খ্রী:পূ: ৫ম শতকে হিমালয়ের পাদদেশে তরাই অঞ্চলে শাক্য জাতির বসবাস ছিল। ক্ষত্রিয় বংশে জন্মগ্রহণকারী শুদ্বোধন ছিলেন এই জাতির রাজা। রাজা শুদ্বোধনের স্ত্রী, রানী মায়াদেবী গর্ভবতী হলে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সন্তান জন্মদানের সময় পিতৃগৃহের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গেলে যাত্রা স্থগিত করে কপিলাবস্তুর নিকটবর্তী লুম্বিনী উদ্যানে এক অশ্বথবৃক্ষের তলে আশ্রয় নেন রানী এবং একসময় বেদনায় অস্থির হয়ে ঐ বৃক্ষের শেকড় আঁকড়ে ধরেন তিনি। এভাবে উন্মুক্ত নীল আকাশের নীচে, নির্জন প্রকৃতির মাঝে ৫১৮ খৃষ্টপূর্ব সিদ্ধার্থ বা গৌতমবুদ্ধের ধরায় আগমন হয়।
বুদ্ধের জন্মস্থান (মায়াদেবী টেম্পল), লুম্বিনী, নেপাল। |
কিছুদিন পরে কপিলাবস্তু নগরে এক সন্যাসী আগমন করেন। রাজা শুদ্বোধন সন্যাসীতে ডেকে এনে ছেলের ভাগ্য গণণা করতে আদেশ করেন। ঐ সন্যাসী সিদ্ধার্থকে দেখে ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, সে হবে সংসার ত্যাগী এক মহামানব। জরা ব্যাধি রোগ-শোক তাকে সংসারত্যাগী করবে। সন্যাসীর কথায় চিন্তিত হয়ে পড়লেন রাজা শুদ্ধোধন। মন্ত্রীরা পরামর্শ দিল সন্তানকে বিত্ত বৈভব, সুখ আর বিলাসিতার স্রোতে ভাসিয়ে দিতে যাতে সে সন্যাস জীবনের প্রতি অনাগ্রহী হয়ে উঠে।
শুদ্ধোধন ছেলের সুখ-স্বচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে চার ঋতুতে বসবাসের জন্যে উঁচু দেয়াল ঘেরা চারটি প্রাসাদ তৈরী করে দেন। এভাবে বিত্ত-বৈভব, প্রাচুর্য় আর বিলাসিতার মাঝে বেড়ে উঠতে লাগলেন সিদ্ধার্থ। এদিকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে উঁচু দেয়ালের বাইরের জীবন কেমন তা জানতে তিনি কৌতুহলী হয়ে পড়লেন। দীর্ঘকাল ছেলেকে নিরূৎসাহিত করতে পারলেও কোন এক উৎসবের সময় তার নিদারূণ আগ্রহের কারণে রথে চড়ে নগরী ঘোরার অনুমতি দিতে বাধ্য হলেন রাজা। সাথে সাথে তিনি নগরীর সর্বত্র উৎসবের আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরীরও আদেশ দিয়ে দিলেন।
প্রথমদিন নগরী ঘুরে ফেরার পথে এক বৃদ্ধ ব্যক্তির সাথে দেখা হল সিদ্ধার্থর। তিনি রথ থামিয়ে অবাক হয়ে বৃদ্ধকে দেখতে লাগলেন। চামড়া ঝুলে পড়া, সফেদ কেশী, দন্তহীন বৃদ্ধ কুঁজো হয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে ধীর গতিতে হেঁটে চলেছে। মানুষের এই পরিণতি দেখে সিদ্ধার্থর সমস্ত মন বিচলিত হয়ে পড়ল। তিনি ভারাক্রান্ত মনে প্রাসাদে ফিরে গেলেন।
দ্বিতীয় দিন ফেরারপথে বৃক্ষতলে শায়িত যন্ত্রণাকাতর এক অসুস্থ্য মানুষকে দেখে বিমর্ষ হয়ে পড়লেন সিদ্ধার্থ। একি যৌবণেও তো সুখ নেই; যে কোন সময় ব্যাধি এসে সব সুখ কেড়ে নিতে পারে।
তৃতীয়দিন নগরী ঘোরার সময় এক শবযাত্রার মুখোমুখি হলেন সিদ্ধার্থ। ক্রন্দনরত একদল পরিজন শবের পিছে পিছে চলেছে। সিদ্ধার্থ বিষন্ন হয়ে পড়লেন। এ দেখে সারথী ছন্দক বলল, "সকল জীবনের পরিণতি এই মৃত্যু। জরা-ব্যাধি রোগ-শোকের কারণেই এ জীবন দু:খময়। ধন-সম্পদ, রাজ্য-রাজত্বসহ মায়া বিজড়িত এ গৃহ-সংসার, কোন কিছুই এ ধরায় স্থায়ী নয়।”
"মৃত্যুই যদি সকল জীবনের অন্তিম পরিণতি হয়, তবে এই জীবনের সার্থকতা কোথায়?” -সিদ্ধার্থর অনুসন্ধিৎসূু মনে এসময় এই প্রশ্ন জেগে উঠল।
চতুর্থদিন নগরীতে সিদ্ধার্থর সাথে দেখা হল এক সন্যাসীর। তিনি রথ থামিয়ে তাকে তার সন্যাস গ্রহণের কারণ জানতে চাইলে ঐ সন্যাসী তাকে জানায় যে এ ধরায় সব কিছুই অনিত্য, আর তাই সে অবিনশ্বর, চিরন্তন সত্যের সন্ধানে বের হয়েছে।
এ ধরায় ধন-সম্পদ, রাজ্য-রাজত্ব, মায়া বিজড়িত এ গৃহ-সংসার, কোন কিছুই স্থায়ী নয়-জরা ব্যাধি রোগ শোকে পূর্ণ এ জগৎ দু:খময়- এই চরম সত্যগুলো সিদ্ধার্থের নিকট সুস্পষ্ট হয়। এতে জীবনের মুক্তির জন্যে দু:খের কারণ ও তার প্রতিকার জানা তার জন্যে অপরিহার্য হয়ে ওঠে। রাজপ্রাসাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরা ঐ বিলাসী জীবনের সবকিছুই তার কাছে তুচ্ছ হয়ে গেল। তিনি চিন্তাশীল ও উদাসীন হয়ে পড়লেন।
সিদ্ধার্থের এই ভাবান্তরে পিতা শুদ্বোধন তাকে সংসারের মায়ায় বেঁধে ফেলতে ৫০২ খ্রী:পূ: মাত্র ষোল বৎসর বয়সে বিবাহ দিলেন গোপা নাম্নী এক রাজকুমারীর সাথে। এই গোপা-যশোধরা, বিম্বা, শুভদ্রকা নামেও পরিচিত। তের বৎসর সংসার যাপনের পর ৪৮৯ খ্রী;পূ: রাহুল নামে তাদের এক পুত্রসন্তান জন্ম গ্রহণ করে। এই সন্তান জন্মগ্রহনের পরই ২৯ বৎসর বয়সের সময় তিনি বিলাসী জীবন-যাপন ও সংসারের মায়া ত্যাগ করে জীবনের মুক্তির পথ খুঁজতে সকলের অগোচরে গভীর রাতে প্রাসাদ ত্যাগ করেন।
এই স্থানে বুদ্ধ বোধিলাভ করেন। |
তপস্যার ঐ দিনগুলোতে তিনি এক ধরণের ঘোরের মত (Ecstatic Trance) অনুভব করেছিলেন যা স্থায়ী হয়েছিল সাত সপ্তাহ। আর ঐ দিনগুলোতেই তিনি উপলব্ধি করেন the experiences of deliverance.
কিম্বদন্তি রয়েছে- যে সময় বুদ্ধ উরুবিল্ব আগমন করেন, ঐ সময় সেনানী (Senani) নামক নিকটবর্তী এক গ্রামের এক ধণিক কৃষক পরিবারে সুজাতা নামের এক অপরূপা কুমারী কন্যা বসবাত করত। এই নারী তার উপযুক্ত একজন স্বামী এবং সন্তানের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু তার আশা পূরণ হচ্ছিল না। লোকেরা তাকে উপদেশ দিল, সে যেন নিরঞ্জনা নদীর তীরস্থ এক নির্দিষ্ট বটবৃক্ষের তলে গিয়ে বৃক্ষদেবতার (Tree-god) নিকট কাঙ্খিত স্বামী ও সন্তানের জন্যে প্রার্থনা করে। সে তাদের কথামতই করল, আর খুব শীঘ্রই তার বিবাহ হয়ে গেল। অত:পর যখন তার কোলে এক সন্তান এল, তখন সে ভীষণ খুশী হল এবং বৃক্ষদেবতাকে এই দানের প্রতিদান দিয়ে খুশী করতে চাইল।
সুজাতার এক বিশাল গো-পাল ছিল। সে তখন তার পাল থেকে এক হাজার গাভী বেঁছে নিয়ে সেগুলিকে কয়েকদিন মধু মিশ্রিত খড় খাওয়াল। তারপর তাদের দুধ সংগ্রহ করে ঐ এক হাজার গাভীর মধ্য থেকে উত্তম ৫০০টি বেঁছে নিয়ে তাদের পান করাল। তারপর সেগুলির সংগৃহীত দুধ পান করাল ঐ ৫০০ গাভীর মধ্য থেকে উত্তম ২৫০টিকে। এভাবেই চলল যতক্ষণ না গাভীর সংখ্য দাঁড়াল ৮টিতে। সে এমনটি করেছিল কেবলমাত্র উত্তম স্বাদের অতি পুষ্টিকর দুধ পাবার জন্যে।
যাহোক, আট গাভীর সংগৃহীত দুধ দিয়ে সুজাতা বৃক্ষদেবতার জন্যে পায়েস রান্না করতে বসল এবং তার কয়েকজন ভৃত্যকে পাঠিয়ে দিল ঐ বটগাছের চারিদিকের জঙ্গল ও ঘাস-পাতা পরিস্কার করার জন্যে। এদিকে সে যখন পায়েস রান্না শেষ করেছে, ঠিক তখনই তার এক ভৃত্য হন্তদন্ত হয়ে ছূটে এল এবং বলল, ’হে আমাদের কর্ত্রী, আমরা তো দেখে এলাম বৃক্ষদেবতা স্বয়ং বটতলে ধ্যানে বসেছেন। আর আপনি কতই না ভাগ্যবতী যে স্বয়ং দেবতা আপনার দান গ্রহণের জন্যে উপস্থিত আছেন।’
এ সংবাদে আগ্রহ ও উত্তেজনা নিয়ে সুজাতা দ্রুত ঐ পায়েস একটা স্বর্ণের বাটি পূর্ণ করে নিরঞ্জনা নদীর তীরস্থ নির্দিষ্ট ঐ বটপানে চলল। তারপর যখন সেখানে পৌঁছিল, সে দেখতে পেল সত্যিই এক সৌম্য-শান্ত, পবিত্র লোক ঐ বটতলে ধ্যানে রয়েছেন। সুজাতা তাকে বৃক্ষদেবতা জ্ঞান করল, কেননা তার জানা ছিল না যে এই তপস্বী দেবতা নন স্বয়ং মহারাজ গৌতম।
সুজাতা পায়েসের বাটিটি ধ্যান-মগ্ন গৌতমের সামনে রেখে অতি সাবধানে উপুড় হয়ে (সাষ্টাঙ্গে) সম্মান জানিয়ে প্রার্থনা জানাল, ”প্রভু, আমার এই সামান্য দান গ্রহণ করুন। আমি যেমন সফলতা লাভ করেছি, তেমনি আপনার মনের ইচ্ছেও নিশ্চয় পূর্ণ হবে।”
সিদ্ধার্থ গৌতম ঐ পায়েস ৪৯ ভাগে ভাগ করেছিলেন, প্রতিদিনের জন্যে একভাগ, যতদিন না তিনি বোধি লাভ করেন।
৪৯তম দিনে বুদ্ধের ধ্যান ভঙ্গ হলে তিনি শেষবারের মত খাবার খেয়ে তার আসন থেকে উঠে নিরঞ্জনা নদীর তীরে স্নানের উদ্দেশ্যে গেলেন। তিনি নদীর পানিতে নেমে মূল্যবান ঐ সোনার বাটিটি নদীতে ছুঁড়ে ফেলে বলেছিলেন, ”যদি আমি আজ বুদ্ধ হয়ে থাকি, তবে এই বাটি স্রোতের প্রতিকূলে ভেসে যাক, আর যদি না হয়ে থাকি তবে তা অনুকূলে যাক।” - এতে ঐ বাটি নদীর মাঝ বরাবর স্রোতের প্রতিকূলে ভেসে গেল।
এই হল বুদ্ধের বোধিলাভের ঘটনা। কিন্তু আমাদের আলোচ্য বিষয় কিন্তু এটি নয় বরং তা বুদ্ধের ভিক্ষাবাটি প্রসঙ্গ নিয়ে। তার এই ভিক্ষাবাটি বৌদ্ধধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং তার বোধিলাভের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িয়ে রয়েছে এর উপাখ্যান। আর এই উপাখ্যান ও অন্যান্য উপকথা এবং এই বাটির মহৎ সন্যাস ব্যবহারের সাথে সম্বন্বিত হয়ে সাধারণ এক ভিক্ষাবাটিকে বুদ্ধের পার্থিব সম্পদ ও মোহ থেকে বিযুক্তি শিক্ষার প্রতীক (Symbol) করে তুলেছে। বুদ্ধের পাথরের ভিক্ষাবাটি তাৎপর্য্য বহন করে পার্থিব উপাদানের এবং তা প্রকাশিত হয়েছে এর ময়ূরপঙ্খীবর্ণে (Purple Color)। গান্ধারা ধর্মগ্রন্থে বুদ্ধের ভিক্ষাবাটির নিম্নোক্ত উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে-
পদ্মফুল |
কিন্তু, বুদ্ধ ঐ স্বর্ণের ভিক্ষাবাটি গ্রহণ করতে অস্বীকার করলেন এইজন্যে যে, মূল্যবান ঐ পাত্র একজন তপস্বীর জন্যে সম্পূর্ণ বেমানান। তখন ঐ চার দেবতাগণ তুলনামূলক কম মূল্যমানের পাত্র একে একে হাজির করলেন। তবে সবই প্রত্যাখ্যাত হল, যতক্ষণ না তারা পাথরের তৈরী বাটি হাজির করলেন। আর যখন পাথরের ভিক্ষাবাটি গ্রহণে বুদ্ধ সম্মত হলেন, তখন দেবতারা প্রত্যেকেই চাইছিলেন তিনি যেন তার দেয়া বাটিটিই গ্রহণ করেন, যাতে এর দ্বারা ঐ দেবতা সম্মানিত হন। কিন্তু বুদ্ধ কাউকে এককভাবে নয়, বরং তিনি সকলকে সম্মানিত করতে একটি বাটির মধ্যে অপর তিনটিকে একে একে স্থাপন করে অলৌকিক ক্ষমতাবলে সবগুলিকে একটিতে রূপান্তরিত করেন।
বুদ্ধের ভিক্ষাবাটি। |
আর তাই Begging Bowl বা Alms Bowl খুবই সাধারণ একটি বাটি হলেও একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর (Buddhist monk) প্রত্যাহিক জীবনে তা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বস্তু। মূলত: এটি তাদের সামান্য কয়েকটি বাসন-কোসনের মধ্যে একটি যা তারা নিজের জন্যে ব্যবহারের অনুমতি প্রাপ্ত। প্রথমিকভাবে এটা একটা ব্যবহার্য বস্তু যা পাত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয় সাধারণ অনুসারীদের নিকট থেকে দান গ্রহনের নিমিত্তে। বিনয়া (Vinaya)-তে বর্ণনা করা হয়েছে, ভিক্ষুগণ পোড়ামাটি বা লৌহ নির্মিত ছোট, মাঝারী বা বৃহৎ আকৃতির বাটি ব্যবহার করতে পারবেন। পালি (Pali)-তে এই ভিক্ষাবাটিকে বলে পাট্টা (Patta) এবং সংস্কৃতে (Sanksrit) পাত্রা (Patra)।
ভিক্ষাবাটি হাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ। |
সবুজাভ ধূসর গ্রানাইট পাথরের তৈরী অর্ধাগোলাকার এই বাটির ব্যস ১.৭৫ মি. উচ্চতা প্রায় ০.৭৫ মি.। আর এর প্রান্তের দিকের পুরুত্ব প্রায় ১৮ সে.মি. যদিও এটির মাঝের অংশ এবং তলা তুলনামূলকভাবে বেশী পুরু। এতে কোন জোঁড়ের চিহ্ন নেই, তবে প্রান্তের দিকে হাতের তালুর মত খাঁজ দৃশ্যমান। সুক্ষ্ম পদ্ম পাঁপড়ির নকশা বাটালির সাহায্যে খোঁদাই করা হয়েছে এর তলদেশের চারিদিকে। দেখে মনে হবে যেন পুরো বাটিটি বসান হয়েছে একটা পদ্মফুলের উপর। বাটির তলদেশে পদ্মের পাপড়ির নকশা মূলত: বুদ্ধের অতীত সত্যায়ণ করছে। এই ভিক্ষাবাটিটিকে বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ (Mahaparinirvana) বা মৃত্যুর পর হাজার বৎসর ধরে বৌদ্ধধর্ম অবলম্বীগণ মহা শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে গণ্য করে এসেছে।
কাবুল জাতীয় জাদুঘর, আফগানিস্থান। |
এই পদ্মফুল অবশ্য বৌদ্ধধর্মপথের আরও অনেক দিকই নির্দেশ করে, যেমন- এটা জন্ম নেয় পঙ্কিলে (Samsara), উঠে আসে পরিস্কার পানির মধ্যে দিয়ে (Purification), এবং এভাবে গভীর থেকে উঠে এসে একটা সুন্দর ফুল উৎপন্ন করে (Enlightenment). অন্যভাবে বলা যায়, the white blossom represents purity, the stem stands for the practice of Buddhist teachings which raise the mind above the (mud of) worldly existence, and gives rise to purity of mind. একটা ফোঁটা পদ্ম (Open Blossom) তাৎপর্য বহন করে পূর্ণ আলোকিত হওয়ার (Full Enlightenment). অন্যদিকে কূঁড়িপদ্ম বোঝায় আলোকিত হওয়ার সম্ভাবনা (Potential for enlightenment).
Alexander Cunningham. |
প্রথম বা দ্বিতীয় শতাব্দীতে রাজা কনিস্ক বৈশালী আক্রমণ করে এই ভিক্ষাবাটিকে পুষ্পপুরায় (বর্তমানে পাকিস্তানের পেশোয়ারে) নিয়ে যান। চীনা তীর্থযাত্রী দল এটি সেখানে তৃতীয় ও নবম শতাব্দীর মাঝে দেখেছে বলে উল্লেখ আছে। গান্ধারা চিত্রের অসংখ্য শিল্পকর্ম বিশেষত: পদ্ম পাঁপড়ির উপর বুদ্ধের মূর্ত্তি এই বাটির গুরুত্ব সত্যায়ণ করে।
ইসলামিক শাসনামলে মুসলিমগণ এই বাটির মর্যাদা ও পবিত্রতা অনুধাবণ করে। ফলে এটি এক স্থান (বা কোন মসজিদ) থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের কাজ চলে যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটি বর্তমান আফগানিস্থানের কান্দাহারের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত সুলতান ওয়েজ বাবার মাজার তথা সমাধি শিয়রে স্থাপিত না হয়। সম্ভবত: এই স্থানান্তর চলাকালীন কোন এক সময় এর অভ্যান্তর ও বহির্ভাগের পরিধি জুড়ে আনুভূমিকভাবে ছয় সাঁরি কোরআনের আয়াত খোঁদিত হয়। যা হোক, এটি ওয়েজ বাবার মাজারে কখন পৌঁছেছিল তা জানা যায় না, তবে উনিশ’শ শতকে কিছু ব্রিটিশ অফিসার এটিকে সেখানে দেখেছে বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। এই অফিসারদের একজন বাটিতে খোঁদিত বাণী অনুবাদের চেষ্টা চালান এবং অপর একজন Alexander Cunningham, trying to trace its history.
ইসলামিক শাসনামলে মুসলিমগণ এই বাটির মর্যাদা ও পবিত্রতা অনুধাবণ করে। ফলে এটি এক স্থান (বা কোন মসজিদ) থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের কাজ চলে যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটি বর্তমান আফগানিস্থানের কান্দাহারের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত সুলতান ওয়েজ বাবার মাজার তথা সমাধি শিয়রে স্থাপিত না হয়। সম্ভবত: এই স্থানান্তর চলাকালীন কোন এক সময় এর অভ্যান্তর ও বহির্ভাগের পরিধি জুড়ে আনুভূমিকভাবে ছয় সাঁরি কোরআনের আয়াত খোঁদিত হয়। যা হোক, এটি ওয়েজ বাবার মাজারে কখন পৌঁছেছিল তা জানা যায় না, তবে উনিশ’শ শতকে কিছু ব্রিটিশ অফিসার এটিকে সেখানে দেখেছে বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। এই অফিসারদের একজন বাটিতে খোঁদিত বাণী অনুবাদের চেষ্টা চালান এবং অপর একজন Alexander Cunningham, trying to trace its history.
কাবুল জাতীয় জাদুঘরে বুদ্ধের ভিক্ষাবাটি। |
"Based on the verdict of the clergymen and the decision of the supreme court of the Islamic Emirate (Taliban) all the statues around Afghanistan must be destroyed."
এই আদেশে যদিও জাদুঘরে রক্ষিত সমস্ত বৌদ্ধ শিল্পকর্ম ধ্বংস করা হয়েছিল, তথাপি বুদ্ধের এই ভিক্ষাবাটিটি অক্ষত রয়ে যায়। নি:সন্দেহে এটি রক্ষা পেয়েছিল এতে খোঁদিত কোরআনের আয়াতের কারণে। বর্তমানে এই ভিক্ষাবাটি কাবুল জাতীয় জাদুঘরের প্রবেশ পথে প্রদর্শিত হচ্ছে- as a reflection of its Islamic continuum and its status through the ages as an object of special religious interest.
সমাপ্ত।
উৎস:
উৎস:
- Corpus Inscriptionum Indicarum. by Alexander Cunningham, Volume 1. (1877)
- The Stupa of Bharhut: A Buddhist Monument Ornamented with Numerous Sculptures Illustrative of Buddhist Legend and History in the Third Century B.C. by Alexander Cunningham, (1879)