মূসা বনি-ইস্রায়েলীদের মত প্রচন্ড একগুয়ে জাতিকে অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে সংশোধনে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। একসময় আল্লাহর পক্ষ থেকে ডাক এল তার ইহজগতের ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে পরজগতের অসীমতার পথে যাত্রার। আর তাই আল্লাহর নির্দেশে আজরাইল স্বয়ং তার জান কবচ করার কাজে পৃথিবীতে এল। সে মূসার সম্মুখে মানবাকৃতিতে উপস্থিত হয়ে বলল, ‘হে মূসা! প্রভুর ডাক এসেছে, কবুল কর।’
চল্লিশ বৎসরের বন্দী জীবন শেষে প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ সমাপ্ত হয়েছে মাত্র। এখন আসল কাজগুলো পড়ে রয়েছে সামনে। অনেক দায়িত্ব, অনেক পরিকল্পণা, খুঁটিনাটি বিষয়-মূসা আজরাইলের কথাকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাই তার কথাকে ঠাট্টা মনে করে ভীষণ রাগান্বিত হলেন। তিনি তাকে জোরে এক চপোটাঘাত করলেন। চড়ের প্রচন্ডতায় আজরাইলের চক্ষু কোটর থেকে বের হয়ে এল। অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে সে প্রভুর দরবারে ফিরে গিয়ে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার এই বান্দা মৃত্যু চায় না, অধিকন্তু সে আমাকে মারধোর করে মুখের আকৃতি বদলে দিয়েছে।’
আল্লাহ তার চক্ষু ঠিক করে দিলেন। তারপর তাকে নির্দেশ দিলেন, ‘পুনঃরায় তার কাছে যাও। আর তাকে জিজ্ঞেস কর, সে কি চায়।’
ফেরেস্তা পুনঃরায় মূসার কাছে এসে বলল, ‘হে মূসা, তুমি কি চাও? দীর্ঘায়ূ? তাহলে কোন ষাঁড়ের কোমরের উপর হাত রাখ, এতে তোমার হাতের নিচে যতগুলি লোম থাকবে, আল্লাহর ইচ্ছায় তুমি ততবৎসর আরও আয়ূ লাভ করবে।’
মূসা- ‘অতঃপর কি হবে?’
আজরাইল- ‘মৃত্যু, কেননা জীবমাত্রই মৃত্যুর সাধ গ্রহণ করবে। সকলকেই তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তিত হতে হবে।’
মূসা বুঝতে পরলেন জ্রিব্রাইল তার সাথে ঠাট্টা করেনি, প্রকৃতই আল্লাহর ডাক এসেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ জ্রিব্রাইল ও আল্লাহর নিকট নিজের কর্মের দরুন অপরাধী হিসেবে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। অত:পর আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলে তিনি ফরিয়াদ করলেন, ‘হে আল্লাহ! মৃত্যুর আগে তুমি আমাকে পবিত্র ভূমির নিকটবর্তী কোরও। জর্দান পার হয়ে গিয়ে ঐ চমৎকার দেশটা আমাকে দেখতে দিয়ো।’
আল্লাহ জানালেন, ‘জর্দান নদী অতিক্রম করা তোমার হবে না। সুতরাং তুমি পিসগার চূঁড়ায় আরোহণ করে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টি ফেরাও। আর উত্তরাধিকারী মনোনীত কর, যে নেতৃত্ব দিয়ে যে দেশটা তুমি দেখতে যাচ্ছ তা ইস্রায়েলীদেরকে দিয়ে অধিকার করাবে।’
প্রভুর অভিপ্রায় জানতে পেরে মূসা আর অগ্রসর না হয়ে ইস্রায়েলীদেরকে নিয়ে বৈৎপিয়োরের উল্টোদিকের উপত্যকায় তাম্বু ফেললেন।
মূসা জেনে গিয়েছেন তার জীবনের শেষ সময় এসে গেছে, তাই তিনি জরুরী কাজগুলি দ্রুত সম্পন্ন করতে লাগলেন। যেমন- লেবী গোত্রের জন্যে নগর মনোনীত করা, প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমানা ঠিক করা, লোকগণনা করা এবং উত্তরাধিকারী নেতা নির্বাচন করা প্রভৃতি।
চল্লিশ বৎসরের বন্দী জীবন শেষে প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ সমাপ্ত হয়েছে মাত্র। এখন আসল কাজগুলো পড়ে রয়েছে সামনে। অনেক দায়িত্ব, অনেক পরিকল্পণা, খুঁটিনাটি বিষয়-মূসা আজরাইলের কথাকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাই তার কথাকে ঠাট্টা মনে করে ভীষণ রাগান্বিত হলেন। তিনি তাকে জোরে এক চপোটাঘাত করলেন। চড়ের প্রচন্ডতায় আজরাইলের চক্ষু কোটর থেকে বের হয়ে এল। অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে সে প্রভুর দরবারে ফিরে গিয়ে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার এই বান্দা মৃত্যু চায় না, অধিকন্তু সে আমাকে মারধোর করে মুখের আকৃতি বদলে দিয়েছে।’
আল্লাহ তার চক্ষু ঠিক করে দিলেন। তারপর তাকে নির্দেশ দিলেন, ‘পুনঃরায় তার কাছে যাও। আর তাকে জিজ্ঞেস কর, সে কি চায়।’
ফেরেস্তা পুনঃরায় মূসার কাছে এসে বলল, ‘হে মূসা, তুমি কি চাও? দীর্ঘায়ূ? তাহলে কোন ষাঁড়ের কোমরের উপর হাত রাখ, এতে তোমার হাতের নিচে যতগুলি লোম থাকবে, আল্লাহর ইচ্ছায় তুমি ততবৎসর আরও আয়ূ লাভ করবে।’
মূসা- ‘অতঃপর কি হবে?’
আজরাইল- ‘মৃত্যু, কেননা জীবমাত্রই মৃত্যুর সাধ গ্রহণ করবে। সকলকেই তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তিত হতে হবে।’
মূসা বুঝতে পরলেন জ্রিব্রাইল তার সাথে ঠাট্টা করেনি, প্রকৃতই আল্লাহর ডাক এসেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ জ্রিব্রাইল ও আল্লাহর নিকট নিজের কর্মের দরুন অপরাধী হিসেবে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। অত:পর আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলে তিনি ফরিয়াদ করলেন, ‘হে আল্লাহ! মৃত্যুর আগে তুমি আমাকে পবিত্র ভূমির নিকটবর্তী কোরও। জর্দান পার হয়ে গিয়ে ঐ চমৎকার দেশটা আমাকে দেখতে দিয়ো।’
আল্লাহ জানালেন, ‘জর্দান নদী অতিক্রম করা তোমার হবে না। সুতরাং তুমি পিসগার চূঁড়ায় আরোহণ করে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টি ফেরাও। আর উত্তরাধিকারী মনোনীত কর, যে নেতৃত্ব দিয়ে যে দেশটা তুমি দেখতে যাচ্ছ তা ইস্রায়েলীদেরকে দিয়ে অধিকার করাবে।’
প্রভুর অভিপ্রায় জানতে পেরে মূসা আর অগ্রসর না হয়ে ইস্রায়েলীদেরকে নিয়ে বৈৎপিয়োরের উল্টোদিকের উপত্যকায় তাম্বু ফেললেন।
মূসা জেনে গিয়েছেন তার জীবনের শেষ সময় এসে গেছে, তাই তিনি জরুরী কাজগুলি দ্রুত সম্পন্ন করতে লাগলেন। যেমন- লেবী গোত্রের জন্যে নগর মনোনীত করা, প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমানা ঠিক করা, লোকগণনা করা এবং উত্তরাধিকারী নেতা নির্বাচন করা প্রভৃতি।
ম্যাপে নবী মূসার সমাধি। |
সকল কাজ শেষে মূসা (Moses) ইস্রায়েলীদের উদ্দেশ্যে বিদায়ী ভাষণ দেয়ার জন্যে তাদেরকে সমবেত করলেন। তার এই বিদায়ী ভাষণ বা বক্তৃতামালা ছিল ভাবগম্ভীর, বেদনাপূর্ণ ও একটি স্মরণীয় ঘটনা। তার মূল্যবান বক্তৃতার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইস্রায়েলীদের এ বিষয়ে বুঝতে সাহায্য করা যে, মহান আল্লাহ তাদের জন্যে কত কি করেছেন, তাঁর উপর তারা কতটা নির্ভরশীল ছিল এবং সারা জীবনের জন্যে তাঁর কাছে তাদের শর্তহীন বাধ্য থাকা কত প্রয়োজন। বক্তৃতার প্রধান বিষয় হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতার শাস্তি এবং বাধ্যতার পুরস্কার। আল্লাহর প্রতি বাধ্যতাই হচেছ ন্যায়, সত্য ও মুক্তির পথ।
মূসা ইস্রায়েলীদের উদ্দেশ্যে যে বিদায়ী ভাষণ দেন তা ছিল এমন-
‘-হে বনি ইস্রায়েল!
আমি তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালক খোদার সমস্ত নিয়ম ও নির্দেশ পৌছে দিয়েছি। তোমরা যত্ন ও নিষ্ঠার সঙ্গে যথাযথভাবে তা পালন করবে। স্মরণ রাখবে একমাত্র তিনিই আসমান এবং জমিনের অধিপতি।
--হে বনি ইস্রায়েল!
মূসার সমাধি কমপ্লেক্স। |
একদিকে লোহিত সাগর থেকে প্যালেস্টীয়দের দেশের সাগর পর্যন্ত এবং অন্যদিকে মরুএলাকা থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত তোমাদের দেশের সীমানা খোদা নিজেই স্থির করে দেবেন। সেই দেশে যারা বাস করছে তাদের সঙ্গে কিম্বা তাদের দেবদেবতাদের সঙ্গে কোন চুক্তি করবে না। তা করলে তারা তোমাদেরকে পাপের পথে নিয়ে যাবে- তোমরা তাদের দেবদেবতাদের ফাঁদে আটকা পড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।
--হে বনি ইস্রায়েল!
তোমরা নির্দোষ কিম্বা সৎ কিম্বা তোমাদের সংখ্যাধিক্যের জন্যেই যে খোদা তোমাদের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন এবং অন্যান্য জাতিদেরকে তোমাদের সম্মুখ থেকে বিতাড়িত করে তাদের দেশটা তোমাদের অধিকারে এনে দিচ্ছেন তা কিন্তু নয় বরং তিনি ইব্রাহিম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা পূর্ণ করার জন্যেই এই চমৎকার দেশটা যেখানে দুধ, মধু কোনটারই অভাব নেই তা দিচ্ছেন।
তোমাদের প্রতি মহান খোদার দয়া ও করূণার কথা স্মরণ কর। স্মরণ কর, চল্লিশটা বৎসর কিভাবে তোমাদের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে মরুএলাকার মধ্যে দিয়ে তিনি পরিচালিত করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তোমাদের পরিধেয় পোষাক নষ্ট হয়নি এবং পদ যুগলও ভারী হয়ে যায়নি। তোমাদের দর্প চূর্ণ করতে এবং বাধ্যতা পরীক্ষায় ফেলে দেখতে তিনি এসব কাজ করেছেন। তোমরা ক্ষুধার্ত হলে- আকাশ থেকে খাদ্য মান্নার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যে মান্নার কথা তোমাদের বা তোমাদের পূর্বপুরুষদের অজানা ছিল। তোমরা পিপাসার্ত হলে পাথর থেকে নির্ঝরিণীর সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এভাবে তিনি তোমাদেরকে এই শিক্ষা দিতে চেয়েছেন যে, মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না, কিন্তু তাঁর মুখের প্রত্যেকটি কথাতেই বাঁচে। কাজেই তোমরা তাঁর আদেশ পালন করবে, তাঁর পথে চলবে এবং তাঁকে ভক্তি করবে।
--হে বনি ইস্রায়েল!
খোদা বলেছেন- ‘যদি তোমরা আমার বিধিপথে চল, আমার আজ্ঞাসমূহ পালন কর, তবে আমি যথাকালে তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করব; তাতে ভূমি শস্য উৎপন্ন করবে ও বৃক্ষ সকল স্ব-স্ব ফল দেবে। তোমাদের শস্য মর্দ্দনকাল দ্রাক্ষা চয়নকাল পর্যন্ত থাকবে ও দ্রাক্ষা চয়নকাল বীজ বপনকাল পর্যন্ত থাকবে; এবং তোমরা তৃপ্তি পর্যন্ত অন্ন ভোজন করবে, ও নিরাপদে নিজ দেশে বাস করবে। আর আমি দেশে শান্তি প্রদান করব। তোমরা শয়ন করলে কেহ তোমাদেরকে ভয় দেখাবে না; এবং আমি তোমাদের দেশ হতে হিংস্র জন্তুদেরকে দূর করে দেব; ও তোমাদের দেশে তরবারী ভ্রমণ করবে না। আর তোমরা নিজেদের শত্রুগণকে তাড়িয়ে দেবে, তোমাদের পাঁচজন এক শত জনকে এবং একশত দশ সহস্রকে ও তারা তোমাদের সম্মুখে তরবারীতে পতিত হবে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রসন্নবদন হব, তোমাদেরকে ফলবন্ত ও বহুবংশ করব ও তোমাদের সাথে আমার নিয়ম স্থির করব। আর তোমরা সঞ্চিত পুরাতন শস্য ভোজন করবে ও নুতনের সম্মুখ হতে পুরাতন শস্য বের করবে। আর আমি তোমাদের মধ্যে আপন আবাস রাখব, আমার প্রাণ তোমাদেরকে ঘৃণা করবে না। আর আমি তোমাদের মধ্যে গমনাগমন করব ও তোমাদের খোদা হব এবং তোমরা আমার প্রজা হবে।’
--হে বনি ইস্রায়েল!
তোমরা সেখানে পানাহারে তৃপ্ত হবার পর খোদা প্রদত্ত ঐ চমৎকার দেশটার জন্যে তাঁর প্রশংসা করবে। তোমরা সতর্ক থাকবে যেন শয়তান তোমাদেরকে তাঁর আদেশ-নির্দেশ ভুলিয়ে না দেয়। আর যদি তোমরা কখনও তাঁকে ভুলে গিয়ে দেবদেবতার পিছনে যাও এবং তাদের সেবায় ও পূজায় লিপ্ত হও, তবে আমি এ কথা নিশ্চয় করে বলছি যে, তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে। তোমাদের বাসস্থান ও ক্ষেত-খামারের সবকিছুতেই তোমরা অভিশপ্ত হবে। তোমরা বুনবে অনেক কিন্তু কাটবে কম।
--হে বনি ইস্রায়েল!
জর্দান নদী পার হয়ে যাওয়া আমার হবে না। আমার অবর্তমানে ইউশায়াই তোমাদের নেতৃত্ব দেবে।
ক্ষণকাল বিরতি নিয়ে তিনি আরও বললেন, ‘আমি তোমাদের মধ্যে বেঁচে থাকতেই যখন তোমরা খোদার বিরুদ্ধে এত এত বিদ্রোহ করেছ তখন আমার অবর্তমানে আরও কত বেশী করেই না তা করবে!’- ব্যবস্থা পুস্তক হাতে নিয়ে তিনি উঁচুতে তুলে ধরলেন এবং বললেন, ‘এখন থেকে এই ব্যবস্থা পুস্তকটা সাক্ষ্য সিন্দুকের পাশেই রাখা থাকবে। আর সেখানে তা থাকবে তোমাদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী হয়ে।’
ইস্রায়েলীরা মূসার অবর্তমানে নিজেদের অবস্থা ভেবে চিন্তিত হল। তারা কান্নাকাটি করতে লাগল। মূসা তাদেরকে সান্তনা দিলেন আর জানিয়ে দিলেন ঈসা ও মুহম্মদের আগমন বাণী। তিনি বললেন, ‘খোদা বলেছেন, ‘আমি তাদের ভ্রাতৃদিগের মধ্য হতে তোমার মতই একজন পয়গম্বর উত্থিত করব এবং তার মুখে আমার বাণী প্রকাশ করব। সে তোমাদেরকে আমি যা আদেশ করব তাই-ই শুনাবে এবং এ অবশ্যই ঘটবে যে, তার মুখ নিঃসৃত আমার সেই বাণী যারা শুনবে না তাদেরকে আমি শুনতে বাধ্য করব।’
ইস্রায়েলীদের প্রতি মূসার শেষ আশীর্বাদবাণী ছিল এই-
‘প্রভু সিনাই থেকে এলেন,
তিনি সেয়ীর থেকে তাদের উপর আলো দিলেন;
তার আলো পারণ পাহাড় থেকে ছড়িয়ে পড়ল।
তিনি লক্ষ লক্ষ পবিত্র স্বর্গদূতের মাঝখান থেকে এলেন;
তার ডান হাতে রয়েছে তাদের জন্যে
এক জীবন্ত আইন গ্রন্থ।’
পিসগা। মোয়াবের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। পাদদেশে মূসা ও ইউশায়া। তারা উভয়ে চূঁড়ার দিকে দৃষ্টি ফেললেন। পাথরের এক স্তম্ভ যেন শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ ভেদ করে। মূসা ইউশায়াকে বললেন, ‘তুমি শক্তিশালী হও ও মনে সাহস আন, কারণ তোমাকেই এই বিদ্রোহী জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং সেই দেশে নিয়ে যেতে হবে, যে দেশটা তাদেরকে দেবার প্রতিজ্ঞা খোদা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলেন। আর তোমাকেই সেই দেশটা সম্পত্তি হিসেবে এদের মধ্যে বন্টন করতে হবে। ভয় কোরও না, নিরুৎসাহিত হইও না। সর্বশক্তিমান খোদা তোমার সহায় হবেন।’
মূসা ইউশায়াকে বিদায় করে দিয়ে একাকী এই পর্বতে আরোহণ করলেন। সেখান থেকে তিনি আগ্রহ আর উত্তেজনা নিয়ে প্রতিজ্ঞাত দেশের সমৃদ্ধি দেখতে লাগলেন। দেখলেন জর্দান নদীর গভীর খাদের পশ্চিম দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে ইস্রায়েলীদের ভবিষ্যৎ বাসভূমি, যেখানে তিনি কখনই যেতে পারবেন না। তার অন্তরে আফসোস থাকলেও আত্মতৃপ্তিও ছিল। কেননা তিনি রেখে যাচ্ছেন এক শক্তিশালী জাতিকে যারা প্রতিজ্ঞাত ঐ দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়।
মূসার শেষ দেখাটা হয়েছিল বিকেলে যখন বিদায়ী সূর্য্য তার আলো কনানের বিশেষ বিশেষ এলাকার উপর ফেলেছিল। দেখা শেষে আল্লাহ তার মনে ঐ দেশের গৌরবময় দর্শণ সতেজ থাকতেই তার জীবনাবসান করেছিলেন। তারপর ফেরেস্তারা তাকে বৈৎ পিয়োরের সম্মুখস্থ উপত্যকাতে সমাহিত করেছিল। এই কারণে তার সমাধি আজ পর্যন্ত কেউই সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারেনি।
ঐশ্বরিক শক্তির প্রভাব বাদ দিয়ে সাধারণ ইতিহাসের আলোকে বিচার করলেও পৃথিবীর নথিপত্রে মূসার মত এমন ব্যক্তি দুর্লভ যিনি নিজের ও মানবজাতির ভাগ্যের মুক্তির জন্যে এত বেশী ও স্থায়ী প্রভাব ফেলেছেন।
পিসগা। মোয়াবের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। পাদদেশে মূসা ও ইউশায়া। তারা উভয়ে চূঁড়ার দিকে দৃষ্টি ফেললেন। পাথরের এক স্তম্ভ যেন শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ ভেদ করে। মূসা ইউশায়াকে বললেন, ‘তুমি শক্তিশালী হও ও মনে সাহস আন, কারণ তোমাকেই এই বিদ্রোহী জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং সেই দেশে নিয়ে যেতে হবে, যে দেশটা তাদেরকে দেবার প্রতিজ্ঞা খোদা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলেন। আর তোমাকেই সেই দেশটা সম্পত্তি হিসেবে এদের মধ্যে বন্টন করতে হবে। ভয় কোরও না, নিরুৎসাহিত হইও না। সর্বশক্তিমান খোদা তোমার সহায় হবেন।’
মূসা ইউশায়াকে বিদায় করে দিয়ে একাকী এই পর্বতে আরোহণ করলেন। সেখান থেকে তিনি আগ্রহ আর উত্তেজনা নিয়ে প্রতিজ্ঞাত দেশের সমৃদ্ধি দেখতে লাগলেন। দেখলেন জর্দান নদীর গভীর খাদের পশ্চিম দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে ইস্রায়েলীদের ভবিষ্যৎ বাসভূমি, যেখানে তিনি কখনই যেতে পারবেন না। তার অন্তরে আফসোস থাকলেও আত্মতৃপ্তিও ছিল। কেননা তিনি রেখে যাচ্ছেন এক শক্তিশালী জাতিকে যারা প্রতিজ্ঞাত ঐ দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়।
মূসার শেষ দেখাটা হয়েছিল বিকেলে যখন বিদায়ী সূর্য্য তার আলো কনানের বিশেষ বিশেষ এলাকার উপর ফেলেছিল। দেখা শেষে আল্লাহ তার মনে ঐ দেশের গৌরবময় দর্শণ সতেজ থাকতেই তার জীবনাবসান করেছিলেন। তারপর ফেরেস্তারা তাকে বৈৎ পিয়োরের সম্মুখস্থ উপত্যকাতে সমাহিত করেছিল। এই কারণে তার সমাধি আজ পর্যন্ত কেউই সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারেনি।
ঐশ্বরিক শক্তির প্রভাব বাদ দিয়ে সাধারণ ইতিহাসের আলোকে বিচার করলেও পৃথিবীর নথিপত্রে মূসার মত এমন ব্যক্তি দুর্লভ যিনি নিজের ও মানবজাতির ভাগ্যের মুক্তির জন্যে এত বেশী ও স্থায়ী প্রভাব ফেলেছেন।
সমাপ্ত।
ছবি: Wikipedia.
ছবি: Wikipedia.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন