মক্কাতে কা‘বা এবং বায়তুল মুকাদ্দাসকে কেবলা (Qibla) করে নামাজ পড়া হত। কিন্তু হিযরতের পর বায়তুল মুকাদ্দাসকেই কেবলা করা হয়েছিল। এতে ইহুদিরা বলতে শুরু করল, ‘দেখ! মুহম্মদ আমাদের দ্বীন স্বীকার করে না, অথচ আমাদের কেবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ছে।’
আর মক্কাতে এখবর পৌঁছিলে কুরাইশরা বলতে লাগল, ‘দেখ! মুহম্মদ কি সব বিষ্ময়কর কর্মকান্ড করছে। সে নিজেকে ইব্রাহিমের অনুসারী হবার দাবী করে, অথচ তার কেবলা মানছে না। তার কাজে ও কথায় কোন মিল নেই।’
বায়তুল মুকাদ্দাস, জেরুজালেম। |
‘নিশ্চয়ই আমি তোমাকে বার বার উর্দ্ধদিকে মুখ তুলে তাকাতে দেখেছি। সেজন্যে আমি তোমাকে এমন একটি কেবলার দিকে মুখ ফেরাব, যাতে তুমি খুশী হবে। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে তোমার মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন যখন প্রার্থনা করবে, তার দিকে মুখ ফেরাবে। যারা আহলে কিতাবে, তারা অবশ্যই জানে যে এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম থেকে যা তারা করে।(২:১৪৫)
আর যে স্থান থেকে তুমি বের হও, নিজের মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও- নিঃসন্দেহে এটাই হল তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাস্তব সত্য। বস্তুতঃ তোমার পালনকর্তা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবহিত নন।(২:১৪৯)
আর তোমরা যেখান থেকে বেরিয়ে আস এবং যেখানেই অবস্থান কর সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে করে মানুষের জন্যে তোমাদের সাথে ঝগড়া করার অবকাশ না থাকে। অবম্য যারা অবিবেচক তাদের কথা আলাদা। কাজেই তাদের আপত্তিতে ভীত হইও না।(২:১৫০)
আল আকসার সম্মুখ প্রাঙ্গন। |
কেউ কেউ বলল, ‘কিসে মুসলমানদের ফিরিয়ে দিল তাদের ঐ কেবলা থেকে, যার উপর তারা ছিল?’
কেউ কেউ বলল, ‘তাহলে যারা জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে কেবলা করে এবাদত করেছে এবং ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে তাদের কি হবে?
তাদের এই সমস্ত কথাবার্তার জবাবে আল্লাহ জানালেন যে, পূর্ব পশ্চিম তো আল্লাহরই। তাছাড়া তিনি মুহম্মদ যে কেবলার উপর ছিলেন তাকে এইজন্যে কেবলা করেছিলেন যাতে এটা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুগামী থাকে এবং কে পিঠটান দেয়। তিনি এমন নন যে কারও ঈমান নষ্ট করে দেবেন। তিনি তো মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, করুণাময়।
মসজিদ ই কিবলাতাইন বা দু'কিবলার মসজিদ। |
তুমি যে কেবলার উপর ছিলে, আমি তাকে এজন্যেই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুগামী থাকে আর কে পিঠটান দেয়। নিশ্চয় এটা কঠোর বিষয়, কিন্তু তাদের জন্যে নয়, যাদেরকে আল্লাহ পথপ্রদর্শণ করেছেন। আল্লাহ এমন নন যে তোমাদের ঈমান নষ্ট করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, করুণাময়। (২:১৪২,১৪৪)
সমাপ্ত।
সমাপ্ত।
ছবি: atlastours.net, seetheholyland.net, islamiclandmarks.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন