শয়তানকে প্রবঞ্চনার গুরু মানতেই হয়, কেননা সে খৃষ্ঠধর্মে সফলভাবে পৌত্তলিকতার অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দৈনিন্দন জীবনকে পূর্ণ ও অর্থবোধক করেছে। উদাহরণ স্বরূপ ইষ্টার উৎসব। পৌত্তলিক এই উৎসবটির খৃষ্টায়নে শয়তান এমনই সফলতার পরিচয় দিয়েছে যে বর্তমানে পার্থিব জ্ঞান-গরিমায় এগিয়ে থাকা খৃষ্টানগণও বিনাপ্রশ্নে আজও তা পালন করে চলেছে। জয়তু শয়তান!
"T" বা Cross চিহ্ন যুক্ত কেক। |
ইস্টার ("Easter") এমনই একটা দিন, যেদিনটি খৃষ্টধর্মের সকল শাখার নিকট সম্মানীয়। এটি উৎযাপিত হয় যীশুখৃষ্টের পুনরুত্থান দিবস হিসেবে, উৎযাপিত হয় as the culmination of the Passion of Christ that preceded by
Lent, a forty-day period of fasting, prayer, and penance.
The last week of Lent is called Holy Week, and it contains the days
of the Easter Triduum, including Maundy Thursday/Holy Thursday, commemorating
the Last Supper and its preceding foot washing, as well as Good Friday,
commemorating the crucifixion and death of Jesus. Easter is followed by a
fifty-day period called Eastertide, or the Easter Season, ending with Pentecost
Sunday.
ঝুঁড়িতে রাখা চিত্রিত রঙীন ডিম। |
The
New Testament teaches that the resurrection of Jesus, which Easter celebrates,
is a foundation of the Christian faith. পবিত্র এই দিনটির সাথে জড়িত রয়েছে সূর্যোদয়ের সময় গীর্জায় প্রার্থণা ("Church Service" বা "Sunrise
Services") ও একটি ভোজ উৎসব যাতে আবশ্যিকভাবে থাকবে ইস্টার হাম ("Easter
Ham") অর্থাৎ শুকরের পিছনের পায়ের গ্রীল্ড রান, থাকবে কেক- যার উপর অঙ্কিত রয়েছে ইংরেজী "T" বা ক্রুশ চিহ্ন। ভোজ টেবিলটি সুন্দর করে সাঁজান থাকবে ঝুঁড়িতে রাখা চিত্রিত রঙীন ডিম দ্বারা। আর আনন্দময় পরিবেশে ভোজে আপ্যায়িতদের মুখে মুখে ফিরবে খরগোস সম্পর্কীয় নানান গল্প।
প্রকৃতই কি যিশু এদিনটিতে মৃত থেকে জীবিত হয়েছিলেন (আদৌ জীবিত হয়ে থাকলে)? আর এতসব অদ্ভূত প্রথাই বা এল কোত্থেকে যখন এগুলির সাথে জেসাসের পুনরুত্থানের কোন সম্পর্কই নেই? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রথমেই আমাদের বুঝতে হবে যে, খৃষ্টান সম্প্রদায়ই কেবল একক নয় যারা এই ইস্টার নামক উৎসবটি পালন করে থাকে, বরং এটি পালন করে অন্য একটি সম্প্রদায়ও যারা কিনা পৌত্তলিক। আর তাই এবার আমরা খুঁজে দেখব পৌত্তলিক ঐ সম্প্রদায়ের নিকট এদিনটির তাৎপর্য কি।
ইস্টার ("Ishtar"-উচ্চারণ "Easter") এমন একটি দিন, যেদিনটিকে প্রাচীন মেসোপটেমীয় পৌত্তলিকগণ তাদের দেবতাগণের একজন তাম্মুজের ("Tammuz") পুনরুত্থানকে স্মরণ করে উৎযাপন করে থাকে। তাম্মুজকে বিশ্বাস করা হত চন্দ্রদেবী (moon-goddess) ও সূর্যদেব (sun-god) এর একমাত্র পুত্র হিসেবে।
নমরুদ, সেমিরামিস ও তাম্মুজ। |
প্রাচীনকালে নমরুদ (Nimrod) নামে এক ক্ষমতাধর সম্রাট ছিলেন। এই নমরুদ হচ্ছেন নূহের প্রপৌত্র, হামের পৌত্র এবং কূশের পুত্র। নূহের পুত্র হামের কূশ (Cush) নামে এক পুত্র ছিল। এই কূশ বিবাহ করেছিলেন সেমিরামিস (Semiramis) নামের এক নারীকে। ধারণা করা হয় এই নমরুদ, কূশ ও সেমিরামিসের একমাত্র পুত্র সন্তান। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ২৫শে ডিসেম্বর। অত:পর যৌবনে পিতার মৃত্যুর পর নমরুদ তার মাতাকে বিবাহ করে নেন এবং শক্তিশালী এক সম্রাটে পরিণত হন। বাইবেল জানায়-
And
Cush begat Nimrod: he began to be a mighty one in the earth. He was a mighty
hunter before the LORD: wherefore it is said, Even as Nimrod the mighty hunter
before the LORD. And the beginning of his kingdom was Babel, and Erech, and
Accad, and Calneh, in the land of Shinar. -Genesis 10:8-10 (KJV)
নমরুদ জনসাধারণের নিকট দেব-মানবরূপে পরিগণিত হলেন এবং তার স্ত্রী ও মাতা সেমিরামিস, হয়ে ওঠেন প্রাচীন ব্যাবিলনের ক্ষমতাশালী রানী।
সেমিরামিস ও নমরুদ। |
পুরাণ বলে, নমরুদ ঘটনাক্রমে নিহত হলে হত্যাকারী ভীত হয়ে তার দেহ খন্ডিত করে তার দশ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেয়। আর রানী সেমিরামিস তার দেহের ঐসব খন্ডিত অংশ সংগ্রহ করেন, কিন্তু একটা অংশ কোথাও পাওয়া গেল না। ঐ হারিয়ে যাওয়া অংশটি ছিল নমরুদের জননেন্দ্রিয়। রানী সেমিরামিস তখন দাবী করেন যে, ঐ অংশ ব্যাতিত নমরুদ কখনও আর জীবন ফিরে পাবেন না। আর তিনি ব্যাবিলনীয়দের বলেন যে, নমরুদ সূর্য্যে আরোহণ করেছেন এবং এখন থেকে তাকে ডাকা হবে "বা’ল"-সূর্যদেবতা রূপে। সেমিরামিস আরও দাবী করেন যে, বা’ল পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবেন মোমবাতি বা কুপির অগ্নিশিখার আকারে যখন তা পূজা বা প্রার্থনায় ব্যবহার করা হবে।
সেমিরামিস এক রহস্যময় ধর্মের জন্ম দেন এবং শয়তানের সহযোগিতায় নিজেকে একজন দেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি জানান চন্দ্রদেবী ২৮ দিনের চক্রে চলে এবং ডিম্বাণু উৎপন্ন করে যখন তা পূর্ণতা পায়। তিনি আরও দাবী করেন যে, তার আগমন চন্দ্র থেকে বিশাল এক চন্দ্রডিম্ব আরোহণে যা পতিত হয়েছিল ইউফ্রেটিস নদীতে। আর এসব ঘটেছিল স্প্রিং spring
equinox-এর পরবর্তি পূর্ণ চন্দ্রের অর্থাৎ পূর্ণিমার দিনে।
সেমিরামিস পরিচিত হলেন ইস্টার হিসেবে এবং তার চন্দ্রডিম্ব (moon egg) পরিচিতি লাভ করল ইস্টারস এগ ("Ishtar's
egg") নামে।
গডমাতা সেমিরামিস। |
রানী সেমিরামিস একসময় দাবী করলেন তিনি অলৌকিকভাবে গর্ভধারণ করেছেন। সূর্যদেবতা বা’ল তার আলোকরশ্মি দ্বারা তাকে গর্ভধারণ করিয়েছেন। এভাবে তিনি যে পুত্রসন্তানটি জন্ম দিলেন তার নাম হল তাম্মুজ। আর প্রাচীন বাবিলীয়গণ এই তাম্মুজকে সূর্যদেব বা’লের সন্তান হিসেবে বিশ্বাস করে নিল। তাম্মুজের নিকট খরগোস খুব প্রিয় ছিল, আর তাই সেটিও প্রাচীন পৌত্তলিক ধর্মে পবিত্র হিসেবে গণ্য হল।
তাম্মুজ তার কথিত পিতার মত একজন শিকারী হয়েছিলেন। তারপর এমন একদিন এল, যেদিন এক বন্যশুকর তাকে হত্যা করে ফেলে। রানী ইস্টার এসময় লোকদেরকে বললেন যে, তিনি, তাম্মুজ উর্দ্ধারোহণ করেছেন তার পিতা বা’লের নিকট। আর তাদের দু’জনই উপাসনাকারীদের সাথে থাকবেন পবিত্র মোমবাতী বা কুপির অগ্নিশিখার আলোকে- পিতা, পুত্র ও আত্মা রূপে।
এভাবে রানী ইস্টার তার রহস্যময় ধর্মের বিস্তার ঘটাতে লাগলেন এবং লোকেরা তাকে গডমাতা ও স্বর্গের রানী হিসেবে উপাসনা করতে লাগল। রানী ইস্টার উপাসনাকারীদের বলেছিলেন যে, তাম্মুজ যখন বন্যশুকর দ্বারা নিহত হন, তখন তার কিছু রক্ত একটা চির সবুজ বৃক্ষের মরা গুঁড়িতে পড়েছিল। আর তাতে ঐ গুঁড়ি থেকে নতুন এক বৃক্ষ রাতারাতি বেড়ে ওঠে। তাম্মুজের রক্ত দ্বারা এভাবে চিরসবুজ বৃক্ষ (evergreen tree) পবিত্র হয়েছে। তিনি আরও দাবী করলেন যে, প্রতি বৎসর তাম্মুজের মৃত্যুবার্ষিকী উৎযাপনের পূর্বে ৪০ দিবসকাল দু:খের সময় হিসেবে পালন করা হবে এবং ঐ সময়কালে কোন মাংস খাওয়া চলবে না।
প্রতি বৎসর পূর্ণিমার পর- spring equinox-এর পরবর্তি প্রথম রবিবার একটা উৎসব উৎযাপিত হয়। এটাই ইস্টার সানডে ("Ishtar's Sunday") এবং এটি উৎযাপিত হয় with rabbits and eggs. উপাসনাকারীগণ এদিন বা’ল ও তাম্মুজের পবিত্র রহস্যময়তার উপর ধ্যান (meditate) করে এবং উপাসনার সময় ইংরেজী "T" চিহ্ন তাদের হার্টের সম্মুখে আঁকে। আর এদিন তারা শুকরের মাংস খায়, সাথে পবিত্র রুটি, যার উপর অঙ্কিত থাকে "T" বা ক্রুশ (cross) চিহ্ন। শুকরের মাংস খাওয়া প্রসঙ্গে ইস্টার জানিয়েছিলেন, যেহেতু তাম্মুজ শুকরের দ্বারা নিহত হয়েছিলেন, তাই এদিনটিতে ঐ মাংস খাওয়া আবশ্যিক।
উপরের এতসব তথ্য থেকে সচেতন পাঠক নিশ্চয় এখন বুঝতে পারছেন যে, তৎকালীন চার্চগুলোর দ্বারাই খৃষ্টধর্মে “ইস্টার” নামক এই পৌত্তলিক প্রথার অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করলে আমরা দেখতে পাব যে, পৌত্তলিকতার এই অনুপ্রবেশ ঘটেছে রোমান ক্যাথলিক সিস্টেমের মাধ্যমে। আর এইসব প্রথা ধর্মের অঙ্গ হিসেবে অঙ্গীভূত করতে সম্রাট কনস্টান্টাইনের বিরাট ভূমিকা ছিল। ৩২৫ সনের নিকাইয়ার সম্মেলনে পৌত্তলিক সম্রাট বিজ্ঞতার সাথে উপস্থিতদের খৃষ্টসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সকল ধর্মনেতাদের দ্বারা প্রণীত ও সত্যায়িত করে নিতে সক্ষম হন বেশকিছু ধর্মীয় মৌলিক নীতি ও আচার-অনুষ্ঠান। ফলে চূড়ান্ত ভাবে ঐসময় ত্রিত্ববাদ খৃষ্টানধর্মের মৌলিক মতবাদ হিসেবে গৃহীত হওয়ার পাশাপাশি এইমর্মে স্বীকৃত হয় যে-
রোমান সূর্য-দিবস (Sunday) হবে খৃষ্টানদের সাপ্তাহিক ধর্মীয় দিবস;
সূর্য-দেবতার প্রচলিত জন্মদিবস ২৫ডিসেম্বর যীশুর জন্মদিবস “বড়দিন” বা ক্রিস্টমাসডে (Christmas Day) বলে গণ্য ও পালিত হবে;
সূর্য-দেবতার প্রতীক আলোর ক্রুশ (Cross of Light) খৃষ্টবাদের প্রতীক হবে; এবং
সূর্য-দেবতার জন্মদিবসের সকল উৎসব অনুষ্ঠানকে খৃষ্টানদের উৎসব অনুষ্ঠান হিসেবে পালিত হবে। -আর এভাবে প্রচলিত হল ইস্টার।
পাদ্রী, পুরোহিতরা ঘোষণা দিলেন- ইস্টার, এটি যীশুর পুনরুত্থান (মৃত থেকে জীবিত) দিবস। ব্যাস, হয়ে গেল এটা খৃষ্টান বিশ্বাসের ভিত্তি। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই যে, আর যাই হোক না কেন, যীশুখৃষ্টের পুনরুত্থানের সঙ্গে ইস্টারের কোন সম্পর্ক নেই। যীশুখৃষ্টের সাক্ষাৎ শিষ্যগণ তাদের জীবিত অবস্থায় এধরণের কোন অনুষ্ঠান পালন করেননি বা পালন করার আদেশও কখনো কাউকে দেননি।
আমরা জানি, ইস্টার, পাসওভার থেকে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে, কেননা পৌত্তলিক হলিডে ("Pagan Holiday") সবসময় নির্দিষ্ট, যা কিনা পূর্ণিমা পরবর্তী spring equinox-এর পর ১ম রবিবার। অনেকে আবার একথা ভেবে বিষ্মিত হন যে, বাইবেলে ইস্টার ("Easter") শব্দটি এল কিভাবে? এটি এ কারণে যে, পৌত্তলিক কিং হেরোদ ইস্টার উৎযাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন, খৃষ্টানগণ নন।-(Acts, chapter 12)
বাইবেল জানায়- God is a Spirit: and they that worship him must worship him in spirit and in truth.-John 4:24 (KJV)
সত্য হচ্ছে এই যে, চল্লিশ দিবসের Lent, eggs, rabbits, hot cross buns ও Easter ham এর সম্পর্ক রয়েছে রহস্যময় ব্যাবিলনের প্রাচীন পৌত্তলিক ধর্মের, খৃষ্টধর্মের সঙ্গে এগুলির কোনরূপ সংশ্রব নেই। এসবই খৃষ্টধর্ম বিরোধী আচার-অনুষ্ঠান। শয়তান সত্যিই "গুরু প্রতারক" (master deceiver), কেননা সে সফলতার সাথে খৃষ্টসমাজকে এইসব পৌত্তলিক আচার-অনুষ্ঠান পালনে প্ররোচিত করতে পেরেছে।
সমাপ্ত।
উৎস: Easter Exposed! by Child of God. (christianwalk101.blogspot.com)
এভাবে রানী ইস্টার তার রহস্যময় ধর্মের বিস্তার ঘটাতে লাগলেন এবং লোকেরা তাকে গডমাতা ও স্বর্গের রানী হিসেবে উপাসনা করতে লাগল। রানী ইস্টার উপাসনাকারীদের বলেছিলেন যে, তাম্মুজ যখন বন্যশুকর দ্বারা নিহত হন, তখন তার কিছু রক্ত একটা চির সবুজ বৃক্ষের মরা গুঁড়িতে পড়েছিল। আর তাতে ঐ গুঁড়ি থেকে নতুন এক বৃক্ষ রাতারাতি বেড়ে ওঠে। তাম্মুজের রক্ত দ্বারা এভাবে চিরসবুজ বৃক্ষ (evergreen tree) পবিত্র হয়েছে। তিনি আরও দাবী করলেন যে, প্রতি বৎসর তাম্মুজের মৃত্যুবার্ষিকী উৎযাপনের পূর্বে ৪০ দিবসকাল দু:খের সময় হিসেবে পালন করা হবে এবং ঐ সময়কালে কোন মাংস খাওয়া চলবে না।
প্রতি বৎসর পূর্ণিমার পর- spring equinox-এর পরবর্তি প্রথম রবিবার একটা উৎসব উৎযাপিত হয়। এটাই ইস্টার সানডে ("Ishtar's Sunday") এবং এটি উৎযাপিত হয় with rabbits and eggs. উপাসনাকারীগণ এদিন বা’ল ও তাম্মুজের পবিত্র রহস্যময়তার উপর ধ্যান (meditate) করে এবং উপাসনার সময় ইংরেজী "T" চিহ্ন তাদের হার্টের সম্মুখে আঁকে। আর এদিন তারা শুকরের মাংস খায়, সাথে পবিত্র রুটি, যার উপর অঙ্কিত থাকে "T" বা ক্রুশ (cross) চিহ্ন। শুকরের মাংস খাওয়া প্রসঙ্গে ইস্টার জানিয়েছিলেন, যেহেতু তাম্মুজ শুকরের দ্বারা নিহত হয়েছিলেন, তাই এদিনটিতে ঐ মাংস খাওয়া আবশ্যিক।
উপরের এতসব তথ্য থেকে সচেতন পাঠক নিশ্চয় এখন বুঝতে পারছেন যে, তৎকালীন চার্চগুলোর দ্বারাই খৃষ্টধর্মে “ইস্টার” নামক এই পৌত্তলিক প্রথার অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করলে আমরা দেখতে পাব যে, পৌত্তলিকতার এই অনুপ্রবেশ ঘটেছে রোমান ক্যাথলিক সিস্টেমের মাধ্যমে। আর এইসব প্রথা ধর্মের অঙ্গ হিসেবে অঙ্গীভূত করতে সম্রাট কনস্টান্টাইনের বিরাট ভূমিকা ছিল। ৩২৫ সনের নিকাইয়ার সম্মেলনে পৌত্তলিক সম্রাট বিজ্ঞতার সাথে উপস্থিতদের খৃষ্টসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সকল ধর্মনেতাদের দ্বারা প্রণীত ও সত্যায়িত করে নিতে সক্ষম হন বেশকিছু ধর্মীয় মৌলিক নীতি ও আচার-অনুষ্ঠান। ফলে চূড়ান্ত ভাবে ঐসময় ত্রিত্ববাদ খৃষ্টানধর্মের মৌলিক মতবাদ হিসেবে গৃহীত হওয়ার পাশাপাশি এইমর্মে স্বীকৃত হয় যে-
রোমান সূর্য-দিবস (Sunday) হবে খৃষ্টানদের সাপ্তাহিক ধর্মীয় দিবস;
সূর্য-দেবতার প্রচলিত জন্মদিবস ২৫ডিসেম্বর যীশুর জন্মদিবস “বড়দিন” বা ক্রিস্টমাসডে (Christmas Day) বলে গণ্য ও পালিত হবে;
সূর্য-দেবতার প্রতীক আলোর ক্রুশ (Cross of Light) খৃষ্টবাদের প্রতীক হবে; এবং
সূর্য-দেবতার জন্মদিবসের সকল উৎসব অনুষ্ঠানকে খৃষ্টানদের উৎসব অনুষ্ঠান হিসেবে পালিত হবে। -আর এভাবে প্রচলিত হল ইস্টার।
পাদ্রী, পুরোহিতরা ঘোষণা দিলেন- ইস্টার, এটি যীশুর পুনরুত্থান (মৃত থেকে জীবিত) দিবস। ব্যাস, হয়ে গেল এটা খৃষ্টান বিশ্বাসের ভিত্তি। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই যে, আর যাই হোক না কেন, যীশুখৃষ্টের পুনরুত্থানের সঙ্গে ইস্টারের কোন সম্পর্ক নেই। যীশুখৃষ্টের সাক্ষাৎ শিষ্যগণ তাদের জীবিত অবস্থায় এধরণের কোন অনুষ্ঠান পালন করেননি বা পালন করার আদেশও কখনো কাউকে দেননি।
আমরা জানি, ইস্টার, পাসওভার থেকে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে, কেননা পৌত্তলিক হলিডে ("Pagan Holiday") সবসময় নির্দিষ্ট, যা কিনা পূর্ণিমা পরবর্তী spring equinox-এর পর ১ম রবিবার। অনেকে আবার একথা ভেবে বিষ্মিত হন যে, বাইবেলে ইস্টার ("Easter") শব্দটি এল কিভাবে? এটি এ কারণে যে, পৌত্তলিক কিং হেরোদ ইস্টার উৎযাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন, খৃষ্টানগণ নন।-(Acts, chapter 12)
বাইবেল জানায়- God is a Spirit: and they that worship him must worship him in spirit and in truth.-John 4:24 (KJV)
সত্য হচ্ছে এই যে, চল্লিশ দিবসের Lent, eggs, rabbits, hot cross buns ও Easter ham এর সম্পর্ক রয়েছে রহস্যময় ব্যাবিলনের প্রাচীন পৌত্তলিক ধর্মের, খৃষ্টধর্মের সঙ্গে এগুলির কোনরূপ সংশ্রব নেই। এসবই খৃষ্টধর্ম বিরোধী আচার-অনুষ্ঠান। শয়তান সত্যিই "গুরু প্রতারক" (master deceiver), কেননা সে সফলতার সাথে খৃষ্টসমাজকে এইসব পৌত্তলিক আচার-অনুষ্ঠান পালনে প্ররোচিত করতে পেরেছে।
সমাপ্ত।
উৎস: Easter Exposed! by Child of God. (christianwalk101.blogspot.com)