দাউদের সেনাবাহিনী যখন জোয়াবের নেতৃত্বে জর্দানের পারে আম্মানীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল, তখন তিনি বিশ্রামে প্রাসাদে ছিলেন। এসময় একদিন একটি সুন্দর কবুতর তার বিশ্রাম কক্ষে উড়ে এল। তিনি কবুতরটিকে ধরতে ইচ্ছে করলেন। কিন্তু সেটি জানালা গলে উড়ে চলে গেল।
কিং দাউদ। |
দাউদ বৎশেবাকে ডেকে এনে তার সঙ্গে পরিচিত হলেন এবং তাকে প্রাসাদে থাকার আমন্ত্রণ জানালেন। একই সাথে তিনি উরিয়কে সমস্যা মনে করে সেনাপতি জোয়াবকে নির্দেশ পাঠিয়ে দিলেন- ‘যুদ্ধের ময়দানে তাকে যেন একেবারে সম্মুখ সাঁরির সৈন্যদলের মধ্যে রাখা হয়, যেখানে মৃত্যু অবধারিত।’
এই আদেশ পালিত হল। আর জোয়াবের এক দূত দাউদের নিকট এই সংবাদ নিয়ে এল-‘আম্মানীয়রা প্রবল বিক্রমে নগর থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল; আর তাতে আমরা তাদেরকে তাড়া করে নগর দ্বার অবধি নিয়ে গিয়েছিলাম। এসময় একদল তীরন্দাজ আমাদের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের কিছু যোদ্ধা নিহত হয়, যাদের মধ্যে হিত্তিয় উরিয় রয়েছেন।’
উরিয়র মৃত্যুর পর দাউদ বৎশেবাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলেন। তার এই কাজটি কিন্তু খোদার দৃষ্টি এড়াল না।
স্নানরত বৎশেবা। |
একদিন একজন অতিথি সেই ধনী ব্যক্তির গৃহে এল। তখন সে তার তার জন্যে খাবার আয়োজনে নিজের একটা দুম্বা জবেহ করল। অতিথি চলে গেলে সে তার ভ্রাতাকে ডেকে বলল, ‘আমাদের অতিথির সৎকার করা আমাদের উভয়ের কর্তব্য। আর আমি আমার একটা দুম্বা জবেহ করে তা পালন করেছি। এখন আমার দুম্বার বদলে তুমি তোমার দুম্বাটি দাও।’ তারা উভয়ে বিবাদে লিপ্ত হল এবং ফয়সালার জন্যে দাউদের দরবারে হাযির হল।
সময় ছিল সন্ধ্যা। তাই প্রহরীরা তাদেরকে মহলে প্রবেশে বাঁধা দিল। তখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করল। যখন তারা দাউদের খাস কামরায় ঢুকে পড়ল, তখন তিনি তাদেরকে দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। ওরা বলল, ‘ভয় পাবেন না, আমরা দু‘টো বিবাদমান দল। তাই আপনি আমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিন, অবিচার না করে সঠিক পথ নির্দেশ করুন। এ আমারই ভাই; এর আছে নিরানব্বুইটি দুম্বা আর আমার আছে একটি; তবু সে বলে, আমাকে এটা দাও, আর তর্কে সে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে।’
দাউদ ও বৎশেবা। |
এসময় নবী নাথান কক্ষে প্রবেশ করলেন। তিনি দাউদকে বললেন, ‘খোদা তোমাকে ইস্রায়েলের রাজপদে অভিষেক করেছেন এবং তালুতের হাত থেকে তোমাকে রক্ষা করেছেন। তালুতের সবকিছু তিনি তোমাকে দিয়েছেন। আর অর্পণ করেছেন বনি ইস্রায়েলীদের কর্তৃত্বভার। এসব যদি তোমার পক্ষে যথেষ্ট না হত, তবে তিনি তোমাকে আরও অনেক কিছুই দিতেন। তবে তাঁর দৃষ্টিতে যা কিছু মন্দ, তা করে কেন তুমি তাঁকে তুচ্ছ করলে। তুমি আম্মানীয়দেরকে দিয়ে হিত্তিয় উরিয়কে হত্যা করেছ এবং একাধিক স্ত্রী থাকতেও তার স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী করে নিয়েছ।'’
এখন দাউদ পরিস্কার বুঝতে পারলেন খোদা তাকে মহা পরীক্ষায় ফেলেছেন। তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন। খোদা তাকে ক্ষমা করলেন এবং বললেন, ‘হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি মানুষের মাঝে সুবিচার কর ও খেয়াল খুশীর অনুসরণ কোরও না। তা করলে তা তোমাকে খোদার পথ থেকে বিচ্যূত করে দেবে। যারা খোদার পথ পরিত্যাগ করে তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিবসের কথা বিষ্মৃত হয়।’
প্রার্থনারত দাউদ। |
"Has not David, replied
the other, "slain the giant Djalut?" "But what has David
achieved," resumed the first, "that might be compared with Abraham's
readiness to sacrifice his son?"
As soon as David came home, he fell down before Allah and prayed:
"Lord, who hast proved on the pile Abraham's fidelity and obdience, grant
unto me too an opportunity show unto my people that my love to thee withstands
every temptation."
David's prayer was heard: when, three days afterward, he ascended
his pulpit, he perceived a bird of such beautiful plumage that it attracted his
whole attention, and he followed it with his eyes to every corner of the
chapel, and to the trees and shrubs beyond. He sung fewer psalms than he was
wont to do; his voice failed him as often as he lost sight of this graceful
bird, and grew soft and playful in the most solemn parts of the worship
whenever it reappeared.
At the close of the prayers, which, to the astonishment of the
whole assembly, were concluded on this occasion several hours sooner than
usual, he followed the bird, which flew from tree to tree, until he found
himself, at sunset, on the margin of a little lake. The bird disappered in the
lake, but David soon forgot it; for in its stead there rose up a female form,
whose beauty dazzled him like the
clearest midday sun. He inquired her name: it was Saja, the daughter of Josu,
the wife of Uriah Ibn Haman, who was with the army.
David departed, and on his return commanded the chief of his
troops to appoint Uriah to the most dangerous post in the vanguard of the army.
His command was executed, and soon afterward the death of Uriah was reported.
David then wooed his widow, and married her at the expiration of the prescribed
time.
On the day after his marriage, there appeared, at Allah's command,
Gabriel and Michael in human form before David, and Gabriel said, "The man
whom thou seest here before thee is the owner of ninety-nine sheep, while I
possess an only one; nevertheless, he pursues me without ceasing, and demands
that I should give up my only sheep to him."
"Thy demand is unreasonable," said David, "and
betrays an unbelieving heart and a rude disposition."
But Gabriel interrupted him, saying, "Many a noble and
accomplished permits himself more unjust things
than this."
David now perceived this to be an allusion to his conduct toward
Uriah; and, filled with wrath, he grasped his sword, and would have plunged it into Gabriel; but Michael
gave a loud laugh of scorn; and when Gabriel and himself had ascended above
David's head on their angels' wings, he said to David, "Thou hast
pronounced thine own sentence, and called thine act that of a barbarous
infidel: Allah will therefore bestow upon thy son a portion of the power which
he had originally intended for thee. Thy guilt is so much the greater, since
thou prayedst that thou mightst
be led into temptation without having the power of resisting it."
At these words the angels vanished through the ceiling; but David felt the whole burden of his sin. He tore the crown from his head, and the royal purple from his body, and wandered through the wilderness wrapped in simple woolen garments, and pining with remorse, weeping so bitterly that his skin fell from his face, and that the angels in heaven had compassion on him, and implored for him the mercy of Allah.
At these words the angels vanished through the ceiling; but David felt the whole burden of his sin. He tore the crown from his head, and the royal purple from his body, and wandered through the wilderness wrapped in simple woolen garments, and pining with remorse, weeping so bitterly that his skin fell from his face, and that the angels in heaven had compassion on him, and implored for him the mercy of Allah.
But it was not until he had spent three full years in penitence
and contrition that he heard a voice from heaven, which announced to him that
the All-compassionate Allah had at length opened the gate of mercy. Pacified
and strengthened by these words of consolation, David soon recovered his
physical powers and his blooming appearance, so that on his return to Palestine
no one observed in him the slightest change.-(Book of Chamis, by Husein ibn Muhammed.)
সবশেষে আমরা দেখব পুরো ঘটনা নিয়ে কোরআনের আয়াতসমূহ- ‘আমার শক্তিশালী দাস দাউদের কথা। সে সব সময় আমার উপর নির্ভর করত। আমি পাহাড়গুলোকে (তার) বশ করেছিলাম। ওরা সকাল-সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আমার পবিত্র মহিমাকীর্তণ করত। আর (তার) বশ করেছিলাম পাখীদেরকে, যারা তার কাছে সমবেত হত। তারা সকলেই তাকে অনুসরণ করত। আমি তার রাজ্যকে শক্তিশালী করেছিলাম ও তাকে দিয়েছিলাম হিকমত ও বাগ্মিতা।
সবশেষে আমরা দেখব পুরো ঘটনা নিয়ে কোরআনের আয়াতসমূহ- ‘আমার শক্তিশালী দাস দাউদের কথা। সে সব সময় আমার উপর নির্ভর করত। আমি পাহাড়গুলোকে (তার) বশ করেছিলাম। ওরা সকাল-সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আমার পবিত্র মহিমাকীর্তণ করত। আর (তার) বশ করেছিলাম পাখীদেরকে, যারা তার কাছে সমবেত হত। তারা সকলেই তাকে অনুসরণ করত। আমি তার রাজ্যকে শক্তিশালী করেছিলাম ও তাকে দিয়েছিলাম হিকমত ও বাগ্মিতা।
‘যখন ওরা (বিবাদমান লোকেরা) প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে খাস কামরায় ঢুকে পড়ল; যখন ওরা দাউদের কাছে গেল তখন সে ভয় পেয়ে গেল। ওরা বলল, ‘ভয় পাবেন না, আমরা দু‘টো বিবাদমান দল একে অপরের উপর জুলুম করেছি; তাই আপনি আমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিন, অবিচার না করে সঠিক পথ নির্দেশ করুন। এ আমার ভাই; এর আছে নিরানব্বুইটি দুম্বা আর আমার আছে একটি; তবু সে বলে, আমাকে এটা দাও আর তর্কে সে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে।’
দাউদ বলল, ‘তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলোর সঙ্গে যোগ দেবার দাবী করে সে তোমার উপর জুলুম করেছে। এজমালি ব্যাপারে শরিকদের অনেকে একে অন্যের উপর অবিচার করে থাকে- করে না কেবল বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ লোকেরা, আর তারা সংখ্যায় খুব কম।’
দাউদ বুঝতে পারল, আমি তাকে পরীক্ষা করছিলাম। তারপর সে তার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাইল আর সিজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং মুখ ফেরাল তাঁর দিকে তখন আমি তার অপরাধ ক্ষমা করলাম। আমার কাছে রয়েছে উচ্চ মর্যাদা ও শুভ পরিনাম।
(আমি বললাম), ‘হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর ও খেয়াল খুশীর অনুসরণ কোরও না। করলে তা তোমাকে খোদার পথ থেকে সরিয়ে দেবে। যারা খোদার পথ ছেড়ে দেয় তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিনের কথা ভুলে যায়।’-(৩৮:১৭-২৬)
সমাপ্ত।
ছবি: Wikipedia, ordination.
ছবি: Wikipedia, ordination.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন