Satan লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Satan লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

১৩ মার্চ, ২০১২

Iblis: নায়ক থেকে খলনায়ক।

বিশ্বজগৎ সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ ফেরেস্তাদেরকে এবং মানব সৃষ্টির পূর্বে জ্বিণজাতিকে সৃষ্টি করেন। জ্বিণ জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছিল লু এর আগুণ থেকে। আর তাদেরকে সৃষ্টির পর আমাদের মহাবিশ্বে বসবাত করতে দেয়া হয়। অত:পর  এ জাতি সেখানে জীব-জন্তু ও পশু পাখীর সাথে নানান অনাচারে দানবের জন্ম দিতে থাকে। আর যখন তারা তাদের অনাচার দিয়ে পুরো ভূবন ভরিয়ে তুলল, তখন খোদার নির্দেশে দুষ্টুদেরকে ধ্বংস করতে শুরু করেন ফেরেস্তাগণ এবং ঐসময় জ্বিণজাতি ছড়িয়ে পড়ে এ মহাবিশ্বের সর্বত্র।

যা হোক, ঐ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে যারা রক্ষা পেয়েছিল, তাদেরই একজন আযাযিল (Azazyl)। তার পিতার নাম ছিল খবীশ এবং মাতা নিবলীস। ছোটবেলা থেকেই সে অতিশয় মেধাবী এবং স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন ছিল। যা সে একবার দেখত বা শুনত, তা চিরদিনের জন্যে মনে রাখতে পারত। এই আযাযিলই খোদার ক্ষমা থেকে বেরিয়ে গিয়ে হয়ে যায় ইবলিস (Iblis)। The word Iblis means "to despair" and Azazel despaired of the Mercy of God, thus earning him that title.

মুনসূর আল হাল্লাজের মতে- The name of Iblis was derived from his first name, Azazyl in which were changed: the ‘ayn representing the amplitude of his endeavor, the zay, representing the growing frequency of his visits, the alif - his way in His rank, the second zay - his asceticism in His rank, and the ya- his wandering walk to his agony, and lam -his obstinacy in his pain -(Kitab at-tawasin by Mansur al-Hallaj).

আযাযিল দুনিয়াতে এক হাজার বৎসর খোদার এবাদত করল। এবাদতে তার একাগ্রতা ও নিষ্ঠা দেখে ফেরেস্তাগণ অবাক হয়। আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে তাকে জ্বিণজাতির নেতা করে দেন। এভাবে আযাযিল তার ৭০ হাজার বৎসর এবাদতের দ্বারা অনেকগুলি গুণবোধক নাম যেমন- ‘খাশে’,‘আবেদ’, ‘অলী’,‘সালেহ’ ইত্যাদি অর্জন করে। আর এসব গুনবোধক উপাধির সবগুলোই ফেরেস্তাদের দেয়া। এভাবে একসময় সে উর্দ্ধ আকাশে অবাধ বিচরণের সুযোগ পায়। তার এতসব অর্জনের মূলে ছিল তার নিরলস শ্রম ও নিষ্ঠা। দিনের একাংশ সে দুনিয়ার জ্বিণদের সৎপথ প্রদর্শণে ব্যয় করে অবশিষ্ট সময়টা এবাদতেই অতিবাহিত করত।

যা হোক, দুনিয়া জ্বিণজাতি মুক্ত হলে খোদা মানব সৃষ্টির পরিকল্পণা করেন। সুতরাং তিনি ফেরেস্তাদেরকে (কেবলমাত্র অদৃশ্যলোকের) সমবেত হতে নির্দেশ দিলেন। তারা তৎক্ষণাৎ সমবেত হল। কিন্তু তারা বুঝতে পারছিল না কেন এই সমাবেশ, তাই পরস্পর ফিসফিস কথাবার্তা (-৩৮:৬১) ও আলোচনা করতে লাগল। অতঃপর আল্লাহ সমবেত ফেরেস্তাদেরকে তাঁর পরিকল্পণার কথা জানালেন। তিনি বললেন, ‘আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।’--১৫:২৮-

ইতিপূর্বে ফেরেস্তাগণ জ্বীন জাতির অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল। সুতরাং তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে? আমরাই তো রয়েছি আপনার পবিত্র মহিমা ঘোষণা করার জন্যে।’ 
তিনি বললেন, ‘আমি যা জানি তোমরা তো তা জান না। সুতরাং অমি ছাঁচে ঢালা শুকনো মাটি হতে মানুষ সৃষ্টি করছি, যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তার মধ্যে আমার রূহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তাকে সিজদা করবে।’-১৫:২৮-২৯.

অত:পর আল্লাহ ফেরেস্তাদেরকে মাটি সংগ্রহের জন্যে নির্দেশ দিলেন। প্রধান ফেরেস্তাদের মধ্যে জিব্রাইল, মিকাইল ও ইস্রাফিল ব্যর্থ হল, কেননা জমিন তাদেরকে খোদার কসম দিয়ে মাটি নিতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু অাজ্রাইল গিয়ে মটি সংগ্রহ করে নিয়ে এল। অত:পর আল্লাহ প্রথম মানব আদমকে ঐ মাটি থেকে সৃষ্টি করলেন। বুক অব চামিস জানায়- 

The four most exalted angels, Gabriel, Michael, Israfil, and Israil, were commanded to bring from the four corners of the earth the dust out of which Allah formed the body of Adam, all save the head and heart. For these He employed exclusively the sacred earth of Mecca and Medina, from the very spots on which, in later times, the holy Kaaba and the sepulchre of Mohammed were erected.--(Book of Chamis, by Husein ibn Muhammed.)

আদমের শরীর যখন সুঠাম হল, তখন আল্লাহ ফেরেস্তাদেরকে নির্দেশ দিলেন, ‘তার রূহ আন।’-ইতিপূর্বে তিনি আদমের রূহ সৃষ্টি করে তা ফেরেস্তাদের তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন।
ফেরেস্তাগণ একটি নূরের আধারে ঐ রূহ এনে আদমের শির পার্শ্বে রাখল। আল্লাহ রূহকে আদেশ করলেন, ‘এই দেহে প্রবেশ কর।’

এই আদেশের পর রূহ কয়েকবার আদমের দেহের চাতুর্দিকে প্রদক্ষিণ শেষে নাসিকা পথে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করল। তৎক্ষণাৎ আদম চোখ মেলে চাইল এবং হাঁচি দিয়ে উঠে বসতে চেষ্টা করল। ফেরেস্তাগণ তা দেখে বলল, ‘নিশ্চয় এই বান্দা ত্বরাপ্রবণ হবে।’
প্রকৃতপক্ষে ফেরেস্তাদের ধারণাই ছিল সঠিক। আল্লাহ মানুষকে ত্বরাপ্রবণ করেই সৃষ্টি করেছেন। কোরআনেও এর প্রমান পাওয়া যায়- সৃষ্টিগত ভাবে মানুষ ত্বরা প্রবণ। -২১:৩৭.

আদম উঠে বসল। উপস্থিত ফেরেস্তাগণ আদমকে সম্মান প্রদর্শণ করল। আর এরূপ নির্দেশ তারা পুর্বেই আল্লাহর নিকট থেকে প্রাপ্ত হয়েছিল। আর আদম তার চারিদিকে সমবেত ফেরেস্তাদেরকে এক নজর দেখে নিয়ে বলল, ‘সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর।’
আল্লাহ বলেন, ‘তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।’

অন্যদিকে এ বিষয়ে  Book of Chamis জানায়- THE most authentic [?] records of antiquity which have come down to us state that Adam was created on Friday afternoon, at the hour of Assr.


..Adam's beautiful form excited the admiration of the angels who were passing by the gates of Paradise, where Allah had laid it down. iblis said, to his fellows, "How can this hollow piece of earth be well pleasing in your sight? Nothing but weakness and frailty may be expected of this creature." When all the inhabitants of heaven, save Iblis, had gazed on Adam in long and silent wonder, they burst out in praises to Allah, the creator of the first man...


Allah then directed the angels to bathe the Soul of Adam, which he had created a thousand years before his body, in the sea of glory which proceedeth from himself, and commanded her to animate his yet lifeless form. The Soul hesitated, for she was unwilling to exchange the boundless heavens for this narrow home; but Allah said, "Thou must animate Adam even against thy will; and as the punishment of thy disobedience, thou shalt one day be separated from him also against thy will."

Allah then breathed upon her with such violence that she rushed through the nostrils of Adam into his head. On reaching his eyes, they were opened, and he saw the throne of Allah, with the inscription, "There is out one GOD, and Mohammed is his Messenger."


The Soul then penetrated to his ears, and he heard the angels praising Allah; thereupon his own tongue was loosed, and he cried, "Blessed be thou, my Creator, the only One and Eternal!" and Allah answered, "For this end wast thou created; thou and thy descendants shall worship me; so shall ye ever obtain grace and mercy." -(Book of Chamis, by Husein ibn Muhammed.)

জান্নাতে আদম ও হাওয়া
আদমকে সৃষ্টির পর আল্লাহ তাকে আসমানের এক উদ্যানে বাস করতে দিয়েছিলেন। আদম ঘুরত ফিরত খুশীমত খাওয়া-দাওয়া করত। এসময় আল্লাহ তাকে তাঁর তত্ত্বাবধানে যাবতীয় কিছুর নাম শিক্ষা দিতে লাগলেন। আদমের কৌতুহলও ছিল অদম্য। সে দ্রুত সবকিছু আয়ত্ব করে ফেলতে লাগল।

আর এ বিষয়ে  Book of Chamis জানায়- All created things were then assembled before Adam, and Allah taught him the names of all beasts, of birds, and of fish; the manner in which they are sustained and propagated, and explained their peculiarities, and the ends of their existence.-(Book of Chamis, by Husein ibn Muhammed.)

তার এবাদতের জন্যে বেহেস্তে একটি গৃহ (বায়তুল মামুর) নির্মিত হয়েছিল। ফেরেস্তাদের সাথে সে সেখানে এবাদত করত এবং অবসরে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলত। কিন্তু ফেরেস্তাগণ তো সর্বদা আল্লাহর নির্দেশ পালনে ব্যতিব্যস্ত এবং তাঁর এবাদতে মশগুল থাকত, তাই প্রায়ই আদম নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ত। আল্লাহ তো মহাজ্ঞানী, তিনি তার নিঃসঙ্গতা দূর করতে হাওয়াকে তার বাম পাঁজরের হাঁড় থেকে সৃষ্টি করলেন, যেন তিনি একজন সঙ্গী পান, যে সঙ্গী সর্বদা তার মনোরঞ্জন করবে, তাকে উৎফুল্ল ও আনন্দে ভরে রাখবে। যেমন- তিনি আদমকে সৃষ্টি করলেন ও তার থেকে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেন যেন সে তার কাছে শান্তি পায়।’ -৭:১৮৯.

হাওয়াকে আল্লাহ যখন সৃষ্টি করলেন, তখন আদম নিদ্রামগ্ন ছিল। সে ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখতে পেল তার মাথার পাশে বসে রয়েছে এক রমনী যে তার মুখের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে। ঐ রমনীর সুন্দর মুখশ্রী এবং টানা টানা চোখের মাদকতা ভরা চাহনিতে আদম আকৃষ্ট হল। সে উঠে বসল এবং অবাক হয়ে ঐ নারীর সৌন্দর্য অবলোকন করতে লাগল। বেহেস্তে এমন সৃষ্টি সে তো পূর্বে দেখেনি। 

হাওয়ার সৃষ্টি সম্পর্কে Book of Chamis জানায়-Allah presented him, through Gabriel, with a bunch of grapes from Paradise, and when he had eaten them he fell into a deep sleep. The Lord then took a rib from Adam's side, and formed a woman of it, whom he called Hava [Eve], for he said, I have taken her from (hai) the living.She bore a perfect resemblance to Adam; but her features were more delicate than his, and her eyes shone with a sweeter luster, her hair was longer, and divided into seven hundred braids; her form was lighter, and her voice more soft and pure.


While Allah was endowing Eve with every female charm, Adam was dreaming of a second human being resembling himself. Nor was this strange, for had he not seen all the creatures which had been presented to him in pairs? -(Book of Chamis, by Husein ibn Muhammed.)

যে আদম ইতিপূর্বে আগ্রহ নিয়ে ফেরেস্তাদের সঙ্গে কথাবার্তায় সময় কাটাত, সে এখন এই নারীকে নিয়ে বিভোর হয়ে পড়ল। এই সময় এক ফেরেস্তা ঐ নারীকে দেখে এবং আদমের এই পরিবর্তণে অবাক হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘হে আদম, এ কে?’
আদম উত্তর দিল, ‘এর নাম হাওয়া (Living Things)।’
ফেরেস্তা - ‘তার নাম এমন কেন?’
আদম - ‘তাকে আমার থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আমি তো জীবন্ত (Living Being)।’

যা হোক, আদমকে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তাকে জ্ঞান শিক্ষা দিলেন। আর সে যখন সবকিছু শিখে ফেলল, তখন তিনি ফেরেস্তাদের সম্মুখে সকল বস্তু উপস্থাপন করে বলেন, ‘এসবের নাম আমাকে বল।’ 
তারা বলল, ‘আপনি মহান। আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন তাছাড়া আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয় আপনি প্রাজ্ঞ, তত্ত্বজ্ঞানী।’ 
তখন তিনি আদমকে বলেন, ‘হে আদম! তুমি ওদের এসবের নাম বলে দাও।’ -২:৩১ তখন আদম সে সবের নাম বলে দিল।  তখন তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আকাশ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বস্তু সম্বন্ধে আমি জানি, আর আমি জানি যা তোমরা প্রকাশ কর বা গোপন রাখ।’-(২:৩৩)

জ্ঞানীর সম্মান খোদার কাছে অতি উচ্চ। সুতরাং তিনি বলেন, ‘আদমকে সিজদা কর।’-(২:৩৪) তখন ফেরেস্তাগণ সকলেই সিজদা করল ইবলিস ছাড়া, সে সিজদা করতে অস্বীকার করল।-(১৫:৩০-৩১)

ইবলিস যদিও ফেরেস্তা না, জ্বিণ তথাপি সেও এই নির্দেশের অন্তর্ভূক্ত ছিল। কেননা, তখন পর্যন্ত সে ফেরেস্তাদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করত এবং আল্লাহর ঐ নির্দেশ দানের সময়ও সে তাদের সঙ্গে সেখানে স্ব-শরীরে উপস্থিত ছিল। [এভাবে খোদার নির্দেশ না থাকলেও কোন নবী যাদি কিছু আদেশ করেন তবে তা উম্মতের জন্যে অবশ্য পালনীয় হয়ে যায়। যেমন, নবী য়াকুব তার প্রিয় উটের দুধ হারাম করেছিলেন, তার রোগমুক্তির নিরাময়ে, মানত হিসেবে, ফলে সকল ইস্রায়েলীর জন্যে তা হারাম হয়েছিল।] 

আগুণের সৃষ্ট জ্বিণ আযাযিলের কাছে মাটির সৃষ্টি আদম শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হল না- যদিও বিশেষ জ্ঞানের ক্ষেত্রে একটু আগে আদম তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমান দিয়েছিল। আর তা সে আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করে অনড় দাঁড়িয়ে রইল।

মুসলিম আর্টিস্টদের কল্পনায় ইবলিস!
এদিকে সিজদাকারী ফেরেস্তারা মাথা তুলে বুঝতে পারল, আযাযিল সিজদা অস্বীকারকারী। কারণ, আল্লাহর প্রত্যক্ষ নির্দেশ অমান্য করায় ফেরেস্তারা তার মুখাবয়বকে কালো দেখতে পাচ্ছিল। আর তাই তারা ভয়ে পুনঃরায় সিজদায় পতিত হল।

আল্লাহ বললেন, ‘হে ইবলিস! তোমার কি হল যে তুমি সিজদাকারীদের সাথে যোগ দিলে না? কে তোমাকে বাঁধা দিল?’১৫: ৩২.
সে বলল, ‘আমি তো তার চেয়ে বড়, তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ, আর তাকে কাদা দিয়ে।’-৭:১২.
আল্লাহ বললেন, ‘হে ইবলিস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি তাকে সিজদা করতে তোমার বাঁধা কোথায়? তুমি যে অহংকার করলে, তুমি কি এতই বড়?’ -৩৮:৭৫.
সে বলল, ‘তুমি মাটি থেকে যে মানুষ সৃষ্টি করেছ আমি তাকে সিজদা করব না।’‘-৩৮:৭৫.
তিনি বললেন, ‘তুমি এখানে (বেহেস্তে) থেকে অহংকার করবে এ হতে পারে না। সুতরাং বের হয়ে যাও, তুমি তো অধমদের একজন।’ -৭:১৩.


আর আল্লাহ দেখলেন এই ইবলিস আদমের প্রকাশ্য বিরোধীতায় লিপ্ত। সুতরাং তাকে সতর্ক করে দিতে তিনি বললেন, ‘হে আদম! এই ইবলিস তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সুতরাং সে যেন কিছুতেই তোমাদেরকে জান্নাত হতে বের করে না দেয়, দিলে তোমরা দুঃখ-কষ্ট পাবে। তোমরা জান্নাতে বাস করতে থাক। সেখানে তোমরা ক্ষুধার্ত বা উলঙ্গ বোধ করবে না এবং সেখানে পিপাসা বা রোদের তাপ তোমাদেরকে কষ্ট দেবে না।’
-২০:১১৭-১১৯)
গুস্তাফ দোরের কল্পনায় শয়তান।
অতঃপর আল্লাহ তাদের চলাফেরায় সীমারেখা টেনে দিলেন। বাগানের মাঝখানে অবস্থিত এক বৃক্ষের নিকট গমন ও তার ফল ভক্ষণ নিষিদ্ধ করলেন। এই বৃক্ষটিই সেই জ্ঞানবৃক্ষ। আর ঐ বৃক্ষটি নির্দেশ করে তিনি বললেন, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার সঙ্গিনী জান্নাতের যেখানে ইচ্ছে যাও বা যা ইচ্ছে খাও, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হইও না, হলে তোমরা সীমালংঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।’-৭:১৯.

ইবলিস আদমকে সিজদা করার খোদায়ী আদেশ অমান্য করায় শাস্তিস্বরূপ বেহেস্ত থেকে বিতাড়িত হয়। সুতরাং যার জন্যে তার এই দূর্ভাগ্য, সে বেহেস্তের অপার সুখ ভোগের মধ্যে শান্তিতে থাকবে এটা সে সহ্য করতে পারল না। তাই আদমকেও পথভ্রষ্ট করে কিভাবে সেখান থেকে বের করে দেয়া যায় সেই চিন্তায় সে মশগুল হল। কিন্তু যে পরিকল্পণাই সে করুক তা বাস্তবায়ন করতে হলে তাকে প্রথমে বেহেস্তে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? 

ইবলিস বেহেস্তের দ্বারদেশে পৌঁছে ইতস্ততঃ ঘোরাঘুরি করতে লাগল। দ্বারের একপাশে প্রাচীরের উপর বসে ছিল এক ময়ূর। সে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তার পরিচয় জানতে চাইল।
ইবলিস বলল, ‘আমি আযাযিল, আল্লাহর এক বান্দা।’

ইবলিস দ্রুত ঐ ময়ূরের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলল এবং এক পর্যায়ে সে বেহেস্ত ঘুরে ফিরে দেখতে চাইল। ময়ূর বলল, তার সেরকম কোন ক্ষমতা খোদা দেননি। তবে সে জানায় যে তার এক বন্ধু আছে যার সে ক্ষমতা আছে। তখন ইবলিস তাকে তার সেই বন্ধুকে ডেকে আনতে অনুরোধ করে।
ময়ূর চলে গেল এবং অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তার বন্ধুকে নিয়ে ফিরে এল। ময়ূরের ঐ বন্ধু ছিল একটা সাপ যে জ্ঞান বৃক্ষের ফল পাহারা দিত। ঐ সাপ বলল, ‘আল্লাহর অনুমতি ব্যতিত কারও ভিতরে প্রবেশের অধিকার নেই।’
ইবলিস বলল, ‘আমি বেহেস্তের কোথাও পা রাখব না, তোমার মুখের মধ্যেই অবস্থান করব।’
সাপ রাজী হল না। তখন ইবলিস তাকে বলল, ‘আমি ‘ইসমে আযম’ জানি। এই সামান্য কাজের বিনিময়ে তুমি তা শিখতে পারতে আমার কাছ থেকে। তবে যেহেতু তুমি তা শিখতে চাও না,’ইবলিস ফিরে যাবার ভঙ্গিতে বলল, “কি আর করা।’ তখনি সাপ তার মাথা প্রসারিত করে দিল। 
ইবলিস বলল, ‘আমাকে গন্ধম বৃক্ষের কাছে নিয়ে চল।’ সাপ উড়ে গিয়ে জ্ঞান বৃক্ষের এক শাখায় গিয়ে বসলে ইবলিস তাকে নানা কথায় ভুলিয়ে রাখল আর অপেক্ষায় থাকল অাদম হাওয়ার।

বেহেস্তের সুখ। নয়নাভিরাম নানা বর্ণের নানারকম ফলমূল, আরাম আয়েশ -আহা। বেহেস্তের মাঝামাঝি একস্থানে বসে ফল খেতে খেতে আদম ও হাওয়া নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, ‘কতই না ভাল হত যদি আমরা অমর হতাম, আর আমাদের এই জান্নাত বাস চিরকালীন হত!’ 

খৃষ্টান আর্টিস্টদের কল্পনায় ইবলিস!
ইবলিস তাদের এই কথা শুনল। সে ঐ সময় গন্ধম বৃক্ষের শাখায় জড়িয়ে থাকা পাহারাদার সাপের মুখ গহ্বরে বসে ছিল। বৃক্ষ থেকে অবতরণ করে দ্রুত তাদের সন্নিকটে এসে গেল। 

তারপর শয়তান তাকে ফুসমন্তর দিল। সে বলল, ‘হে আদম! আমি কি তোমাকে অমরতা ও অক্ষয় রাজ্যের গাছের কথা বলে দেব? -২০:১২০.
তারা দৃষ্টি ফেলে সাপকে দেখে বলল, ‘তুমি কে?’
সে বলল, ‘আমি সেই বৃক্ষ রক্ষণাবেক্ষণকারী।’

আদম-হাওয়াকে নিয়ে সাপ ঐ বৃক্ষের একেবারে সন্নিকটে চলে এল। বৃক্ষের শাখায় শোভা পাচ্ছে নয়নমনোহর ফল একেবারে হাতের নাগালে। সুগন্ধে চারিদিক মৌ মৌ করছে। অভূতপূর্ব সৌন্দর্য। তারা অবাক নয়নে ফলের ভারে নূয়ে পড়া বৃক্ষটির শোভা উপভোগ করতে লাগলেন। ইবলিস বলল, ‘এটাই সেই বৃক্ষ, যার ফল ভক্ষণ করলেই তোমরা হবে অমর আর তোমাদের বাস বেহেস্তে চিরস্থায়ী হবে।’

আদম দেখল গাছটি বাগানের মাঝখানে। তখনি তার মনে পড়ল নিষেধবানী। সুতরাং সে বলল, ’না এর ফল আমরা ভক্ষণ করব না, নিষেধ অাছে।’

ইবলিস বলল, ‘কে নিষেধ করেছে?
হাওয়া বলল, ‘আল্লাহ আমাদেরকে বাগানের মাঝখানে থাকা গাছের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন।’ 

তাখন তাদের লজ্জাস্থান যা গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্যে শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল ও বলল, ‘যাতে তোমরা দু’জনে ফেরেস্তা বা অমর না হতে পার তার জন্যেই তোমাদেরকে এ গাছের সম্বন্ধে নিষেধ করেছেন।তারা বলল, ‘কিভাবে আমরা তোমার কথা বিশ্বাস করব?’ 
সে কসম খেয়ে বলল, ‘আমি তো তোমাদের একজন হিতৈষী।’ এভাবে সে তাদেরকে ধোঁকা দিল। ৭:২০ আর আদমের তো মিথ্যা ও প্রতারণার বিষয়ে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।
ইবলিস, আদম ও হাওয়া
আদম দৃঢ় মনোবলের অধিকারী ছিল না। সে ভুলে গেল এটাই সেই বৃক্ষ যেটি বাগানের মাঝখানে অবস্থিত এবং যার সম্পর্কে আল্লাহ তাদেরকে সতর্ক করেছিলেন তার নিকটবর্তী না হতে, হলে তারা সীমালঙ্ঘণকারীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।  

আল্লাহ বলেন, আমি ইতিপূর্বে আদমকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে ভুলে গিয়েছিল, এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ়তা পাইনি। -২০:১১৫..’ [এই আয়াতে কেবল আদমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- হাওয়ার নয়। একারণে হয়তঃ আল্লাহ নারী জাতির প্রতি বিশেষ রেয়াত প্রদর্শণ করেছেন। অথবা এটা হতে পারে- স্ত্রী যেহেতু পুরুষের অধীন সুতরাং স্বতন্ত্র্যভাবে হাওয়ার নাম উল্লেখের প্রয়োজন মনে করেননি।] 

তারা গাছ থেকে ফল ছিঁড়ল ও তা ভক্ষণ করল। ফল পাহারাদার সাপের মুখের গহব্বরে ইবলিস বসে থাকায় সে তাদেরকে কোনরূপ সতর্ক করতে পারল না।

তারপর যখন তারা সেইগাছের ফলের স্বাদ গ্রহণ করল তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ল। আর তারা বাগানের গাছের পাতা দিয়ে নিজেদেরকে ঢাকার চেষ্টা করল। তখন তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেন, ‘আমি কি তোমাদের এ গাছের ব্যাপারে সাবধান করে দেইনি?’ 
তারা বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের উপর জুলম করেছি, যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর, তবে নিশ্চয় আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হব।’-৭:২০-২৩.

অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদঙ্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল। -২:৩৬. পুরো ঘটনায় একদিকে আদম নিজেকে অপরাধী ভেবে হৃতদ্যম ও হতবাকের মত হয়ে পড়েছিল, অন্যদিকে ভীষণ লজ্জিতও ছিল, কেননা আল্লাহ তাকে ফেরেস্তাদের ও জ্বিনদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন, অথচ সে কি করে ফেলল! তাই তিনি তার কোন অতিরিক্ত কথা অধিক শাস্তি ও কোপানলের কারণরূপে পরিগণিত হতে পারে এই আশঙ্কায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে মনে মনে কেবল আল্লাহর করূণা ভিক্ষা করছিল। আর আল্লাহ তো সব জান্তা।

সুতরাং আদম তার প্রতিপালকের কাছ থেকে কিছু বাণী পেল। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষমা পরবশ হলেন। তিনি তো ক্ষমাপরবশ, পরম দয়ালু।’-২:৩৭. এরপর তার প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন-আর তাকে পথের নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, ‘পরে আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে সৎপথের নির্দেশ এলে যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না ও দুঃখ-কষ্ট পাবে না। আর যে আমার স্মরণে বিমুখ হবে তার জীবনের ভোগ-সম্ভার সঙ্কুচিত হবে, -২০:১২২-১২৩ 


তিনি বললেন, ‘তোমরা একে অন্যের শত্রু হিসেবে কিছুকালের জন্যে পৃথিবীতে নেমে যাও। আর (সেখানে) তোমাদের জন্যে আবাস ও জীবিকা রইল। সেখানেই তোমরা জীবন-যাপন করবে, সেখানেই তোমাদের মৃত্যু হবে আর সেখান থেকেই তোমাদেরকে বের করে আনা হবে।’-৭:২৪-২৫. মূলত: তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।-২:৩৬.

আদম-হাওয়াকে যখন আল্লাহ বচন দিচ্ছিলেন, তখন ইবলিস চুপচাপ একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু এবার সে মুখ খুলল। আদমকে দেখিয়ে সে বলল, ‘তুমি একে কি দেখেছ যাকে আমার উপরে তুমি মর্যাদা দিলে? কেয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দাও, তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরদের সমূলে নষ্ট করে ফেলব।’ 

আল্লাহ বললেন, ‘যাও, জাহান্নামই তোমার প্রতিদান আর প্রতিদান তাদের, যারা তোমাকে অনুসরণ করবে। তোমার কন্ঠস্বর দিয়ে ওদের মধ্যে যাকে পার সত্য থেকে সরিয়ে নাও, ......আর ওদের ধন-সস্পদে ও সন্তান-সন্তুতিতে শরিক হও আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাও।’ আর শয়তান ওদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেবে তা তো ছলনা মাত্র। -১৭:৬২-৬৪.(আর শয়তান ওদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেবে তা তো ছলনা মাত্র।- (এটি বললেন এ কারণে যে, ইতিপূর্বে সে আদম-হাওয়ার কাছেও শপথ করে বলেছিল- ‘আমি তো তোমাদের একজন হিতৈষী।’-অথচ তা ছিল ছলনা।) 

ইবলিস আদম সন্তানদের সমূলে ধ্বংস করার দম্ভোক্তি করল। এদিকে আল্লাহ ইতিমধ্যে আদমকে মনোনীত করেছেন এবং তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাকে নিশ্চিত করেছেন যে, তার সন্তানদের মধ্যেও তাঁর মনোনীত বান্দা থাকবে যারা পথভ্রষ্টদেরকে পথ প্রদর্শণ করবেন। তাই তিনি ইবলিসের কাছে প্রতিশ্রুতি চাওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়টিও সুস্পষ্টভাবে তাকে জানিয়ে দিলেন- আমার দাসদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা থাকবে না। কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট। -১৭:৬৫.


তখন ইবলিস বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দাও। -৭৮:৭৯-৮০, আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণ, তিনি ইবলিসের এতদিনের কর্মফল বিফল করে দিলেন না। তিনি তার প্রার্থনা মঞ্জুর করলেন, বললেন, ‘তোমাকে অবকাশ দেয়া হল সেইদিন পর্যন্ত-যা অবধারিত।-৭৮:৮০ 
ইবলিস তার সকল কাজকর্ম খোদার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত থাকার খোদায়ী ওয়াদা পাওয়ামাত্র সে দুনিয়াতে সবচেয়ে ক্ষমতাধর হয়ে গেল। একই সাথে সে হয়ে গেল ‘নায়ক খেকে খলনায়ক’। আর ইবলিসকে এটাও পরিস্কার করে দেয়া হল যে, অবকাশ সে পেয়েছে, তবে ঐ অবকালীন সময়কালে সে অভিশপ্ত্ও বটে। ’তোমার উপর আমার এ অভিশাপ কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে।’-৭৮:৭৮

ইবলিস দেখল ইতিমধ্যে তার সর্বনাশ হয়ে গেছে, আল্লাহ তাকে কেয়ামত পর্যন্ত অভিশপ্ত করেছেন। সুতরাং যাদের কারণে তার এই সর্বনাশ, তাদেরকেও সর্বনাশ করার- পথভ্রষ্ট করার প্রতিশ্রুতি ও ওয়াদা দিল সে, বলল, ‘যাদেরকে উপলক্ষ্য করে তুমি আমার সর্বনাশ করলে, এ কারণে আমিও তোমার সরল পথে তাদের জন্যে নিশ্চয় ওৎ পেতে থাকব। তারপর আমি তাদের সামনে, পিছনে, ডান ও বাম থেকে তাদের কাছে আসবই, আর তুমি তাদের অনেককেই কৃতজ্ঞ পাবে না।-৭:১৬-১৭. 

গুস্তাফ দোরের কল্পনায় নরকে শয়তান।
আমি তোমার দাসদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার দলে নিয়ে ফেলব, আর আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবই, তাদের হৃদয়ে মিথ্যে বাসনার সৃষ্টি করব। আমি তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব এবং তারা পশুর কান ফুটো করবে দেবদেবীকে উৎসর্গ করার জন্যে। আর আমি তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব এবং তারা তোমার সৃষ্টিকে বিকৃত করবে।’

-‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার যে সর্বনাশ করলে তার কসম! আমি পৃথিবীতে মানুষের কাছে পাপকে আকর্ষণীয় করব, আর আমি সকলের সর্বনাশ করব; তোমার নির্বাচিত দাস ছাড়া।’ -৪:১১৮-১১৯ -আল্লাহর নির্বাচিত দাসদেরকে ইবলিস তার এই কসমের আওয়ার বাইরে রাখল। কেননা আল্লাহ ইতিপূর্বে তাকে পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের উপর তার কোন প্রভাব খাটবে না।

আল্লাহ বললেন, ‘এ-ই আমার কাছে পৌঁছানোর সরল পথ। বিভ্রান্ত হয়ে যারা তোমাকে অনুসরণ করবে তারা ছাড়া আমার দাসদের ওপর তোমার কোন প্রভাব খাটবে না।’--১৫:৩৯-৪২. একই সাথে আল্লাহ ইবলিস ও তার অনুসারীদের শেষ পরিণতিও সুস্পষ্ট করে দিলেন যেন এ ব্যাপারে কারও নিকট সন্দেহের কোন অবকাশ না থাকে-‘আর আমি সত্যিই বলছি যে, তোমাকে দিয়ে ও ওদের মধ্যে যারা তোমার অনুসারী হবে তাদেরকে দিয়ে আমি জাহান্নাম ভরিয়ে তুলব। -৩৮:৮৪-৮৫.তার সাতটি দরজা আছে, প্রত্যেক দরজার জন্যে পৃথক পৃথক দল থাকবে।’-১৫:৪৪.

এতক্ষণ পর্যন্ত যে কাহিনী বর্ণনা করলাম তা বার্ণাবাসের গসপেলে আছে একটু অন্যভাবে-

"God having created a mass of earth, and having left it for twenty-five thousand years without doing aught else; Satan, who was as it were priest and head of the angels, by the great understanding that he possessed, knew that God of that mass of earth was to take one hundred and forty and four thousand signed with the mark of prophecy, and the Messenger of God, the soul of which messenger he had created sixty thousand years before aught else;.Therefore, being indignant, he instigated the angels, saying: "Look you, one day God shall will that this earth be revered by us. Wherefore consider that we are spirit, and therefore it is not fitting so to do."
Many therefore forsook God.

Whereupon said God, one day when all the angels were assembled: "Let each one that holds me for his lord straightway do reverence to this earth."

They that loved God bowed themselves, but Satan, with them that were of his mind, said: "O Lord, we are spirit, and therefore it is not just that we should do reverence to this clay;."

Having said this, Satan became horrid and of fearsome look, and his followers became hideous; because for their rebellion God took away from them the beauty wherewith he had endued them in creating them. Where at the holy angels, when, lifting their heads, they saw how terrible a monster Satan;had become, and his followers, cast down their face to earth in fear.

Then said Satan: "O Lord, you have unjustly made me hideous, but I am content thereat, because I desire to annul all that you shall do.’
And the other devils said: "Calf him not Lord, O Lucifer;, for you are Lord."
Then said God to the followers of Satan: "Repent you, and recognize me as God, your creator."
They answered: "We repent of having done you any reverence, for that you are not just; but Satan is just.’ Then said God: "Depart from me, O you cursed, for I have no mercy on you."

And in his departing Satan spat up that mass of earth, and that spittle the angel Gabriel lifted up with some earth, so that therefore now man has the navel in his belly." -(Gospel of Barnabas,CH-35)

"When God has expelled Satan, and the angel Gabriel had purified that mass of earth whereon Satan spat, God created everything that lives, both of the animals that fly and of them that walk and swim, and he adorned the world with all that it has.

One day Satan approached to the gates of paradise, and, seeing the horses eating grass, he announced to them that if that mass of earth should receive a soul there would be for them grievous labour; and that therefore it would be to their advantage to trample that piece of earth in such wise that it should be no more good for anything.

The horses aroused themselves and impetuously set themselves to run over that piece of earth which lay among lilies and roses;. Whereupon God gave spirit to that unclean portion of earth upon which lay the spittle of Satan, which Gabriel had taken up from the mass; and raised up the dog, who, barking, filled the horses with fear, and they fled.

Then God gave his soul to man, while all the holy angels sang: "Blessed be your holy name, O God our Lord."
"Adam, having sprung upon his feet, saw in the air a writing that shone like the sun;, which said: "There is only one God, and Muhammad is the Messenger of God."

Whereupon Adam opened his mouth and said: "I thank you, O Lord my God, that you have deigned to create me; but tell me. I pray you, what means the message of these words: "Muhammad is Messenger of God. Have there been other men before me?"

'Then said God: "Be you welcome, O my servant Adam. I tell you that you are the first man whom I have created. And he whom you have seen [mentioned] is your son, who shall come into the world many years hence, and shall be my Messenger, for whom I have created all things; who shall give light to the world when he shall come; whose soul was set in a celestial splendour;sixty thousand years before I made anything."

Adam besought God, saying: "Lord, grant me this writing upon the nails of the fingers of my hands."
Then God gave to the first man upon his thumbs that writing; upon the thumb-nail of the right hand it said: "There is only one God;," and upon the thumb-nail of the left it said: "Muhammad is Messenger ;of God." Then with fatherly affection the first man kissed those words, and rubbed his eyes, and said: "Blessed be that day when you shall come to the world."

Seeing the man alone, God said: "It is not well that he should remain alone."
Wherefore he made him to sleep, and took a rib from near his heart, filling the place with flesh. Of that rib made he Eve, and gave her to Adam for his wife.

He set the twain of them as lords of Paradise, to whom he said: "Behold I give to you every fruit to eat, except the apples and the corn" whereof he said: "Beware that in no wise you eat of these fruits, for you shall become unclean, insomuch that I shall not suffer. You to remain here, but shall drive you forth, and you shall suffer great miseries."-(Gospel of Barnabas,CH-39) 

When Satan had knowledge of this he became mad with indignation, and so he drew near to the gate of paradise where a horrid serpent with legs like a camel, and nails on his feet [that] cut like a razor on every side, stood on guard. The enemy said to him: 'Let me to enter into paradise.'

The serpent answered: 'How shall I let you enter [since] God has commanded me to cast you out?'
Satan answered: 'You see how much God loves you; he has set you outside of paradise to keep guard over a lump of clay, which is man! If you bring me into paradise I will make you so terrible that every one shall flee you, and so you shall go and stay at your pleasure.'
Then the serpent said: 'And how shall I set you within [paradise]?'

Satan said, 'You are great: therefore, open your mouth, and I will enter into your belly, and so [when] you enter into paradise [you] shall place me near to those two lumps of clay that are newly walking upon the earth.'

Then the serpent did so, and placed Satan near Eve, for Adam, her husband, was sleeping. Satan presented himself before the woman like a beauteous angel, and said to her: 'Why do you not eat of those apples and corn?'

Eve answered: 'Our God has said to us that [if we] eat [them] we shall be unclean, and he will drive us from paradise.'
Satan answered: 'He does not speak the truth! You must know that God is wicked and envious, and suffers no equals, but keeps every one as a slave. [This is] why he has said this [to you]; in order that you may not become equal to him. But if you and your companion do according to my counsel, you shall eat of those fruits as [you eat] of the other [fruits], and you shall not remain subject to others but like God you shall know good and evil, and you shall do whatever you please, because you shall be equal to God.'

Then Eve took and ate of those [fruits], and when her husband awoke she told [him everything] that Satan had said; and he took and ate the fruit [when] his wife offered them to him. But, as the food was going down, he remembered the words of God, and, wishing to stop the food, he put his hand into his throat, where every man has the mark.-(Gospel of Barnabas,CH-40)  

Then both of them knew that they were naked, and, being ashamed, they took fig leaves and made a clothing for their secret parts. When midday was passed, God appeared to them, and called Adam, saying: 'Adam, where are you?'

He answered: 'Lord, I hid myself from your presence because my wife and I are naked, and so we are ashamed to present ourselves before you.'
Then God said: 'And who has robbed you of your innocence, unless you have eaten the fruit [that makes you] unclean, and will not be able to abide [any] longer in paradise?'

Adam answered: 'O Lord, the wife whom you have given me [urged] me to eat [it] and so I have eaten it.'
Then God said to the woman: 'Why did you give [this] food to your husband?'
Eve answered: 'Satan deceived me, and so I ate [the fruit].'
'And how did that reprobate enter into [the garden]?' said God.
Eve answered: 'A serpent that stands at the northern gate brought him near to me.'

Then God said to Adam: 'Because you have [listened to] your wife and have eaten the fruit, cursed be the earth in your works; it shall bring forth brambles and thorns for you, and you shall eat bread by the sweat of your face. Remember that you are earth, and to earth you return.'

And he spoke to Eve, saying: 'And you who did [listen] to Satan, and gave the food to your husband, shall abide under the dominion of man, who shall keep you as a slave, and you shall bear children with travail.'

And having called the serpent, God called the angel Michael, who holds the sword of God, [and] said: 'First drive this wicked serpent forth from paradise, and when outside cut off his legs: for if he wants to walk, he must trail his body upon the earth.'

Afterwards God called Satan, who came laughing, and he said to him: 'Because you, reprobate, have deceived [Adam and Eve] and have made them unclean, I will that every uncleanness [from] them and [from] all their children - [of which] they shall be truly penitent and shall serve me - in going forth from their body shall enter through your mouth, and so shall you be satiated with uncleanness.'

Satan then gave a horrible roar, and said: 'Since you will to make me [continually] worse, I will make me that which I shall be able!'
Then said God: 'Depart, cursed one, from my presence!'
Then Satan departed, and God said to Adam [and] Eve, who were both weeping: 'Go forth from paradise, and do penance, and do not let your hope fail, for I will send your son so that your seed shall lift the dominion of Satan from off the human race: for I will give all things to he who shall come, my Messenger.'

God hid himself [from Adam and Eve], and the angel Michael drove them forth from paradise. Then, Adam, turning around, saw written above the gate, There is only one God, and Muhammad is Messenger of God. Weeping, he said: 'May it be pleasing to God, O my son, that you come quickly and draw us out of misery.'

And thus," said Jesus, "Satan and Adam sinned through pride, the one by despising man, the other by wishing to make himself equal with God."-(Gospel of Barnabas,CH-41) 

সমাপ্ত।


ছবি: Wikipedia, commons.wikimedia, ihuanedo.ning, apocryphabookofadanandeve.blogspot, ahmedamiruddin.wordpress

১২ মার্চ, ২০১২

Banatallah: প্রাচীন আরবের তিন চন্দ্রদেবী।

"He also saw him (Gabriel) at another descent,
By the Lote-tree at the furthest boundary,
Near to which is the Paradise of rest.
When the Lote-tree covered that which it covered,
His sight turned not aside, neither did it wander.
And verily he beheld some of the greatest Signs of his Lord.
And see ye not Lat and Uzza,
And Manat the third besides?

সূরা নজম কা‘বাতে অবস্থানের সময় নবীজীর কাছে নাযিল হলে শয়তান (Satan) উপরের আয়াতগুলোর সাথে যুক্ত করে দিয়েছিল-

"These are exalted Females,
And verily their intercession is to be hoped for.
Wherefore bow down before God, and serve Him,"

 আল লাত
অতঃপর নবীজী যখন তা পাঠ করলেন তখন উপস্থিত পৌত্তলিকরা তা শ্রবণ করে এবং সূরার শেষে সিজদার কথা থাকায় তিনি সিজদা করলেন। কা’বাতে সেসময় উপস্থিত পৌত্তলিকরাও তার সাথে সিজদা করল এক অহঙ্কারী ব্যক্তি ব্যতিত। ঐ ব্যক্তি al-Walīd bin al-Mughīra একমুঠো মাটি হাতে তুলে তার কপালে তা স্পর্শ করে বলেছিল, ‘আমার জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট।’-এই ব্যক্তি পরবর্তীতে অবিশ্বাসী অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছিল।

শয়তানের সংযুক্ত এই আয়াতগুলো সম্পর্কে হাদিসে রয়েছে- The Apostle of Allah repeated them (the verses), and he went on reciting the whole of surah and then fell in prostration, and the people (the Quraish) fell in prostration with him. -Ibn Sa'd, Kitab Al-Tabaqat Al-Kabir, vol. 1, p. 237)

আব্দুল্লাহ বিন মাসুদ বর্ণিত: The Prophet recited Suratan-Najm (103) at Mecca and prostrated while reciting it and those who were with him did the same except an old man who took a handful of small stones or earth and lifted it to his forehead and said, "This is sufficient for me." Later on, I saw him killed as a non-believer. -Bukhari, V2, 19:173.

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত: The Prophet prostrated while reciting An-Najm and with him prostrated the Muslims, the pagans, the jinns, and all human beings.-সহীহ বুখারী, ভলিয়্যূম-২, বুক ১৯, নাম্বার ১৭৭।

আরবে তিন চন্দ্রদেবীর আল-লাত (দীপ্তিমান চন্দ্র), আল-মানাত (অন্ধকারাচছন্ন চন্দ্র) এবং আল-উজ্জা (দীপ্তি আধিয়ার সমন্বিত চন্দ্র)- অত্যন্ত সম্মানিত দেবী ছিলেন। এরা ‘আল্লাহর দুহিতা’ বা বানাতাল্লাহ (Banatallah) হিসেবেই আরববাসীর কাছে অধিক পরিচিত ছিল। আরবি ভাষাভাষী নাবাতিয়েনরা আল-লাতকে যুদ্ধের দেবী হিসেবে পূজা করত। আল-উজ্জা ছিলেন প্রেমের দেবী, যার আরাধনার অঙ্গবিশেষ ছিল পশু ও মানুষ বলি। অন্যদিকে আল-মানাত ছিলেন ভাগ্যের দেবী। এছাড়াও আরববাসীর নিকট আল-লাত চন্দ্র উপগ্রহের, আল-মানাত শুক্র গ্রহের এবং আল-উজ্জা লব্ধক (সাইরিয়াস) নক্ষত্রের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেও বিবেচিত হত। কা’বাগৃহে তাওয়াফ করার সময় পৌত্তলিক কুরাইশগণ এইসব দেব-দেবীদের নাম উচ্চারণ করত। 

Al-Lat was a white stone with inscriptions on. মক্কার চল্লিশ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে, তায়েফে এ দেবীর পূজা হত; সেখানে দেবীকে ঘিরে একটা মন্দির নির্মিত হয়েছিল পর্দা ঝুলিয়ে। servants and a sacred courtyard around it. 


The people of At-Ta'if, the tribe of Thaqif and their allies, worshipped Al-Lat. They would boast to Arabs, except the Quraysh, that they had Al-Lat. Ibn Jarir said, "They derived Al-Lat's name from Allah's Name, and made it feminine. It was reported that Al-Lat is pronounced Al-Lat because, according to `Abdullah bin `Abbas, Mujahid, and Ar-Rabi` bin Anas, Al-Lat was a man who used to mix Sawiq ( খেজুরের সাথে আটা বা বার্লি মিশিয়ে রুটি বানিয়ে তা আগুণে সেঁকে সাওয়িক বানানো হত) with water for the pilgrims during the time of Jahiliyyah. When he died, they remained next to his grave and worshipped him.'


আর দেবী উজ্জ্বা-্ ইবনে জরির বলেন, "উজ্জ্বা the name for their idol Al-`Uzza from Allah's Name Al-`Aziz. Al-`Uzza was a tree on which the idolators placed a monument and curtains, in the area of Nakhlah, between Makkah and At-Ta'if. 

The Quraysh revered Al-`Uzza.'' During the battle of Uhud, Abu Sufyan said, "We have Al-`Uzza, but you do not have Al-`Uzza.'' Allah's Messenger replied, "Allah is Our Supporter, but you have no support.'

অন্যদিকে, মক্কার অনতিদূরে, মদিনার পথে in the area of Mushallal near Qudayd মানাত দেবীর পূজা চলত। The tribes of Khuza`ah, Aws and Khazraj used to revere Manat during the time of Jahiliyyah.They used to announce Hajj to the Ka`bah from next to Manat. Al-Bukhari collected a statement from `A'ishah with this meaning. There were other idols in the Arabian Peninsula that the Arabs revered just as they revered the Ka`bah, besides the three idols that Allah mentioned in His Glorious Book. Allah mentioned these three here because they were more famous than the others. 

মোটকথা, Banatallah ( লাত, মানাত ও উজ্জা) কুরাইশদের অত্যন্ত সম্মানিত দেবী ছিলেন। কেননা তাদের একাংশ- এ্ই তিন চন্দ্রদেবীর উপাসনা করত। অথচ মুহম্মদ সর্বদা তাদের এসব দেবদেবীদেরকে অস্বীকার করে এসেছেন। কিন্তু এখন তিনি -‘তারা মহিমান্বিত দেবদেবী’ বলাতে তারা আনন্দ ও খুশীতে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে লাগল। 

প্রকৃতপক্ষে, they delighted at what had been said about their gods. আর তাই তারা বলে বেড়াতে লাগল- "Muhammad has spoken of our gods in splendid fashion". -(Ibn Ishaq, Sirat Rasul Allah, p. 166) ‘মুহম্মদ আমাদের দেব-দেবীদেরকে স্বীকার করে নিয়েছেন।’

কেউ কেউ বলতে লাগল-‘মুহম্মদের আল্লাহ সৃষ্টি-স্থিতি-লয়াদির কর্তৃত্ব করুক, আমাদের তাতে আপত্তি নেই। আমরা তো কেবল বলে থাকি যে, এই দেব-দেবতাদের পূজা-অর্চণা করলে তারা তাতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা ও অনুরোধ করেন, আল্লাহ সেই অনুরোধ মঞ্জুর করে থাকেন। মুহম্মদ আমাদের কথাগুলিকে স্বীকার করে নিয়েছেন, সুতরাং এখন আমরা তার আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রাণিপাত করব।’

মুসলমানরা উৎপীড়ন অত্যাচার থেকে রক্ষা পেল। দিন দশেক পরে জিব্রাইল এল এবং মুহম্মদের ভুল শুধরিয়ে দিল। সে বলেছিল- “O Muhammad, what have you done! You have recited to the people something which I have not brought you from God, and you have spoken what He did not say to you.” -(Ibn Ishaq, Sirat Rasul Allah, p. 166).

তিন চন্দ্রদেবী-আল লাত, আল মানাত এবং আল-উজ্জা
জিব্রাইল পুরো সূরা মুহম্মদকে পাঠ করে শোনাল- ‘তোমরা নিজেদের জন্যে কন্যা পছন্দ কর না। তবে কি পুরুষগুলি তোমাদের ও নারীগুলি তাঁর? অতএব এ অতি অসঙ্গত বিভাগ। এ (লাত, ওজ্জা ও মানাত প্রভৃতি দেবদেবতা)-গুলি (অবাস্তব) নামমাত্র, তোমরা ও তোমাদের পূর্ব পুরুষরা ঐগুলিকে গড়ে নিয়েছ মাত্র, আল্লাহ ওর জন্যে কোন প্রমাণ ও নিদর্শণ প্রদান করেননি। 

তারা কেবল কল্পনা ও অনুমানেরই অনুসরণ করে থাকে এবং তাদের মন যা চায় (তাই করে থাকে)। অথচ তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে পদপ্রদর্শক এসেছে----------------অতএব আল্লাহকে সিজদা কর ও তাঁর এবাদত কর।’-(৫৩:২১-৬২)

সব শুনে মুহম্মদ ভীত হয়ে পড়েছিলেন, তখন তাকে সান্তনা দিতে জিব্রাইল এই আয়াতসমূহ শুনিয়েছিল- তারা তো তোমাকে হটিয়ে দিতে চাচ্ছিল যে বিষয় আমি তোমার প্রতি ওহীর মাধ্যমে প্রেরণ করেছি তা থেকে তোমার পদঙ্খলন ঘটানোর জন্যে তারা চুড়ান্ত চেষ্টা করেছে, যাতে তুমি আমার প্রতি কিছু মিথ্যে সম্বন্ধযুক্ত কর। এতে সফল হলে তারা তোমাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নিত। আমি তোমাকে দৃঢ়পদ না রাখলে তুমি তাদের প্রতি কিছুটা ঝুকেই পড়তে, তখন আমি অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুন শাস্তির আস্বাদন করাতাম।-(১৭:৭৩-৭৫)

এবং যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যার্থ করার চেষ্টা করে, তারাই দোযখের অধিবাসী। আমি তোমার পূর্বে যে সমস্ত রসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পণা করার চেষ্টা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়, এ কারণে যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণ হৃদয়। গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে, এটা তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য; অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহই বিশ্বাস স্থাপনকারীকে সরলপথ প্রদর্শণ করেন।-(২২:৫১-৫৪)

শয়তান নবী-রসুলদেরকেও প্ররোচিত করতে পারে। বেহেস্তের মধ্যেই তো আদম-হাওয়াকে সে বিভ্রান্ত করেছিল। -৭:১৮৯-১৯২। আর নবী মুহম্মদ একজন মানুষ বৈ তো নন। সুতরাং তিনি তার ভুল স্বীকার করে নিলেন এবং সম্পূর্ণ সূরাটি কুরাইশদের পাঠ করে শোনালেন।

আল লাত (al-Lat) -তায়েফের সকিফ গোত্রের, আল উজ্জা (al-Uzza)-কুরাইশ গোত্রের এবং আল মানাত (al-Manat) -বনি হেলালদের দেবতা ছিল। নবী মুহম্মদ যখন তাদের দেব-দেবী নিয়ে বলেছিলেন, তখন তারা অত্যন্ত উল্লসিত হযেছিল, কিন্তু এখন ‘লাত, উজ্জা ও মানাত শুন্যগর্ভ নাম মাত্র‘ -এই আয়াতের দরুণ তারা ক্রোধে ফেঁটে পড়ল। তারা সর্বত্র প্রচার করতে লাগল- 'Muhammad has gone back on what he said about the status of our gods relative to God, changed it and brought something else' বা ‘আবার সে আমাদের দেবদেবীদের নিন্দা করছে’ -ফলে নির্যাতনের মাত্রা নতুনভাবে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

এতদসত্ত্বেও ঐশী সাহায্যের অবিচল বিশ্বাস নিয়ে নবীজী তার প্রচারকার্য অব্যাহত রেখেছিলেন, ফলে কুরাইশদের বাঁধা-বিপত্তির সাময়িক বিরতি কিংবা তাদের প্রচন্ড দুশমনির মধ্যে দিয়ে সত্যের যে বীজ ছড়িয়ে পড়েছিল তা পুষ্পিত হতে ব্যর্থ হয়নি। 

বানাতাল্লাহর ধ্বংস ও বিলুপ্তি

Muhammad bin Ishaq said that Manat used to be the idol of the Aws and Khazraj tribes and those who followed their religion in Yathrib (Al-Madinah). Manat was near the coast, close to the area of Mushallal in Qudayd. The Prophet sent Abu Sufyan Sakhr bin Harb or `Ali bin Abi Talib to demolish it.

An-Nasa'i recorded that Abu At-Tufayl said, "When the Messenger of Allah conquered Makkah, he sent Khalid bin Al-Walid to the area of Nakhlah where the idol of Al-`Uzza was erected on three trees of a forest. Khalid cut the three trees and approached the house built around it and destroyed it. When he went back to the Prophet and informed him of the story, the Prophet said to him, “Go back and finish your mission, for you have not finished it.”

Khalid went back and when the custodians who were also its servants of Al-`Uzza saw him, they started invoking by calling Al-`Uzza! When Khalid approached it, he found a naked woman whose hair was untidy and who was throwing sand on her head. Khalid killed her with the sword and went back to the Messenger of Allah , who said to him, That was Al-`Uzza!'

Muhammad bin Ishaq narrated, "Al-Lat belonged to the tribe of Thaqif in the area of At-Ta'if. Banu Mu`attib were the custodians of Al-Lat and its servants.'' I saw that the Prophet sent Al-Mughirah bin Shu`bah and Abu Sufyan Sakhr bin Harb to destroy Al-Lat.

তায়েফে পৌঁছে আবু সুফিয়ান আর অগ্রসর না হলে মুগীরা তার আত্মীয়র্গ নিয়ে দেবী লাতের কাছে গেলেন এবং নিজে কুঠার হাতে মূর্ত্তিতে চড়লেন। আর তার সঙ্গীরা তাকে ঘিরে থাকল যেন ওয়ারওয়ার মত কেউ তাকে হত্যা করে না ফেলে। এ সময় শফিক গোত্রের নারীরা, নিদারূণ সর্বনাশে যেভাবে ছুটে আসে, তেমনি করে এলোকেশে ছুটে এল। তারা তাদের এতদিনের রক্ষক দেবীকে জড়িয়ে বিলাপ শুরু করে দিল। তারা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল- 'ওহ!, ওরে আমাদের রক্ষাকারী দেবীর জন্যে কাঁদো। কূলাঙ্গাররা তাকে পরিত্যাগ করেছে, তারা তো তরবারী হাতে ধরার যোগ্য না।'

তায়েফীদের হতাশা, দুঃখ ও উচ্চনাদী চিৎকারের মধ্যে মুগীরা দেবী আল-তাগুদ (al-Taghiyyah) বা আল-লাতের মস্তক কূঠারের আঘাতে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন। তারপর দেবীর শরীরে জড়ানো যে অলংকার (যা মূলত: সোনা ও মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরী) ছিল, তা সংগ্রহ করে নিলেন। পরবর্তীতে এই অলংকার নবীজীর নির্দেশে ওয়ারওয়া ও আসওয়াদের রক্ত ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়েছিল।

সমাপ্ত।
ছবি:  Wikipedia, almuqaddasarabianblog.blogspot.

Moses: কোরাণিক ক্যানভাসে নবী মূসা।

Abu Hena Mostafa Kamal  01 May, 2017 মি সরের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ফেরাউন। হঠাৎ করে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। কিন্তু তিনি কোন উত্তরাধিকারী ন...