১২ মার্চ, ২০১২

Banu Qurayza: ইহুদি গোত্রের নির্মম পরিণতি।


মক্কার কুরাইশদের একান্ত আকাঙ্খা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ও অন্যান্য মুনাফেকদের দ্বারা মদিনাতে একটা আভ্যন্তরীণ বিপ্লব সংঘটিত করা। কিন্তু বদর যুদ্ধের পর তারা বুঝতে পারল যে, এদের দ্বারা এ ধরণের কোন কাজ সংঘটিত করার ক্ষমতা, যোগ্যতা বা বুদ্ধিমত্তা- কোনটাই নেই। উবাই কর্তৃক হতাশ হয়ে তারা মদিনার ইহুদি গোত্রের সাথে সঙ্গোপণে যোগাযোগ রক্ষা করতে লাগল। এ ছাড়া তারা মক্কার চারিদিকে তাদের দূত পাঠিয়ে বিভিন্ন গোত্রকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তুলল। এই কাজে ইহুদিরা সবচেয়ে বেশী সক্রিয় হল।



কিছু নাজির গোত্রের লোকের উদ্দীপনায় খায়বরের ইহুদিরা মুসলমানদের ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি লীগ গঠনের চেষ্টা করল। তাদের চেষ্টা আশাতিরিক্ত সফল হয়েছিল। একটি প্রবল আঁতাত শীঘ্রই গড়ে উঠল। দশ সহস্য সু-নিয়ন্ত্রিত সৈন্যের একটি বাহিনী আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মদিনা অভিমুখে অগ্রসর হল। পথে কোন বাঁধা না পেয়ে তারা পঞ্চম হিজরীর শাওয়াল মাসে মদিনার কয়েক মাইলের মধ্যে আক্রমণের পক্ষে সবচেয়ে সুবিধাজনক স্থানে তাঁবু স্থাপন করল।
এই সেনাবাহিনীর মোকাবেলায় মুসলমানরা মাত্র তিন সহস্র সৈন্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হল। সংখ্যার স্বল্পতা এবং মদিনার অভ্যন্তরে ইহুদিদের দলগত প্রতিবন্ধকতা দ্বারা বাধ্য হয়ে তারা রক্ষণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করল। তারা মদিনার অরক্ষিত এলাকার চারিদিকে গভীর পরিখা খনন করল। প্রতি দশজন মুজাহিদকে ৪০ হাত পরিখা খনন করতে হয়েছিল। এই খনন কার্যে কিছু মুনাফেক অনিচ্ছা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করেছিল। 
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হয়েছিল-মুমিন তো তারাই যারা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তার কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতিত চলে যায় না। যারা তোমার কাছে অনুমতি প্রার্থণা করে, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। অতএব তারা তোমার কাছে তাদের কোন কাজের জন্যে অনুমতি চাইলে তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে অনুমতি দাও এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা কর। আল্লাহ ক্ষমাশীল মেহেরবান।

রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরকে আহবানের মত গণ্য কোরও না। আল্লাহ তাদেরকে জানেন যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। অতএব যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচারণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে।(২৪:৬২-৬৩)

নিরাপত্তার জন্যে সুরক্ষিত গৃহসমূহে নারী ও শিশুদের রেখে পরিখার সম্মুখে নগরের বাইরে মুসলমানরা তাঁবু স্থাপন করল। এ সময়ে সক্রিয় সাহায্যের প্রত্যাশা না করলেও অন্যদিকের নিরাপত্তার জন্যে অন্ততঃপক্ষে তারা বনি কুরাইজা (Banu Qurayza) গোত্রের নিরপেক্ষতার উপর নির্ভর করেছিল।

মদিনায় যখন সাধারণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, তখন অন্যান্য শর্তাদির সঙ্গে প্রত্যেক গোত্র এই শর্তও মেনে নিয়েছিল যে, মুসলমানদের কোন শত্রুকে কোনভাবেই তারা সাহায্য সহযোগিতা করবে না এবং যদি বহিঃশত্রু কর্তৃক মদিনা প্রজাতন্ত্র আক্রান্ত হয় তবে তারা মুসলমানদের সঙ্গে স্বদেশ রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। কিন্তু প্রথম থেকেই ইহুদিরা এই চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছিল। বনি কুরাইজার এরূপ চুক্তিভঙ্গের অপরাধ পর পর ক্ষমা করা হয়।

ওহুদ যুদ্ধের পর তারা নুতন করে মুসলমানদের সঙ্গে এই মর্মে সন্ধিচুক্তি করে যে, অতঃপর আর কখনই তারা তাদের শত্রুদের সাথে হাত মেলাবে না। এই চুক্তি স্থাপনের সুবাদে ক্ষতিপূরণ ও দন্ড ব্যতিরেকেই তাদের অপরাধ মার্জনা করা হয়।

বনু কুরাইজা গোত্রের বাসস্থান।
অতঃপর কুরাইশদের মদিনা আক্রমণের সংবাদে প্রথম সুযোগেই তারা সন্ধিপত্র ছিন্নকরে ফেলে এবং শত্রু শিবিরে যোগদান করে। তাদের চুক্তিভঙ্গের খবর মুহম্মদের কানে পৌঁছিবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাদ বিন রিদ্দবকে পাঠিয়ে তাদেরকে অনুরোধ করলেন তাদের কর্তব্য পালন করতে ফিরে যাবার জন্যে। তারা যে উত্তর প্রদান করেছিল তা অতীব ঔদ্ধত্যপূর্ণ- ‘কে সেই মুহম্মদ, কে সেই প্রেরিত পূরুষ যাকে আমরা মানব? আমাদের ও তার মধ্যে কোন চুক্তি নেই।’

বনি কুরাইজাদের এই উত্তর শুনে ওবায়দা ইবনে সামেত প্রকাশ্যভাবে তাদের সাথে চুক্তি বিলোপ ও অসহযোগের কথা ঘোষণা করলেন। এতে কিছু সংখ্যক লোক যারা কপট বিশ্বাসের অধীনে মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত ছিল কিম্বা যারা তখনও ঈমানের দিক দিয়ে দিয়ে দুর্বল ছিল, তারা এদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার মধ্যে সমূহ বিপদাশঙ্কা অনুভব করল। তারা ভাবল- ‘যদি কুরাইশ ও ইহুদিদের চক্রান্ত সফল হয়ে যায় এবং মুসলমানরা পরাজিত হয়, তবে আমাদের প্রাণরক্ষার একটা উপায় থাকা দরকার।’ তাই এই দলের নেতা, মুনাফেক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই বললেন, ‘এদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা আমার মতে বিপদজনক। তাই আমরা তা করতে পারি না।’

এরই পরিপেক্ষিতে মুমিনদেরকে উপদেশ ও সতর্ক করে দিয়ে এই আয়াতসমূহ নাযিল হয়েছিল- হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কোরও না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ জালেমদের পথপ্রদর্শন করেন না। বস্তুতঃ যাদের অন্তরে রোগ আছে, তাদেরকে তুমি দেখবে দৌঁড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে। তারা বলে, আমরা আশঙ্কা করি, পাছে না আমরা কোন দুর্ঘটনায় পতিত হই। অতএব সেদিন দূরে নয়, যেদিন আল্লাহ বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা স্বীয় গোপন মনোভাবের জন্যে অনুতপ্ত হবে।(৫:৫১-৫২)

বনি কুরাইজা গোত্রের দক্ষিণ পূর্বদিকে অনেকগুলি সুরক্ষিত দূর্গ ছিল। তারা এলাকাটির সঙ্গে সুপরিচিত ছিল এবং তারা অবরোধকারীদেরকে মদিনার দুর্বল জায়গাগুলো দেখিয়ে দেবার ব্যাপারে বাস্তবিক সাহায্য করতে পারত। তাছাড়া তারা কয়েকজন মুসলিম মহিলা ও শিশুকে হত্যা করে তার দায়ভারও গ্রহণ করল। এসব কারণে মুসলমানদের মধ্যে ভীষণ আতঙ্ক দেখা দিল। ফলে মূল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে মুসলিম বাহিনীর এক উল্লেখযোগ্য অংশকে নিজেদের মহিলা ও বালক-বালিকাদের সুবাদে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধানে নিয়োজিত রাখতে হল। এতে সহজেই কুরাইশ বাহিনী পরিখা অতিক্রমপূর্বক মদিনায় প্রবেশ করে মুসলমানদেরকে নির্মূল করার সম্ভাবণা সৃষ্টি হয়েছিল।

মরুভূমির অস্থির গোত্রসমূহ কুরাইশ ও তাদের মিত্রদের সাথে জুটি বেঁধেছিল ও সহজ শিকারের প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু মদিনার উপকন্ঠে এসে শহর রক্ষার এই অভিনব কৌশল দেখে তারা বিষ্মিত হল। এই সংকটময় মূহুর্তে অবরোধকারী দলের নেতারা (খালিদ বিন ওয়ালিদ, আমর বিন আ‘স, জরবার বিন খাত্তাব প্রমুখ) পরিখা পার হয়ে ছোট মুসলিম বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়ার জন্যে প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলেন। এভাবে দিনের পর দিন অতিবাহিত হতে লাগল এবং মুহম্মদের অতন্দ্র প্রহরার ফলে কুরাইশদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হল। একসময় বিলম্বিত অভিযানের দরুণ আক্রমণকারীরা অবসন্ন হয়ে পড়ল।  

সম্মিলিত বাহিনীর অবরোধ বিশদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। অতপর এই অবরোধকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ঐশী ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবই সম্মিলিত হয়ে এল। তাদের অশ্বসমূহ দ্রুত মরে যেতে লাগল ও রসদ ফুরিয়ে এল এবং তাদের মধ্যে মতপার্থক্য ঘনীভূত হতে লাগল। দূরদর্শী মুসলমান প্রধানরা অতুলনীয় বিজ্ঞতাসহকারে এই মতপার্থক্যকে প্রকৃত বিভেদে ফেনায়িত করে তুললেন। অকস্মাৎ এই বিশাল সমাবেশ যা মুসলমানদের মনে অনিবার্য ধ্বংসের ত্রাস সঞ্চারিত করেছিল তা শুণ্যে মিলিয়ে গেল।
রাত্রির অন্ধকারে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে তাদের তাঁবু উড়ে গেল, আলো নিভে গেল, আবু সুফিয়ান ও তার দুর্ধর্ষ সৈন্যবাহিনীর অধিকাংশ পালিয়ে গেল এবং অবশিষ্ট সৈন্য বনি কুরাইজা গোত্রের কাছে আশ্রয় নিল। মুহম্মদ তার শিষ্যদেরকে সেনাবাহিনীর অন্তর্ধানের পূর্বাভাস রাত্রেই দিয়েছিলেন এবং সকাল হলেই তারা দেখতে পেল যে, তার ভবিষ্যবাণী সফল হয়েছে। মুসলমানরা আনন্দে গৃহে প্রত্যাবর্তন করল। 

বনি কুরাইজা গোত্র অঙ্গীকৃত চুক্তি সত্ত্বেও বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়েছিল এবং একসময়ে তাদের দিক থেকে তারা মদিনাবাসীকে প্রায় হতবাক করে ফেলেছিল- এটা এমন একটা ঘটনা যা সফল হলে মুসলমানরা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হত। কাজেই মুসলমানরা এই বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাখ্যা দাবী করা তাদের কর্তব্য হিসেবে মনে করল। এই দাবী কুরাইজা গোত্র স্পর্ধার সাথে প্রত্যাখ্যান করল। ফলে ইহুদিদের অবরোধ করা হল এবং স্বেচছায় আত্মসমর্পন করতে বাধ্য করা হল। তারা একটি মাত্র শর্ত প্রদান করল যে, আউস গোত্রের প্রধান সা‘দ ইবনে মু‘আজের বিবেচনার উপর তাদের শাস্তি নির্ভর করতে হবে। তারা আশা করছিল সা'দ এর বিচার তাদের পক্ষে যাবে। 
সা‘দ ইবনে মু‘আজ ছিলেন দুর্ধর্ষ যোদ্ধা। পরিখা যুদ্ধে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মদিনার মসজিতুন নবীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন। ইহুদিদের প্রস্তাবে মুহম্মদ বাধ্য হয়ে সেই অবস্থাতেই তাকে আনতে লোক পাঠালেন। 

সা'দকে তার খাটিয়া শুদ্ধ বহন করে আনা হল। মুহম্মদ তাকে বললেন, ‘ইহুদিরা তোমাকে বিচারক নিযুক্ত করেছে। তুমি যে-দন্ড বিধান করবে তাই তারা মেনে নেবে। আমিও তা মেনে নিতে রাজী আছি।’
দৃশ্যটি বাস্তবিকই করুণ। বন্দী ইহুদিরা একপাশে অপেক্ষা করছে অন্যপাশে মুহম্মদ ও তার শিষ্যেরা। সা'দ বিব্রত হলেন। আওস গোত্রের সাথে ইহুদিদের সৌহার্দ্যের পূর্ব স্মৃতিও তার মনে পড়ল। But when he saw that the Jews had refused to accept the award of the Prophet and refused thus to have the lighter punishment prescribed for such an offence in Islam, he decided to award to the Jews the punishment which Moses had laid down. The responsibility for this award does not rest with the Prophet or the Muslims, but with Moses and his teaching and with the Jews who had treated the Muslims so cruelly. They were offered what would have been a compassionate award. But, instead of accepting this, they insisted on an award by Sa‘d.
আগেই বলেছি-Sa‘d decided to punish the Jews in accordance with the Law of Moses. So, he said, "Says the Bible: 'When thou comest nigh unto a city to fight against it, then proclaim peace unto it. And it shall be, if it make thee answer of peace, and open unto thee, then it shall be, that all the people that is found therein shall be tributaries unto thee, and they shall serve thee. And if it will make no peace with thee, but will make war against thee, then thou shalt besiege it: And when the Lord thy God hath delivered it into thine hands, thou shalt smite every male thereof with the edge of the sword: But the women, and the little ones, and the cattle, and all that is in the city, even all the spoil thereof, shalt thou take unto thyself; and thou shalt eat the spoil of thine enemies, which the Lord thy God hath given thee. Thus shalt thou do unto all the cities which the Lord thy God doth give thee for an inheritance, thou shalt save alive nothing that breatheth: But thou shalt utterly destroy them; namely, the Hittites, and the Amoiites, the Canaanites, and the Perizzites, the Hivites, and the Jebusites; as the Lord thy God hath commanded thee: That they teach you not to do after all their abominations, which they have done unto their gods; so should ye sin against the Lord your God. ( Deut. 20: 10-18 ).


 --এই শাস্ত্র বিধান অনুসারে আমি এই রায় দিচ্ছি যে, মুসলমানদের সাথে সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করার জন্যে সমস্ত ইহুদি পুরুষদের, যারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল-প্রাণদন্ড হবে, স্ত্রীলোক এবং বালক-বালিকারা মুসলমানদের দাস-দাসীরূপে পরিগণিত হবে এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি মুসলিম সৈন্যদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে।’ 

এই দন্ডজ্ঞা ছিল, নিঃসন্দেহে নির্মম কিন্তু সেই যুগে যুদ্ধের গৃহীত প্রথাসমূহের সঠিক প্রয়োগ। যদি সা'দের বিচার ছাড়াই তাদের প্রতি হত্যা দন্ডাজ্ঞা দেয়া হত, সেক্ষেত্রেও তৎকালীন যুদ্ধনীতির সঙ্গেও তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হত। অধিকন্তু তারা মুহম্মদ বা মুসলমানদেরকে নয় বরং নিজেরাই নিজেদের পছন্দের একজনকে একমাত্র সালিস ও বিচারক মনোনীত করেছিল। তারা জানত যে, তার বিচার আদৌ গৃহীত ধারণার বিপরীত নয়। কাজেই তারা কোন অনুযোগ করেনি। তারা একথাও জানত যে যদি তারা জয়ী হত তবে কোন বিবেচনা ছাড়াই তারা মুসলমানদের নিধন করত। হযরত দাউদ অধিকতর হিংস্রতা সহকারে বিজিত অমালেকাদের সঙ্গে আচরণ করেছিলেন, তাদের কাউকে বিঁধে, কাউকে কুড়াল দ্বারা কুপিয়ে ও করাত দিয়ে চেরা হয়েছিল, আর অন্যান্যদের ইটের চুল্লিতে ঝলসিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

মারাত্মক আহত সাদ পরদিন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। কিন্তু তার দন্ডাজ্ঞা সত্য ও ন্যয়ের ধারক ও বাহক এবং আইন ও বিচারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মুসলিমগণ যথাযথভাবে কার্যকরী করেছিল অত্যন্ত সতর্কতার সাথে, যেন কমবয়সী কেউ ভুলক্রমে নিহত না হয়।

"Then the apostle confined Banu Qurayza in Medina in the quarter of d. al-Harith, a woman of B. al-Najjar. Then he went out to the market of Medina (which is still its market today) and dug trenches in it. Then he sent for them and struck off their heads in those trenches as they were brought out to him in batches. Among them was the enemy of Allah Huyayy b. Akhtab and Ka`b b. Asad their chief. There were 600 or 700 in all, though some put the figure as high as 800 or 900. 

As they were being taken out in batches to the apostle they asked Ka`b what he thought would be done with them. 
He replied, 'Will you never understand? Don't you see that the summoner never stops and those who are taken away do not return? By Allah it is death!' 
This went on until the apostle made an end of them. 

Huyayy was brought out wearing a flowered robe in which he had made holes about the size of the finger-tips in every part so that it should not be taken from him as spoil, with his hands bound to his neck by a rope. When he saw the apostle he said, 'By God, I do not blame myself for opposing you, but he who forsakes God will be forsaken.' 


Then he went to the men and said, 'God's command is right. A book and a decree, and massacre have been written against the Sons of Israel.' 
Then he sat down and his head was struck off." -Ibn Ishaq's Sirat Rasul Allah, p. 461-464.
কোরআনে বনি কুরাইজার এই ঘটনা বর্ণনাকালে বলা হয়েছে- ‘যে সকল গ্রন্থধারী (ইহুদি) কুরাইশদের সহায়তা করেছিল, আল্লাহ তাদেরকে তাদের দূর্গমালা হতে বহির্গত করলেন এবং তাদের হৃদয়ে ত্রাসের সঞ্চার করে দিলেন, (তাতে) তারা এক দলকে নিহত করতে এবং এক দলকে বন্দী করতে লাগল...’(৩৩:২৬)

যাহোক, যে সব লোককে প্রাণদন্ড দেয়া হয়েছিল তাদের সংখ্যা কোন অবস্থাতেই হাজারের উর্দ্ধে নয়। পুরুষদের মৃত্যুদন্ড কার্যকরী করার পর রায় অনুসারে মহিলা ও শিশুদেরকে মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করা হয়েছিল। এই বন্টনে রায়হানা নাম্মী এক ইহুদি তরুণী মুহম্মদের ভাগে পড়েছিল।

এই হল প্রকৃত ঘটনা। তবে সত্যকে মিথ্যে রুপান্তরিত করা যায় নানান ভাবে। পাঠকদের বিনোদনের জন্যে একজন স্টুপিড নাস্তিক ”আসিফ মহিউদ্দীন“ এর বর্ণনায় [“মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত কিছু মিথ এবং মিথ্যাচার” -www.nastikya.com] এঘটনাটি যেভাবে উঠে এসেছে তা নীচে দেয়া হল।


”হযরত মুহাম্মদের সাথে বানু কুরাইজা গোত্রের রাজনৈতিক বিরোধ শুরু হয়। এ সময়ে মুসলিমদের পক্ষের সাদ ইবনে মুয়াজকে বিরোধ মীমাংসার জন্য নিযুক্ত করা হলে তার সিদ্ধান্তে বানু কুরাইজা গোত্রের প্রাপ্তবয়স্ক সকল পুরুষ সদস্যদের হত্যা এবং নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে বন্দী করা হয়। এই সিদ্ধান্তে হযরত মুহাম্মদের সম্মতি ছিল এবং তিনি নিজেও বন্দী গনিমতের মাল থেকে নিজের অংশ বুঝে নেন। বেসামরিক জনগণের ওপর আক্রমণ, গণহত্যা এবং তাদের স্ত্রী কন্যা শিশুদের দাস বানানো নিঃসন্দেহে মানবতার চরম অপমান। এটি সহ আরও কয়েকটি গণহত্যার দায় মুহাম্মদ এড়াতে পারেন না। এই শতাব্দীতে জন্মও হলে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা করা যেতে পারতো।” 

আসিফ মহিউদ্দীন এযুগের দোহাই দিয়ে কেবল মুহম্মদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছেন, তবে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে নিজপুত্রের গলায় হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি চালানোর অভিযোগ এবং খিজিরের বিরুদ্ধে শিশু হত্যার অভিযোগ থাকলেও তাদের ব্যাপারে নিরব ভূমিকা অবলম্বণ করেছেন কেন তা জানা যায়নি।   

বি: দ্র: আমরা ”আসিফ মহিউদ্দীন”কে স্টুপিড বলেছি কেবলমাত্র তার ”জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে” অন্যকোন উদ্দেশ্যে নয়। 
সমাপ্ত।
ছবি: islamiclandmarks.


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Moses: কোরাণিক ক্যানভাসে নবী মূসা।

Abu Hena Mostafa Kamal  01 May, 2017 মি সরের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ফেরাউন। হঠাৎ করে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। কিন্তু তিনি কোন উত্তরাধিকারী ন...