বৎসর।’-(৩২:৫) এমন একটা সময়কালের মধ্যে যার হিসেব গণনায় পঞ্চাশ হাজার বৎসর।’-(৭০:৪)
যাহোক, প্রসঙ্গে ফিরি, মহাকাশ তথা আসমানসমূহ নিয়মিত হয় দু‘টি সময়কালে (দিনে)। দু‘টি সময়কালে (দিনে) পৃথিবী (অর্থাৎ আসমানসমূহ নিয়মিতকালে পৃথিবীও সৃষ্ট হয়েছিল)। আর চারটি সময়কালের মধ্যে পৃথিবীতে প্রয়োজন অনুযায়ী সামগ্রী সৃষ্টি করা হয়েছিল। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি হয়েছে ৬ দিনে বা অন্যকথায় ৬টি সময়কালে।
কোরআনে বলা হয়েছে- আমি সৃষ্টি করেছি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এ দু’য়ের মাঝখানে যা আছে।(৫০:৩৮) সবকিছু [যা আছে আকাশমন্ডলীতে, ভুমির উপরে, এ দু’য়ের মধ্যে এবং ভূ-গর্ভে] আমারই সার্বভৌমত্তের অধীন।(২০:৬)
আমিই আকাশমন্ডলী, এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছি ছয়টি সময়কালে।(৭:৫৪) আমি সৃষ্টি করেছি আসমানসমূহ, পৃথিবী এবং এ দু‘য়ের মাঝখানে যা আছে-ছয়টি সময়কালে; এবং কোন ক্লান্তি স্পর্শ করতে পারেনি আমাকে।(৫০:৩৮)
দু’টি সময়কালের মধ্যে আমি সপ্ত আকাশকে নিয়মিত করেছিলাম।(৪১:১২)দু’টি সময়কালের মধ্যে পৃথিবীর সৃষ্টি।(৪১:৯) আর তিন চারটি সময়কালের মধ্যে সেখানকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়েছি।(৪১:১০)এসব সময়কালের হিসেব তোমাদের গণনায় সহস্র বৎসর।(৩২:৫) এমন কি যার হিসাব তোমাদের গণনায় পঞ্চাশ হাজার বৎসর।(৭০:৪)
কি সৃষ্টি করা কি অধিক কঠিন, মানুষ না আকাশমন্ডল- যা আমি সৃষ্টি করেছি। আমিই আকাশের চাঁদোয়া উঁচ্চে তুলেছি এবং তাকে সামঞ্জস্য করে সাঁজিয়েছি। আমি অন্ধকার রাত্রির পর প্রকাশ করেছি প্রভাতকে। আর আমি ভূমিকে বিস্তীর্ণ করেছি, সেখানে পর্বতমালাকে সুদৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছি এবং সেখান থেকে বের করে এনেছি সমুদ্র, তার উদ্ভিজ্জ, তোমাদের জন্যে খাদ্যসামগ্রী এবং তোমাদের পশুসমূহ।(৭৯:২৭-৩৩)
আমি গঠনাকৃতি দিয়েছি মানুষকে উৎক্ষিপ্ত সামান্য পরিমান তরল পদার্থ হতে, জোড়া করে-নর ও নারীরূপে।(৫৩:৪৫-৪৬) মূলত: আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। এরপর আমি ঐ শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপ দিয়েছি, অতঃপর ঐ জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে আমি অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর ঐ অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত্ত করে, অবশেষে তাকে এক নূতন রূপে দাঁড় করিয়েছি।..(২৩:১২-১৬)
আমি সৃষ্টি সম্পর্কে অমনোযোগী নই।(২৩:১৭)আমার সৃষ্টিতে কোন ত্রুটি তোমরা দেখতে পাবে না। দৃষ্টিকে পুনরায় নিক্ষেপ কর। কোন ফাঁক দেখতে পাও কি?(৬৭:৩) জমিনে বিচরণকারী এমন কোন জানোয়ার নেই, পাখাবিশিষ্ট উড়ন্ত এমন কোন-পাখি নেই,- হ্যাঁ, আমি অবহেলা করিনি কোন কিছুই।(৬:৩৮) আমার ক্ষমতা সে তো সবকিছুর উপরে বিদ্যমান আর আমার জ্ঞান সব জিনিসকেই পরিব্যপ্ত করে আছে।(৬৫:১২) পৃথিবী, তাতে আমি সকল সামগ্রী পয়দা করেছি-পুরোপুরি ভারসাম্য রক্ষা করে।(১৫:৪৫-৪৬) আর এমন কিছু নেই যার মজুদ আমার কাছে নেই। তবে নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া আমরা তা নিচে প্রেরণ করিনে।(১৫:২০)
পৃথিবীতে যাকিছু আছে, তা আমি সৃষ্টি করেছি। তদুপরি, আমি আসমানের প্রতিও মনোনিবেশ করেছি এবং সামঞ্জস্য করে সজ্জিত করেছি সপ্ত আসমানকে। আমি সমস্ত জিনিস সস্পর্কে পূর্ণজ্ঞানী।(২:২৯)
তোমরা কি উপরে, আসমানের প্রতি লক্ষ্য কর না, কিভাবে আমি তাকে বানিয়েছি এবং তাকে সাঁজিয়েছি? তাতে কোন ফাঁক বা ফাঁটল নেই।(৫০:৬) আমি তাকে সৃষ্টি করেছি ক্ষমতার বলে।-(৫১:৪৭) দেখ, জমিন কেমন পড়ে থাকে বিরান হয়ে- মৃতপ্রায়। অত:পর যখন আমি প্রেরণ করি বৃষ্টি তার উপরে-তা সতেজ হয় এবং বের করে আনে জোড়ায় জোড়ায় সূদৃশ্য সব উদ্ভিদ। তোমরা খাও আর তোমাদের পশুদেরকে চরাও।(২২:৫)
আমিই আকাশমন্ডলী, এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছি ছয়টি সময়কালে।(৭:৫৪) আমি সৃষ্টি করেছি আসমানসমূহ, পৃথিবী এবং এ দু‘য়ের মাঝখানে যা আছে-ছয়টি সময়কালে; এবং কোন ক্লান্তি স্পর্শ করতে পারেনি আমাকে।(৫০:৩৮)
দু’টি সময়কালের মধ্যে আমি সপ্ত আকাশকে নিয়মিত করেছিলাম।(৪১:১২)দু’টি সময়কালের মধ্যে পৃথিবীর সৃষ্টি।(৪১:৯) আর তিন চারটি সময়কালের মধ্যে সেখানকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়েছি।(৪১:১০)এসব সময়কালের হিসেব তোমাদের গণনায় সহস্র বৎসর।(৩২:৫) এমন কি যার হিসাব তোমাদের গণনায় পঞ্চাশ হাজার বৎসর।(৭০:৪)
কি সৃষ্টি করা কি অধিক কঠিন, মানুষ না আকাশমন্ডল- যা আমি সৃষ্টি করেছি। আমিই আকাশের চাঁদোয়া উঁচ্চে তুলেছি এবং তাকে সামঞ্জস্য করে সাঁজিয়েছি। আমি অন্ধকার রাত্রির পর প্রকাশ করেছি প্রভাতকে। আর আমি ভূমিকে বিস্তীর্ণ করেছি, সেখানে পর্বতমালাকে সুদৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছি এবং সেখান থেকে বের করে এনেছি সমুদ্র, তার উদ্ভিজ্জ, তোমাদের জন্যে খাদ্যসামগ্রী এবং তোমাদের পশুসমূহ।(৭৯:২৭-৩৩)
আমি গঠনাকৃতি দিয়েছি মানুষকে উৎক্ষিপ্ত সামান্য পরিমান তরল পদার্থ হতে, জোড়া করে-নর ও নারীরূপে।(৫৩:৪৫-৪৬) মূলত: আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। এরপর আমি ঐ শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপ দিয়েছি, অতঃপর ঐ জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে আমি অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর ঐ অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত্ত করে, অবশেষে তাকে এক নূতন রূপে দাঁড় করিয়েছি।..(২৩:১২-১৬)
আমি সৃষ্টি সম্পর্কে অমনোযোগী নই।(২৩:১৭)আমার সৃষ্টিতে কোন ত্রুটি তোমরা দেখতে পাবে না। দৃষ্টিকে পুনরায় নিক্ষেপ কর। কোন ফাঁক দেখতে পাও কি?(৬৭:৩) জমিনে বিচরণকারী এমন কোন জানোয়ার নেই, পাখাবিশিষ্ট উড়ন্ত এমন কোন-পাখি নেই,- হ্যাঁ, আমি অবহেলা করিনি কোন কিছুই।(৬:৩৮) আমার ক্ষমতা সে তো সবকিছুর উপরে বিদ্যমান আর আমার জ্ঞান সব জিনিসকেই পরিব্যপ্ত করে আছে।(৬৫:১২) পৃথিবী, তাতে আমি সকল সামগ্রী পয়দা করেছি-পুরোপুরি ভারসাম্য রক্ষা করে।(১৫:৪৫-৪৬) আর এমন কিছু নেই যার মজুদ আমার কাছে নেই। তবে নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া আমরা তা নিচে প্রেরণ করিনে।(১৫:২০)
পৃথিবীতে যাকিছু আছে, তা আমি সৃষ্টি করেছি। তদুপরি, আমি আসমানের প্রতিও মনোনিবেশ করেছি এবং সামঞ্জস্য করে সজ্জিত করেছি সপ্ত আসমানকে। আমি সমস্ত জিনিস সস্পর্কে পূর্ণজ্ঞানী।(২:২৯)
তোমরা কি উপরে, আসমানের প্রতি লক্ষ্য কর না, কিভাবে আমি তাকে বানিয়েছি এবং তাকে সাঁজিয়েছি? তাতে কোন ফাঁক বা ফাঁটল নেই।(৫০:৬) আমি তাকে সৃষ্টি করেছি ক্ষমতার বলে।-(৫১:৪৭) দেখ, জমিন কেমন পড়ে থাকে বিরান হয়ে- মৃতপ্রায়। অত:পর যখন আমি প্রেরণ করি বৃষ্টি তার উপরে-তা সতেজ হয় এবং বের করে আনে জোড়ায় জোড়ায় সূদৃশ্য সব উদ্ভিদ। তোমরা খাও আর তোমাদের পশুদেরকে চরাও।(২২:৫)
মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর ফলে এক গ্যালাক্সি, অন্যটার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে প্রতি নিয়ত। কোরআন জানিয়েছে- আকাশমন্ডলী আমি তাকে সৃষ্টি করেছি ক্ষমতার বলে। নিশ্চয়ই আমি তাকে সম্প্রসারিত করছি।- (৫১:৪৭) (The discovery in the early 20th century that galaxies are systematically redshifted suggested that the Universe is expanding, and the discovery of the cosmic microwave background radiation suggested that the Universe had a beginning. -স্টিফেন হকিং -এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম, পৃ. ১২৫)।
সমাপ্ত।
ছবি:
hdwallpapers, kabobfest.Wikipedia.
উৎস:
- Hawking, Stephen (1988). A Brief History of Time.
- Paul Copan; William Lane Craig (2004). Creation Out of Nothing: A Biblical, Philosophical, and Scientific Exploration
- Ellis, George F.R.; U. Kirchner; W.R. Stoeger (2004). "Multiverses and physical cosmology".
- Duco A. Schreuder, ( 2014). Vision and Visual Perception.
- Tegmark, Max. "The Mathematical Universe".
- Jim Holt (2012). Why Does the World Exist?.
- Simon Singh (2005). Big Bang: The Origin of the Universe.
- Gernet, J. (1993–1994). "Space and time: Science and religion in the encounter between China and Europe".
- Mark Isaak (ed.) (2005). "CI301: The Anthropic Principle". Index to Creationist Claims.
- Tegmark, Max (2003). J. D. Barrow; P.C.W. Davies; C.L. Harper, eds. "Parallel Universes".
- "Science and Ultimate Reality: from Quantum to Cosmos",
- Steven Weinberg. Dreams of a Final Theory: The Scientist's Search for the Ultimate Laws of Nature.
- R. Oerter (2006). The Theory of Almost Everything: The Standard Model, the Unsung Triumph of Modern Physics .
- P. Davies (1992). The New Physics: A Synthesis
- Livio, Mario (2001). The Accelerating Universe: Infinite Expansion, the Cosmological Constant, and the Beauty of the Cosmos
- Michio Kaku (2008). Physics of the Impossible: A Scientific Exploration into the World of Phasers, Force Fields, Teleportation, and Time Travel.
- Phil Berardelli (2010). "Galaxy Collisions Give Birth to Quasars"
- Overbye, Dennis (2003). "A 'Cosmic Jerk' That Reversed the Universe"
- Ālī, Ema Ākabara. Science in the Quran
- Nasr, Seyyed H. (1993). An Introduction to Islamic Cosmological Doctrines
- Neugebauer, Otto E. (1945). "The History of Ancient Astronomy Problems and Methods".
- Donald Wayne Viney (1985). "The Cosmological Argument". Charles Hartshorne and the Existence of God.
- Eliade, Mircea (1964). Myth and Reality (Religious Traditions of the World).
- Leonard, Scott A.; McClure, Michael (2004). Myth and Knowing: An Introduction to World Mythology
- বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান-মরিস বুখাইলি।
- হিস্ট্রি অব দা এন্সিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড- ফিওদর করোভকিন।
- Creation Myths of the World. Wikipedea.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন