৩ মার্চ, ২০১২

Abraha al-Ashram: আবিসিনীয় সম্রাট ও হস্তী বৎসর।


৫৭০ সি.ই-আরবদের নিকট হস্তী বৎসর হিসেবে পরিচিত। এই বৎসরের শুরুতেই ইয়েমেনের শাসক আবরাহা আল-আশরাম (Abraha al-Ashram) কা’বাগৃহ ধ্বংস করার জন্যে জাঁকজমকের সাথে একটি সুসজ্জিত হস্তী পৃষ্ঠে সমাসীন হয়ে এক বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে মক্কার অদূরে চলে এলেন।


প্রাচীন কা’বাগৃহ
আবরাহা আল-আশরাম, প্রকৃত নাম আবরাহা বিন আস সাবা আবু ইয়াকসুম। আল আশরাম অর্থ 'দ্বিখন্ডিত মুখাবয়র' আরিয়তের সঙ্গে এক দ্বন্দ্ব যুদ্ধে তিনি মুখে তরবারীর মারাত্মক আঘাত পান, যা তাকে এই উপাধি এনে দেয়। এই আরিয়ত ছিল তারই নিয়োগকৃত ইয়েমেনের গভর্ণর।

সম্রাট আবরাহা তার সেনাপতি আরিয়্যতকে ইয়েমেনের গভর্ণর নিয়োগ করেন, কারণ ধূ-নওয়াজের অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষার জন্যে নাজরানের খৃষ্টানগণ ইতিপূর্বে আবিসিনীয় খৃষ্টান সম্রাট আবরাহা আল-আশরামের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিল। ঐ সময় ধূ-নওয়াজ ইয়েমেনের শাসক ছিলেন।

যাহোক, An Abyssinian army under Aryat descended on Yemen, defeated and killed Dhu Nuwas, and occupied the land. Under orders from Abraha al-Ashram, a third of Yemeni women and children were captured and sent to Abyssinia to be sold as slaves. The Arabs who had embraced Judaism were massacred. In due course, Abraha succeeded Aryat as the Abyssinian Governor of Yemen.

মক্কার অদূরে তাঁবু ফেলে অবস্থান কালে আবরাহার এক ক্ষুদ্র বাহিনী মক্কাবাসীকে উত্তেজিত করতে বেশকিছু গবাদিপশু আটক করে। এইসব আটককৃত পশুর মধ্যে ২০০ উট ছিল আব্দুল মুত্তালিবের। তিনি তার একপাল উট আবরাহা বাহিনীর কবলে পড়েছে সংবাদ পেয়ে লুবাবাকে সঙ্গে নিয়ে আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

এদিকে আবরাহা তার একজন দূতকে কুরাইশদের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছিলেন এই সংবাদ দিয়ে যে, তিনি আবরাহা মক্কাবাসীর সঙ্গে যুদ্ধের অভিপ্রায়ে আগমন করেননি। তিনি কেবল কা'বাকে ধ্বংস করতে চান। কিন্তু যদি মক্কাবাসী তাকে প্রতিরোধের কোন চেষ্টা করে, তবে তাদের সকলকে সমূলে তিনি ধ্বংস করবেন- এ সুনিশ্চিত। এর সঙ্গে ছিল আবরাহার বিশাল সুসজ্জ্বিত বাহিনী এবং অস্ত্র-শস্ত্রের এক বিস্তৃত বর্ণনা।

আবরাহার সেনাবাহিনী বিপর্যস্ত। 
ঐ দূতের সঙ্গে আব্দুল মুত্তালিবের পথে দেখা হল। তখন ঐ দূত তাকে সঙ্গে করে নিয়ে এল আবরাহার কাছে। আবরাহা ভেবেছিলেন কুরাইশ গোত্র প্রধান কোন সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। সূতরাং তিনি মুত্তালিবের প্রার্থনা মঞ্জুর করলেন। অতঃপর আব্দুল মুত্তালিবকে তার সম্মুখে হাযির করা হলে তিনি বললেন, ‘ওহে আব্দুল মুত্তালিব! কি প্রস্তাব নিয়ে এসেছ তুমি আমার কাছে?'
আব্দুল মুত্তালিব বললেন, 'হে সম্রাট! আমার একপাল উট আপনার সেনাবাহিনীর কবলে পড়েছে, আমি সেগুলি নিয়ে যেতে আপনার অনুমতি প্রার্থনা করছি।’

তার প্রস্তাব শুনে আবরাহা ভীষণ কৌতুক বোধ করলেন। তিনি বললেন, ‘হে মুত্তালিব, কা’বাগৃহ, যা তোমাদের গৌরব ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক আমি তা ধ্বংস করতে যাচ্ছি, আর তুমি কিনা এসেছ সামান্য ক'টা উট ফিরিয়ে নিতে? আফসোস তোমার জন্যে।’
তিনি উত্তর করলেন, ‘উটের মালিক আমি আর তাই তা রক্ষা করতে এসেছি, আর কা’বাগৃহের মালিক আল্লাহ, তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁর গৃহ সম্পর্কে-তিনি তা রক্ষা করবেন না ধ্বংস হতে দেবেন।’
উত্তর শুনে আবরাহা হো হো করে হেসে ফেললেন, যদিও তিনি মুত্তালিবকে তার উটগুলো নিয়ে যেতে অনুমতি দিয়েছিলেন।

Having recovered his camels, 'Abdul-Muttalib withdrew with his associates to a mountain-top to await the event, but ere he retreated from Mecca he paid a visit to the Ka'ba, and, holding in his hand the great ring-knocker on the outer door, exclaimed:

"Lord, in Thee alone I trust against them!
Lord, repel them from Thine Holy Land!
'T is the Temple's foe who fights against Thee:
Save Thy town from his destroying hand!" -[EG Browne, A literary History of Persia]
  কা’বাগৃহের পবিত্রতা মক্কায় যে ধন-সম্পদের আকর্ষণ করত, তা নিজ শহরে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে আবরাহা সানাতে একটি উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে তিনি সেটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ হল না, কা’বা, কা’বাই রয়ে গেল। তাই তিনি কা’বাগৃহ ধ্বংসের সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। 

একবার এক বাণিজ্যিক কাফেলার একজন মক্কাবাসী তার তাঁবু ফেলেছিল আবরাহার উপাসনালয়টির পাশে। রাত্রে রান্নার সময় বাতাসে আগুনের ফুলকি উড়ে গিয়ে উপাসনালয়টিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভয়ে কাফেলাটি রাত্রিতেই সেইস্থান পরিত্যাগ করেছিল।

একজন মক্কাবাসী কর্তৃক উপাসনালয়টি অপবিত্র হওয়ায় আবরাহা মনোবাসনা পূরণের সুযোগ পেলেন। কালক্ষেপণ না করে এই আবিসিনীয়, ইয়েমেনের শাসক তার সেনাবাহিনী নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন। 
খানে আবরাহার সেনাবাহিনী বিপর্যস্ত হয়েছিল। 
অত:পর কাবা ধ্বংসের নিমিত্তে আবরাহা তার সেনাবাহিনী নিয়ে অতি প্রত্যুষে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। যখন এই বাহিনী মক্কার উপকন্ঠে এসে পৌঁছিল তখন সকাল, মেঘমুক্ত আকাশ। দূর থেকে এক সুবৃহৎ বাহিনীর মাঝে চলমান বিশাল প্রাণীটিকে দেখে আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা হতবাক হয়ে গেল। বাহিনীটি অগ্রসর হলে নারী ও শিশুসহ কুরাইশরা নিকটবর্তী পর্বতে আশ্রয় গ্রহণ করল এবং সেখান থেকেই ঘটনা প্রবাহের দিকে নজর রাখল। আর তারা মনে মনে আশা করছিল দেবদেবীরা তাদের আবাসগৃহ ও কা’বাকে রক্ষা করবে।

দেখতে দেখতে ছোট ছোট আবাবিল পাখীতে সারা আকাশ ছেয়ে গেল। এসব পাখি হতভাগ্য সৈন্যদের উপর ছোট ছোট পাথর কণা নিক্ষেপ করল। সেগুলি মানুষ ও অশ্বের বর্ম ভেদ করে সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ ভীতির সঞ্চার করেছিল। এসময়ে আকাশের দ্বারও খুলে গিয়েছিল। ফলে ভয়াবহ বর্ষণ ও পাথর কণার আঘাতে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়েছিল। আবরাহা ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় সানাতে পালিয়ে গেলেন এবং সেখানে পৌঁছানোর অল্পকাল পরেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন। 

এ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতসমূহ-

 ‘তোমার প্রতিপালক হস্তীবাহিনীর প্রতি কি করেছিলেন? 
তিনি কি ওদেরকে ব্যর্থ করে দেননি? 
ওদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে 
আবাবিল পাখী পাঠিয়েছিলেন, 
যারা ওদের উপর কঙ্কর ফেলেছিল। 
 তারপর তিনি ওদেরকে (জন্তু জানোয়ারের) 
      খাওয়া ভূসির মত করে ফেলেন।’(১০৫:১-৫)

প্রথমদিককার ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক তার “সিরাত রসূল আল্লাহ” পুস্তকে উল্লেখ করেছেন যে, যে বৎসর আবরাহা কা’বা আক্রমণ করেছিলেন সে বৎসর মক্কাতে হাম ও স্মল পক্সের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছিল, কিন্তু তিনি উল্লেখ করেননি কিভাবে আবরাহা বিপর্যস্ত ও বিতাড়িত হয়েছিল। সিরা অনুসারে, আবরাহা যখন ফিরে যাচ্ছিল, তখন যাত্রাপথে তার বাহিনীর লোকেরা রাস্তার পাশের প্রায় প্রতিটি পানি জমে থাকার গর্তে একের পর এক করুণ ও দূর্দশাগ্রস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিল। আবরাহা নিজেও ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। তার লোকেরা যখন তাকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তার হাত ও পায়ের আঙ্গুল একটার পর একটা খসে পড়েছিল এবং সেখান থেকে দূর্গন্ধযুক্ত পুঁজ ও রক্ত বেরিয়ে আসছিল। অত:পর যখন তারা তাকে সানাতে নিয়ে পৌঁছেছিল, তখন সে বাক ও চলৎশক্তিহীন শিশুর মত হয়ে গিয়েছিল। They allege that as he died his heart burst from his body. Deserters from the army, laborers and camp-followers in Mecca remained in Mecca and became workers and shepherds for the population.” 

The description hardly seems like that of small pox in which there can be pus and pustules but usually fingers do not fall off. Secondly, it seems that the deserters from Abraha’s army did not suffer the same fate, which leads one to ask why decease would affect some and not others. 

Ishaq further mentions several poems that were written around the same time describing Abraha’s defeat. In one of these poems, Abu Qais b. al-Aslat al-Ansari wrote that “God sent a wind bringing pebbles from above them.” He also wrote that “When the help of the Lord of the Throne reached you, His armies repulsed them, pelting them and covering them with dust.”

Another poet Abdullah b. Qais al-Ruqqayat wrote, “Birds with pebbles hovered over them, so that they were as though they had been stoned.” 

Now, it is possible that a flock of birds accompanied and flew over a sandstorm, which is essentially a “blanket of wind-driven sand with an upper surface sometimes many feet (meters) above ground level.” That would explain the Quranic verses and the poems from that era perfectly.

When Abraha died, his son Yaksum became king of the Abyssinian's -[Tabari, Annals, vol.-1, page-945]. Himyar and the tribes of the Yemen were humiliated under the heel of the  Abyssinian's. They took their women and killed their men and seized their young men to act as interpreters. When Yaksum ibn Abraha died his brother Masruq ibn Abraha reigned over the Abyssinian's in the Yemen.-[ibn Ishaq, 1955, page-31].

সমাপ্ত।
ছবি: islamicchannels, islamicencyclopedia, livreislam.forumactif.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Moses: কোরাণিক ক্যানভাসে নবী মূসা।

Abu Hena Mostafa Kamal  01 May, 2017 মি সরের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ফেরাউন। হঠাৎ করে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। কিন্তু তিনি কোন উত্তরাধিকারী ন...