ইউরোপের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত বলকান উপদ্বীপ। এই উপদ্বীপের দক্ষিণে ঈজিয়ান সাগর বিধৌত ছোট দেশ -গ্রীস। গ্রীস পাহাড়ী দেশ; আর এই পাহাড়গুলো অত্যন্ত খাঁড়া এবং শৈল। প্রস্তরময় পর্বতের ঢালু অঞ্চলে ঝোপঝাড় এবং বিরল তৃণাদি জন্মায়। কিন্তু সমতল ভূমির জমি উর্বর। গ্রীসে তামা, লোহা, রূপা ও মর্মর পাথরের খনি আছে।
প্রাচীন গ্রীস। |
ভূ-প্রকৃতিই গ্রীস (Greece) কে তিন ভাগে বিভক্ত করেছে; উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ গ্রীস। উপসাগর মধ্য গ্রীসকে দক্ষিণ গ্রীস থেকে প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে; অতি সংকীর্ণ ভূ-ভাগ দ্বারা এই দুই অংশ যুক্ত। আর উত্তর ও মধ্য গ্রীসের মধ্যে প্রাচীর স্বরূপ দাঁড়িয়ে আছে পর্বতমালা। কেবলমাত্র উপকূল অঞ্চলে, পাহাড় ও সাগরের মাঝখানে অবস্থিত সংকীর্ণ গিরিপথ ছিল এই দুই অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতের একমাত্র পথ।
জিউস। |
পোসেইদোন। |
সূর্যদেব। |
গ্রীকরা মনে করত যে, মেঘতাড়ন জিউসের ইচ্ছায় পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত ঘটে, অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। যে মানুষ ও অন্যান্য দেবতারা তাকে রাগিয়ে দেয়, শক্তিশালী দেব জিউস স্বর্ণময় বিদ্যুৎবাণে তাদের আঘাত করে।
স্যতিরোস। |
অরণ্যের দেবতাদের বলা হত স্যতিরোস এবং তাদের কল্পণা করা হত পশমাবৃত ছাগলের পা সম্বলিত মনুষ্যরূপে। গ্রীক মানসে ঝর্ণার দেবী কল্পিত হয়েছে তরুণীরূপে, নাম নিম্ফি।
গ্রীকরা আরও মনে করত অর্থনীতির প্রতিটি শাখায় যথা, কৃষিকাজ, পশুপালন, শিকার, তন্তুবায় বৃত্তি ও অন্যান্য যাবতীয় হস্তশিল্প রক্ষাকারী দেবদেবী রয়েছে। শুরা উৎপাদনের দেবতার নাম ছিল দিওনিসিউস, আঙ্গুরের চাষ ও মদ্য প্রস্তুত করার বিদ্যা মানুষকে সে শিখিয়েছে। এ কারণে বসন্তকালে আঙ্গুর ক্ষেতে কাজ আরম্ভ করার পূর্বে এবং ডিসেম্বরে পক্ক আঙ্গুর থেকে টাটকা মদ তৈরীর পর এই দেবতার সম্মানে উৎসবের আয়োজন করা হত।
দিওনিসিউস। |
ব্যবসা বাণিজ্য বিকাশের সাথে সাথে উদ্ভূত হল রক্ষক দেব হের্মিস। হের্মিস জিউসের বিভিন্ন আদেশ পালন করত। এই জন্যে তাকে প্রায়শ: এক শহর থেকে আরেক শহরে উড়ে যেতে হত। তাই পাখাধারী পাদুকা পায়ে তাকে কল্পণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে কলাশাস্ত্রের দেবতা হল অ্যাপোলো। নৃত্য, সংগীত, কাব্য, ইতিহাস ইত্যাদি বিদ্যার ধারিক দেবীদল তাকে সর্বদা অনুগমন করে।
গ্রীকরা আরও ধারণা করত প্রধান দেবদেবী তথা-জিউস, অ্যাপোলো ও অন্যান্যরা গ্রীসের সবচেয়ে উঁচু অলিম্পীয় পর্বতে বাস করে এবং তাদের জীবনযাত্রা সম্ভ্রান্ত বংশীয় লোকজনের অনুরূপ। আর অলিম্পীয় পর্বতে বাস করার কারণে তাদেরকে তারা অলিম্পীয় দেবকূল বলত।
হের্মিস। |
হেফেন্তুস। |
অ্যাপোলো। |
হারকিউলিস তখন ওক গাছ কেটে বিশাল এক লগুড় তৈরী করল। এই লগুড় এত ভারী ছিল যে, বিশজন লোকেও তা ওঠাতে পারত না। আর এই লগুড় নিয়ে হারকিউলিস দু:সাহসিকভাবে সিংহের গুহায় প্রবেশ করল। সিংহ তার উপর ঝাপিয়ে পড়লে সে লগুড় দিয়ে তাকে আঘাত করে, তারপর দু‘হাতে গলা টিপে ধরে সেটিকে হত্যা করে। পরবর্তীতে হারকিউলিস ঐ সিংহের চামড়া দিয়ে নিজের জন্যে বর্ম ও শিরস্ত্রাণ তৈরী করে নিয়েছিল।
হারকিউলিস হাইদ্রার সঙ্গে যুদ্ধেরত। |
এ্যাটলাস মহাকাশ ধরে রেখেছে। |
আবার এক কাহিনীতে আছে- গ্রীকেরা মনে করত বহুদূর পশ্চিমে, যেখানে আকাশ মাটিতে গিয়ে মিশেছে এবং শক্তিশালী মহাবীর এ্যাটলাস বা আতলান্তোস (এই মহাবীরের নামানুসারে আটলান্টিক মহাসাগরের নামকরণ করা হয়েছে) পৃথিবীর উপর অর্ধবৃত্তকার ছাদ স্বরূপ বিশাল মহাকাশ নিজের কাঁধের উপর ধরে রেখেছে, সেখানে সমুদ্রোপকূলের এক উদ্যানে স্বর্ণ আপেল ফলে। হারকিউলিস ঐ স্বর্ণ আপেলের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল।দীর্ঘপথ অতিক্রম করে সে অবশেষে সেখানে পৌঁছেছিল।
জেসোন ও মিদিয়া। |
বীর জেসোন ও তার বন্ধুদের স্বর্ণপশমী মেষচর্মের জন্যে অভিযান নিয়ে রচিত গ্রীক পুরাণের কাহিনী ছিল এমন-ককেশাস পার্বত্য অঞ্চলে কৃষ্ণসাগরীয় উপকূলের কোন একস্থানে অরণ্যের মধ্যে একটা স্বর্ণ পশমী মেষচর্ম ঝুলতো। মেষচর্মটির মালিক ছিলেন ঐ স্থানের এক রাজা। ঐ রাজা এক ড্রাগণকে ঐ মেষচর্মের পাহারায় নিয়োজিত করেন। এই ড্রাগন সদা জাগ্রত থেকে তা পাহারা দিত।
গ্রীকের কিছু সাহসী বীরপুরুষ একত্রিত হয়ে স্বর্ণপশমী ঐ মেষচর্মটি পাবার উদ্দেশ্যে বিপদজনক দূরদেশে পাড়ি জমায়। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয় দুঃসাহসী যুবক জেসোন। আর সুদক্ষ কারিগর আর্গ তাদের ঐ অভিযানের জন্যে একটা দাঁড়টানা পাল তোলা কাঠের জাহাজ তৈরী করে দেয়। তার নামানুসারে জাহাজের নামকরণ হয় আর্গো।
স্বর্ণ মেষচর্মের পাহারায় ড্রাগন। |
বহুদিন ধরে অজানা রহস্যেভরা সমুদ্রে পাড়ি দিতে থাকে অভিযাত্রীরা। সাগরাবৃত বিভিন্ন শৈল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয়; কোন কোন স্থানে শৈল্য বিভক্ত গিরিখাদ অতি সংকীর্ণ, কোথাও বা তা আবার পরস্পর সংলগ্ন ছিল। এসব কারণে জাহাজ কোথাও ভয়ঙ্কর শব্দে সজোরে শিলার উপর ধাক্কা খেত, কোথাও সংকীর্ণ গিরিখাত কোনরকমে পার হত তারা, আবার কোথাও ডুবো পাহাড় জাহাজের হালের নিম্নতম কাঠকে ছুঁয়ে যেত। আর সকল ক্ষেত্রে অল্পের জন্যে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেত তারা।
দু‘টো ষাঁড়ের সঙ্গে লড়াইরত জেসোন। |
জেসোন বলল, ‘কি সেই পরীক্ষা।’
রাজা বললেন, ‘আমার পোষা দু‘টো ষাঁড়ের সঙ্গে তোমাকে লড়তে হবে এবং শক্তির লড়াইয়ে সেগুলোকে পরাজিত করতে হবে।’
রাজার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল জেসোন কৃতকার্য হতে পারবে না। কেননা তার ঐ ষাঁড় দু‘টো ছিল ভয়ঙ্কর হিংস্র, যাদের নিঃশ্বাসে আগুন বের হত।
জেসোন ষাঁড় দু‘টির সঙ্গে লড়তে রাজী হল। ভিনদেশী যুবক জেসোনের দুঃসাহস দেখে রাজকন্যা মিদিয়া অনুপ্রাণিত হল এবং তাকে সাহায্য করতে চাইল। সুতরাং সে তাকে গোপনে তার শরীরে মাখার জন্যে এক জাদুকরী মলম দিল। ঐ মলম মাখার পর জেসোন অসাধারণ শক্তি অর্জন করল; তার পদযুগল তাম্র নির্মিত স্তম্ভের ন্যায় সূদৃঢ় হল এবং হস্তদ্বয় সাঁড়াশীর ন্যায় সুকঠিন হয়ে গেল।
বপনকরা দাঁত থেকে প্রথমে অন্তহীনভাবে মাটি ফুঁড়ে বর্শা এবং শিরস্ত্রাণের অগ্রভাগ বেরিয়ে আসতে লাগল, তারপর বেরিয়ে এল তামার বর্ম পরিহিত এক বিরাট সেনাবাহিনী। আর সমগ্র বাহিনী ভয়াল বিক্রমে জেসোনকে আক্রমণ করে বসল। তখন জেসোন একটা পাথর ছুঁড়ে সারিবদ্ধ সৈন্যদলের মাঝে ফেলে দিলে তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া মারামারি শুরু করে দিল। এই অবসরে জেসোন তার তরবারীর সাহায্যে একে একে সমস্ত সৈন্য হত্যা করল।
জেসোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও রাজা তাকে অঙ্গীকার মত স্বর্ণপশমী মেষচর্ম দিতে অস্বীকার করল। তখন রাজকন্যা মিদিয়া সাহায্য করতে এগিয়ে এল। সে যাদু দ্বারা প্রহরারত ড্রাগনকে ঘুম পাড়িয়ে দিলে জেসোন ঐ মেষচর্ম চুরি করে নিয়ে দ্রুত তার জাহাজে আরোহণ করে স্বদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সম্রাট এই চুরির বিষয় জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত সৈন্যবাহিনী জেসোনের পিছনে লেলিয়ে দেয়। জেসোন ও তার সঙ্গীরা তাদের হাত থেকে বহু কষ্টে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে গ্রীসে ফিরে আসে।
ইলিয়াদ |
ট্রয় বা ইলিওন শহরের নামানুসারে ‘ইলিয়াদ’এবং ট্রয় অবরোধকারী গ্রীক সেনাপতিদের একজন ওডিসিউসের নামানুসারে ‘ওডিসি’ মহাকাব্যের নামকরণ করা হয়েছে। ইলিয়াদ ট্রয় অবরোধের দশম বৎসরের কাহিনী অবলম্বণে এবং‘ওডিসি’সেনাপতি ওডিসিউস ও তার অধীনস্ত যোদ্ধাদের যুদ্ধ শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তণের কাহিনী অবলম্বণে রচিত হয়েছে।
ইলিয়াদ: এশিয়া মাইনরের সমুদ্রোপকূলীয় উঁচু এক টিলার উপরে ট্রয় নগরী অবস্থিত ছিল। খ্রী:পূ: ১২০০ সালের কোন একসময়ে গ্রীকরা এই ট্রয়ে অভিযান করে। এই অভিযানে গ্রীকের বিভিন্ন উপজাতি স্ব-স্ব রাজ্যাধিপতির অধীনে অংশগ্রহণ করে। এইসব দলপতিদের অধীনস্ত সেনাদলে সাধারণ যোদ্ধারা ছিল পদাতিক; যাদের পরিধানে ছিল ক্যম্বিসের তৈরী বর্ম আর হাতিয়ার ছিল শুধু পাথর ও বর্শা। দলপতিদের ছিল অশ্ববাহিত যুদ্ধরথ। তাদের পরিধেয় ছিল তাম্র নির্মিত বর্ম আর অস্ত্র হিসেবে তাদের ছিল বর্শা ও ব্রোঞ্জের তৈরী তরবারী।
ট্রয় নগরী। |
সুদীর্ঘকাল ধরে ট্রয় নগরীর ব্যর্থ অবরোধের ফলে গ্রীক যোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। তখন সেনাবাহিনীকে উদীপ্ত করতে নেতৃবর্গ এক সভা আহবান করল। গ্রীক শিবিরের ময়দানে চঞ্চল সেনাদল মহা হৈ চৈ করে সমবেত হল। সভায় এক পর্যায়ে থের্সিতেস নামক জনৈক সাধারণ যোদ্ধা নির্ভয়ে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এই বলে অভিযোগ করল যে, লুটের মাল তারাই সব আত্মসাৎ করেছে। সৈন্যবাহিনীকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তণের আহবান জানায় সে। এসময় সেনাপতিদের একজন-ওডিসিউস-তখন থের্সিতেসকে নির্মমভাবে প্রহার করে তাকে নিরস্ত হতে বাধ্য করেন। এই ঘটনার ফলে ট্রয় অবরোধ চালিয়ে যেতে যোদ্ধাদের সম্মত করাতে সেনাপতিদের খুবই বেগ পেতে হয়েছিল।
আখিলেস। |
কথিত আছে বিভিন্ন দেব-দেবীও এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছিল। তাদের একাংশ গ্রীকদের পক্ষ নিয়েছিল, আরেক অংশ যোগ দিয়েছিল ট্রয়বাসীদের পক্ষে। যুদ্ধের দেবী এথেনা গ্রীকদের পক্ষ নেয়। আর দেব কর্মকার হেফেন্তুস আখিলেসের বর্ম নির্মাণ করে দিয়েছিল।
গ্রীক ও ট্রয়বাসীদের মধ্যে পুন:রায় যুদ্ধ শুরু হল। এই যুদ্ধ শুরু হল মূলত: হেক্টর ও আখিলেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে। গ্রীক পক্ষ সহায়তাকারী দেবী এথেনা হেক্টরের ভ্রাতার রূপ ধারণ করে ধূর্ততার সাথে হেক্টরকে আখিলেসের সাথে যুদ্ধে প্ররাচিত করে এবং সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।
ট্রোজান হর্স নগরীতে টেনে নেয়া হচ্ছে। |
এই যুদ্ধে আখিলেস বর্শা বিদ্ধ করে হেক্টরকে হত্যা করে। তারপর ট্রয়ের ঐ নিহত বীরকে রথে রেঁধে নিয়ে সে গ্রীক শিবির পানে ছুটে যায়।
ট্রয় নগরীতে ট্রোজান হর্স। |
সাইক্লোপ্স। |
পথ হারিয়ে ফেলার পর গ্রীকগণ এক দ্বীপে গিয়ে নোঙ্গর ফেলল। ঐ দ্বীপে বাস করত ভয়ঙ্কর একদল দৈত্য। তারা গ্রীকদের দেখতে পেয়ে সমবেত ভাবে তাদেরকে আক্রমণ করল। গ্রীকরা দ্রুত জাহাজে উঠে জাহাজ ছেড়ে দিল। তখন দৈত্যগণ বড় বড় পাথর এনে তা ছুঁড়ে মারতে লাগল গ্রীক নৌবহরকে লক্ষ্য করে। তাদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে বারটি জাহাজের এগারটিই ধ্বংস হয়ে যায়। শুধুমাত্র ওডিসিউসের জাহাজটি দূর সমুদ্রে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
যে সব জাহাজ নিক্ষিপ্ত পাথরের আঘাতে ধ্বংস হয়েছিল, তার আরোহীদের কিছু ডুবে মারা গেল। আর অন্যেরা যারা সাঁতরে কূলের দিকে এল, তাদেরকে দৈত্যরা ধরে ফেলল। অত:পর তারা ধৃত গ্রীকদের কিছুকে খেয়ে ফেলল এবং বাকীদের হত্যা করল।
ওডিসিউস ও তার সঙ্গীরা আবারও একটা দ্বীপে গিয়ে উপস্থিত হল। এই দ্বীপেও থাকত সাইক্লোপস নামের একদল দৈত্য, তাদের কপালের মাঝখানে একটা মাত্র চোখ। তাদের পেশা ছিল পশু পালন। ওডিসিউস ও তার সঙ্গীরা এক সাইক্লোপ্সের গুহায় প্রবেশ করে। গুহার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পনিরের চাঁই ও ভাড় ভর্ত্তি দই ছিল। তারা সেগুলি ভরপুর খেয়ে সেখানেই আরামে ঘুমিয়ে পড়ে।
ওডিসিউস ও তার সঙ্গীরা মিলে তীক্ষ্ণমুখ এক দন্ড দিয়ে |
এদিকে পশুর হাঁক ডাকে ওডিসিউস ও তার সঙ্গীদের ঘুম ভাঙ্গল। তারা পশুপাল দেখল, তারপর যখন ভয়ঙ্কর দৈত্যকে দেখল এবং দেখল গুহামুখ বন্ধ অতিকায় এক পাথর দিয়ে, তখন তাদের আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। অন্যদিকে দৈত্য তাদেরকে দেখতে পেয়ে তখনই দু‘জনকে ধরে জ্যান্ত খেয়ে ফেলল।পরদিন দৈত্য আরও চারজনকে খায়। তখন ওডিসিউস তাকে কৌশলে মদ পান করাল। মদ খেয়ে দৈত্য যখন ঘুমিয়ে পড়ল তখন ওডিসিউস ও তার সঙ্গীরা মিলে তীক্ষ্ণমুখ এক দন্ড দিয়ে দৈত্যের চোখে আঘাত করে।
ওডিসিউসের জাহাজ সিরেনদের কবলে। |
ওডিসিউসই একমাত্র ব্যক্তি যে সিরেনদের গান স্বকর্নে শুনতে পেয়েও মৃত্যুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছিল।
ওডিসিউসের ট্রয় থেকে ইথাকায় ভ্রমণ পথের রুট ম্যাপ। |
দশ বৎসর ধরে বিভিন্নস্থান ভ্রমণের পর অবশেষে ওডিসিউস তার জন্মভূমি ইথাকায় গিয়ে পৌঁছায়। প্রথমেই যার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে সে শুকর চারণরত এক দাস। এই দাস জন্মেছিল এক স্বাধীন পরিবারে, কিন্তু তার বাল্যকালে ফিনিসীয়রা তাকে চুরি করে ইথাকায় নিয়ে বিক্রি করে দেয়।
এদিকে ওডিসিউসের অনুপস্থিতিতে তার প্রাসাদ ও সম্পত্তি অন্যান্য সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ ভোগদখল করছিল, তাই ভিক্ষুক বেশে সে নিজের প্রাসাদে প্রবেশ করে। তারপর অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের সকলকে হত্যা করে সে ইথাকায় আবার নিজের শাসন কায়েম করে।
এদিকে ওডিসিউসের অনুপস্থিতিতে তার প্রাসাদ ও সম্পত্তি অন্যান্য সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ ভোগদখল করছিল, তাই ভিক্ষুক বেশে সে নিজের প্রাসাদে প্রবেশ করে। তারপর অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের সকলকে হত্যা করে সে ইথাকায় আবার নিজের শাসন কায়েম করে।
সমাপ্ত।
উৎস: হিস্ট্রি অব দা এন্সিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড -ফিওদর করোভকিন। হিস্ট্রি অব গ্রীস -গ্রোট। এন্সিয়েন্ট মনার্কী -শিলথন।
উৎস: হিস্ট্রি অব দা এন্সিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড -ফিওদর করোভকিন। হিস্ট্রি অব গ্রীস -গ্রোট। এন্সিয়েন্ট মনার্কী -শিলথন।
ছবি: Wikipedia, geekechoes.blogspot, bo.infn.it, creativeuncut, macedoniansincanada, myths101.tumblr, genzoman.deviantart, bestmyth, kusadasi.tv, irasov, npr, dukeart, ancientgreece, tellmeomuse.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন